সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশনা পেয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল বারিক ও তার স্ত্রী ফেরদৌস ইয়াসমিন খানম। এতে তারা দুজনই সম্পদের তথ্য ‘গোপন’ করেন। এছাড়া জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্যও মিলেছে।
এ ঘটনায় গতকাল দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ এর উপসহকারী পরিচালক সবুজ হোসেন এ দম্পতির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছেন। এরমধ্যে একটিতে শুধু কাস্টমস কর্মকর্তা আব্দুল বারিক ও অপরটিতে তাকে ও তার স্ত্রীকে আসামি করা হয়েছে। দুদক কর্মকর্তা সবুজ হোসেন আজাদীকে বলেন, মামলার তদন্তকালে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আমলে নেয়া হবে।
আব্দুল বারিকের বিরুদ্ধে করা মামলার এজহারে বলা হয়, সম্পদ বিবরণীর নির্দেশনা পেয়ে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর আব্দুল বারিক সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে তিনি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। যাচাই করলে দেখা যায়, তিনি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদই অর্জন করেছেন। এছাড়া দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪২ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। কিন্তু যাচাই করলে দেখা যায়, তিনি ১ কোটি ৬৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬০০ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক। এক্ষেত্রে আব্দুল বারিক ১ কোটি ২৩ লাখ ১৪ হাজার ৯২২ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য জেনে বুঝে সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন।
এজহারে বলা হয়, রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়–আব্দুল বারিকের মোট ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩৯ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। দায় রয়েছে ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৩২৮ টাকা। সেই হিসাবে তার নীট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার ২৭২ টাকা। পারিবারিক ব্যায় ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট ২ কোটি ৬৫ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ টাকার সম্পদ রয়েছে। এরমধ্যে তার গ্রহণযোগ্য আয় ১ কোটি ৯৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮২২ টাকা। এক্ষেত্রে তার সম্পদের চেয়ে আয়ের উৎস ৭০ লাখ ৬২ হাজার ১৫৬ টাকা কম। অতএব তিনি ৭০ লাখ ৬২ হাজার ১৫৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন।
এছাড়া আব্দুল বারিক ও তার স্ত্রী ফেরদৌস ইয়াসমিন খানমের বিরুদ্ধে করা মামলার এজহারে বলা হয়, ফেরদৌস ইয়াসমিন খানম তার স্বামীর সহযোগিতায় এক কোটি ৯২ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৮ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন। সেই সাথে ৩২ লাখ ২৬ হাজার ৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। স্বামীর অসাধু উপায়ে অর্জিত অর্থ বৈধ করার অপচেষ্টা করে উক্ত সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন ফেরদৌস ইয়াসমিন খানম বলেও এজহারে উল্লেখ করা হয়।
দুদকসূত্র জানায়, চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাবেক রাজম্ব কর্মকর্তা আব্দুল বারিক নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির রশিদপুর এলাকার মৃত হাজী মো. ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। থাকেন নগরীর আগ্রবাদের সিডিএ আবাসিক এলাকায়।