কলেজে পড়ার সময় আমি হোস্টেলে থাকতাম। আমাদের সাথে যারা হোস্টেলে থাকতো, তাদের মধ্যে কয়েকজন সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। একজন আমাদের ক্লাসমেট কট্টর বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল। সে ঠিকমতো খাওয়া–দাওয়া করত না, রাত্রে বেশিরভাগ সময় সে তাদের দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকতো। আমি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সময় থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে পড়ি। কলেজে পড়ার সময় আমি প্রথমে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীকালে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। একই সাথে আমি জেলা ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটিরও দায়িত্ব পালন করতাম। আমাদের এলাকার আঞ্চলিক ছাত্রলীগ সংগঠিত করার কাজেও আমার দায়িত্ব ছিল।
এখন ছাত্র রাজনীতি করা ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল এসব সংগঠন করা আর মধ্য ষাটের দশকে ছাত্রলীগ বা ছাত্র ইউনিয়ন করা এক কথা নয়। তখন জেল, পুলিশের মার এমনকি মৃত্যু নিত্য সঙ্গী ছিল। ছাত্র নেতাদের সামনে যে কোনো সময় যে কোনো বিপদ আসা অসম্ভব ব্যাপার ছিল না। এই ঝামেলা মাথায় নিয়ে ছাত্রলীগ এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী রাজনীতি করত। মুসলিম লীগের ছাত্র সংগঠন এন.এস.এফ. এবং ইসলামি দলগুলির ছাত্র সংগঠন, ইসলামী ছাত্র সংঘ করা তত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল না। কিন্তু আমাদের মাথার উপর সবসময় মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে শুরু করে সব ধরনের বিপদ ঘোরাফেরা করতো। আমাদের বামপন্থী বন্ধু হোস্টেলের ডাইনিং রুমে কখনো সময়মতো খাবার খেয়েছে এটা আমি দেখিনি, তার মাথার ভেতর সবসময় সর্বহারাদের মুক্তির চিন্তা কাজ করত। সে বলতো একদিন না একদিন দুনিয়ার মজদুর সংঘবদ্ধ হবে এবং পুঁজিবাদীদের হাত থেকে কিংবা ধর্ম ব্যবসায়ীদের হাত থেকে পুরো পাকিস্তানের মানুষ মুক্তি লাভ করবে। অথবা দুনিয়ার মজদুর শ্রেণির মানুষ একদিন না একদিন স্বাচ্ছন্দ ফিরে পাবে।
আমি প্রথম দিকে কলেজ ছাত্র সংসদে নির্বাচন করে জিতেছিলাম। পরবর্তীকালে আমি জেলা ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের সাথে ব্যাপকভাবে জড়িত হয়ে পড়ি। তখন চট্টগ্রাম মিউনিসিপালটির আয়তন ছোট ছিল, বর্তমান শেখ মুজিব রোড বা তৎকালীন জিন্নাহ রোডের পশ্চিম পাশে জায়গা মিউনিসিপ্যালিটির বাইরে ছিল। এমনকি পতেঙ্গা থেকে কাট্টলি শহর বলে গণ্য করা হতো না। তখন থানা ছিল মাত্র দুটি, একটি কোতোয়ালি অন্যটি ডাবলমুরিং থানা। চট্টগ্রাম শহর অঞ্চল কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত ছিল। আন্দরকিল্লা থেকে লালদিঘির পাড় পর্যন্ত এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘোরাফেরা করতো এবং তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রভাব অনেক বেশি ছিল।
বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন দুই ভাগে বিভক্ত ছিলো। একটির নেতৃত্ব দিতেন অগ্নি কণ্যা নামে খ্যাত মতিয়া চৌধুরী এবং অপরটির নেতৃত্ব দিতেন রাশেদ খান মেনন। মেননের ছাত্র ইউনিয়নকে পিকিংপন্থী এবং মতিয়ার ছাত্র ইউনিয়নকে রুশ পন্থী বলে ডাকা হতো। আমার চিন্তাধারার মধ্যে বামপন্থী ধ্যান–ধারণার অনুপ্রবেশ ঘটেছিল তার কারণ আমার অনার্সে ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অফ ইউএসএসআর, জাপান, গ্রেট ব্রিটেন এবং চায়নার অর্থনৈতিক গতিপ্রকৃতি পাঠ্য ছিল এবং চায়না এবং রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয় পড়তে গিয়ে আমাকে মাওবাদী এবং লেলিনবাদী চিন্তাধারার সঙ্গে পরিচিত হতে হয়। এ সময় আমাদের বামপন্থী বন্ধুরা ব্যাপকভাবে পিকিং এবং মস্কো থেকে আসা বিভিন্ন প্রকাশনা বইপত্র আমাদেরকে দিত এবং আমরা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে এবং সমাজতন্ত্রের পক্ষে আমাদের মানস গঠনে এই বইপত্র সহায়তা করেছিল। ছাত্রলীগের একটি প্রগতিশীল অংশ বাম পন্থার প্রতি দুর্বল ছিল আর মাঝে মধ্যে বামপন্থী ছাত্র নেতারা আমাদেরকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের মতামত বুঝানোর চেষ্টা করত। আন্দরকিল্লায় শাম্মী হোটেল নামের একটা রেস্টুরেন্টে আমরা দুপুরের খাবারের জন্য যেতাম। একদিন দুজন বামপন্থী ছাত্রনেতা এবং আরো দুই তিন জন ডানপন্থী ছাত্রনেতা বসে তর্ক বিতর্ক করছিল। এ সময় আমি সেখানে প্রবেশ করি, তখন সরকারি দলের পক্ষে মুসলিম লীগ ছাড়াও জামায়াতে ইসলামি এবং নেজামে ইসলামির কর্মীরা চট্টগ্রামের সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল এবং ধর্মবাদী রাজনীতির প্রচারণায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু তারা তাদের রাজনীতি করতো, আমরা আমাদের রাজনীতি করতাম। কিছু বিরোধপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি হলেও আমাদের সামনে তারা কখনো শক্তি দেখাতে পারত না। আমরা সরকারি পুলিশ বা পশ্চিম পাকিস্তানি মিলিশিয়া তাদের পরোয়া করতাম না, আমরা আমাদের কাজ করতাম। বামপন্থী ছাত্র নেতা এবং ডানপন্থী ছাত্র নেতাদের তুমুল বিতর্কের মধ্যে আমি শাম্মি হোটেলে প্রবেশ করি। ডানপন্থী ছাত্রনেতারা বলছে সারা পৃথিবীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রভাব ডলারের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে যেভাবে সারা বিশ্ব জড়িয়ে আছে তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনো রাশিয়াকে সামনে আসতে দিবে না। তদপরী প্রযুক্তিগতভাবে যুক্তরাষ্ট্র– রুশ এবং চীনাদের থেকে অনেক বেশি উন্নত। সুতরাং ভবিষ্যতে প্রযুক্তির অগ্রগতিতে চীন এবং রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে যাবে। কিন্তু তাদের এই যুক্তি অন্যরা গ্রহণ করতে রাজি নয়। আমি তাদেরকে বললাম যে তোমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কথা বলছ তার একটা প্রমাণ দাও। তারা বলল, সম্প্রতি অর্থাৎ সে সময়ের ঘটনা, যুক্তরাষ্ট্র একটি কিচেন মেশিন আবিষ্কার করেছিল তখন আর মানুষের বাড়ি ঘরে কোনো রান্নাঘর থাকবে না। এ কিচেন মেশিনে চাল ডাল মসলা পেঁয়াজ রসুন খাসি বা ছাগল বসিয়ে দিলে, বাটন চাপ দেওয়ার সাথে সাথে অপর দিকে মাটন