হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইব্রাহিম রাইসির লাশ মাশহাদে ইমাম রেজার (আ.) মাজার কমপ্লেক্সে দাফন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টকে শেষবিদায় জানাতে মাশহাদ পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, রাইসি এবং তার সঙ্গীদের জানাজায় অংশ নিয়েছে ১০ লক্ষাধিক জনতা। এ জানাজায় ইমামতি করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলি খামেনি।
বুধবার সকালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইব্রাহিম রাইসিসহ দুর্ঘটনায় নিহত আটজনের মরদেহের কফিন নিয়ে আসা হয়। এর আগে মঙ্গলবার, তাবরিজ, কোম এবং তেহরানের গ্র্যান্ড মোসাল্লা মসজিদে কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং লেবানিজ হিজবুল্লাহ প্রতিরোধের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল শেখ নাইম কাসেমসহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অক্ষের নেতারা। এছাড়া বিভিন্ন দেশের নেতা, রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরা জানাজায় অংশ নেন।
এই সময় তেহরান ইউনিভার্সিটি থেকে আজাদি স্কয়ার পর্যন্ত লাখ লাখ জনতার ঢল নামে। এর আগে প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং তার সহযোগীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার গভীর রাতে তেহরানের ইমাম খোমেনি মোসাল্লায় একটি শোক অনুষ্ঠানে জনস্রোত নেমেছিল।
গত সোমবার সকালে ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। ওই দুজন ছাড়াও পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি, তাবরিজের জুমার নামাজের খতিব হোজ্জাতোলেস্লাম আল হাশেম এবং আরও কয়েকজন সেই হেলিকপ্টারের আরোহী ছিলেন।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট রাইসির জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজধানী তেহরান থেকে ৭৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত মাশহাদ শহরে। মৃত্যুর চারদিন পর বৃহস্পতিবার মাশহাদেই জানাজা শেষে শিয়াদের অষ্টম ইমাম রেজার মাজারে তাকে লাশ দাফন করা হয়। ইরানে রাইসি হলেন প্রথম রাজনীতিবিদ যাকে এ মাজারে দাফন করা হলো। এর মধ্য দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্টকে অভূতপূর্ব শ্রদ্ধা জানানো হল।