বিরিয়ানি বেরিয়ে যাবে। ছাগলের চামড়া থেকে ব্যাগ, জুতা, হাড় থেকে বোতাম, চিরনী তৈরি হয়ে যাবে এবং মুহূর্তের মধ্যেই ডাইনিং টেবিলে খাবার চলে আসব্ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন এরকম প্রযুক্তি বাজারে ছাড়বে তখন রাশিয়া এবং চায়না তার সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হবে। ওখানেই সমাজতন্ত্রের পরাজয় ঘটবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ধ্যান–ধারণার জয় জয়কার সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে, পৃথিবীর কোথাও সমাজতন্ত্রের কোনো নাম গন্ধ থাকবে না।
এই কথা শোনার পরে আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম কারণ ডানপন্থী ছাত্র নেতারা যে প্রযুক্তির বিবরণ দিয়েছে এরকম যদি ঘটে তাহলে সত্যি সত্যি সর্বহারাদের দুর্দিন চলে আসবে। বামপন্থী দুজন ছাত্রনেতা পরম উৎসাহ নিয়ে দাঁড়িয়ে বলল তোমাদের যে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের গল্প এটি খুবই সাধারণ একটি গল্প। চীন এবং রাশিয়ার অগ্রগতির গল্প শুনো।
চীন এবং রাশিয়া একটি অ্যান্টি কিচেন যন্ত্র বের করেছে সেই যন্ত্র এমন যে, তোমাদের মার্কিন যন্ত্রে মাটন বিরিয়ানি বের হওয়ার পরে এবং আরেকদিকে ব্যাগ এবং বোতাম বা অন্যান্য উপকরণ বের হয়ে যাওয়ার পরে যদি ওই পরিবারের বাচ্চারা বলে যে আমরা মাটন বিরিয়ানি খাব না আমরা চিকেন বিরিয়ানি খাব, মুরগি খাব তখন পরিবারের কর্তারা সমস্ত খাবার আরেকটা মেশিনে ঢুকিয়ে দেবে এবং বাটন টিপ দেওয়ার সাথে সাথে অন্য প্রান্ত দিয়ে ছাগল ম্যা ম্যা করে বেরিয়ে আসবে। চাল ডাল পূর্বের অবস্থায় চলে যাবে। এসব গল্প আমাদেরকে খুবই আনন্দ দিয়েছিল। রাজনৈতিক মারামারি হানাহানি সন্ত্রাস আগুন জ্বালানোর চাইতেও এরকম বিতর্ক অনেক ভালো। কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন জেগেছিল রাজনীতি কি সাধারণ জনগণের কাছে মাঠে–ঘাটে কল কারখানায় ফিরে যাবে? না ড্রয়িং রুমে বসে এরকম অদ্ভুত অকল্পনীয় গল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে?
এমন সময় এক সাংবাদিক আমাকে খুব মজার তথ্য দিলেন। তিনি বললেন, গাজায় ইসরাইল যা ঘটাচ্ছে সেটিও কিন্তু একটি রাজনীতি, সেটি হচ্ছে পুঁজিবাদী আগ্রাসনের যে ধরন মধ্য ষাটের দশকে আপনারা দেখেছেন, এটি হলো তার অনেক উচ্চতর এবং পরবর্তিত একটি ধরন। সেই পুঁজিবাদ এখনো আছে, এখনো তারা সারা বিশ্বকে গ্রাস করার জন্য এই ধরনের হামলা গাজায়, ইয়েমেন, সিরিয়াতে চালাচ্ছে, লেবানে তারা মানুষ হত্যা করছে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ কিন্তু এক ধরনের আধিপত্যবাদী যুদ্ধ উপর থেকে বুঝানো গেলেও ইউরোপ এবং আমেরিকা সবাই মিলে রাশিয়াকে ধ্বংস করা এটাই তাদের লক্ষ্য।
সাংবাদিক আমাকে বললেন, ইসরাইল তিন ধরনের অদ্ভুত কিলিং মেশিন তৈরি করেছে। তারা গাজায় সেটা ব্যবহার করছে। গাজায় উত্তর পূর্ব পশ্চিম সর্বত্র এই তিন ধরনের নিষ্ঠুর অকল্পনীয় হত্যাযজ্ঞকারী এ.আই. অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যন্ত্রগুলি বসানো আছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের এটা যুদ্ধক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ব্যবহার। এর মধ্যে যেটি সবচাইতে কম ভয়াবহ সেটার নাম লেভেন্রা। বাকি দুটি কি ভয়াবহ তা বিবরণ আমাদের ধারণার বাইরে। এই তিনটি মেশিনের কাজ কী? যখন ইসরাইলি সেনারা বিমান থেকে বা ভূমি থেকে, ট্যাংক থেকে গাজায় কিলিং শুরু করে তার কয়েক সেকেন্ড আগে কোথায় বোমা বর্ষণ করবে, কাদের হত্যা করবে সেটি এই মেশিনগুলো থেকে জানতে চায়। এই মেশিনগুলি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালিত। তারা যেখানে নির্দেশনা দেয় বিমানবাহিনী বা ট্যাংক বাহিনী সেইখানে গুলি চালায় এবং অকাতরে মানুষ মারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যন্ত্র গুলি কিভাবে ইসরাইলি শত্রু চিহ্নিত করতে পারে, তার প্রক্রিয়া হলো, ধরুন যারা ত্রাণ দিতে আসে, যারা ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করছে সুতরাং তারা ইসরাইলিদের শত্রু। এই বিবেচনায় অথবা যারা চিকিৎসা করছেন তারা ফিলিস্তিনের উপকার করছে সুতরাং তারা ইসরাইলিদের শত্রু।
সুতরাং এ আই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাদেরকে সিলেকশন করছে তারা তো ইসরাইলের শত্রু নাও হতে পারে, তারা হামাস নাও হতে পারে। কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তো মানুষ নয়, তারা হচ্ছে যন্ত্র, তাদের ফর্মুলা হচ্ছে ফিলিস্তিনের বন্ধু মানে ইসরাইলিদের শত্রু। সুতরাং অকাতরে ফিলিস্তিনি বন্ধুদেরকে মেরে ফেলো। তারা হামাস হোক, হুতি হোক হিজবুল্লাহ হোক বা না হোক তাতে কিছু যায় আসে না। এই যদি যুদ্ধের কৌশল হয় তাহলে মানবতা বিপন্ন হবে কিনা? নাকি বিশ্ব রাজনীতি জনগণের উপকারে আসবে এটি একটি বিরাট প্রশ্ন।
একদিন এক লোক আমাকে বলল যে তিনি একটি কবিতার লাইন লিখেছেন সেটি হলো,
‘দেয়ালে লিখনা বিএনপি‘র নাম
কারণ আওয়ামী লীগ ভয় পাবে’।
আরেকজন আওয়ামী লীগ সমর্থক বুদ্ধিজীবী আমাকে বললেন, মানুষ যখন আম খেতে চায় এই আম শব্দটি শুনলেও বিএনপির ভয় পায়। কারণ দিল্লির একটি রাজনৈতিক দল আছে যার নাম আম আদমি পার্টি, যাকে বিজেপি ভয় পায় আর বাংলাদেশে আছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ হচ্ছে আমজনতার দল, এ আম জনতার দলকে বিএনপি ভীষণ ভয় পায়। বিএনপি যদি আমজনতাকে ভয় পায়, আওয়ামী লীগ যদি বিএনপিকে ভয় পায় তাহলে সরকারি দল এবং বিরোধী দলের মধ্যে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বর্ধনের যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সেটি কোথায় যাবে? রাজনীতি জনগণের কাছে কীভাবে ফিরে যাবে? ষাটের দশকে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া, চায়নার মধ্যে রাজনৈতিক সৌন্দর্য আমরা দেখছিনা, বর্তমানে ইসরাইল গাজার যুদ্ধে আমরা রাজনৈতিক সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছি না। বাংলাদেশে আমরা সেই সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছি না। কখন রাজনীতি জনগণের দোরগোড়ায় যাবে?
লেখক: শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, কলামিস্ট; সাবেক অধ্যক্ষ,
চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ।