বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে পাহাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানকে বহনকারী হেলিকপ্টার। এ দুর্ঘটনার পর তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেখানে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, রোববার আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি প্রকল্প উদ্বোধনের পর উত্তর–পূর্বাঞ্চলের শহর তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি। হেলিকপ্টারটি পার্বত্যাঞ্চলে দুর্ঘটনায় পড়ে। দুর্ঘটনাস্থলটি ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে ৬০০ কিলোমিটার উত্তর–পশ্চিমে। সেখানে ভারী বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশার কারণে পাঁচ মিটারের বেশি দূরত্বে কিছু দেখা যাচ্ছে না। গত রাত দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির সন্ধান পাওয়া–না পাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে একবার বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের সন্ধান পাওয়ার কথা জানানো হয়। কিছুক্ষণ পর আবার বলা হয়, রেড ক্রিসেন্ট হেলিকপ্টারটি পাওয়ার দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। তবে দেশটির সশস্ত্র বাহিনি জানিয়েছে, বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির সিগন্যাল পাওয়া গেছে।
ইরানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ওই হেলিকপ্টারে রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান ছাড়াও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে–হাশেম ছিলেন। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলের পথে রওনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমিরাব্দুলাহিয়ানের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা এখনও আশাবাদী। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে যে তথ্য আসছে তা খুবই উদ্বেগজনক।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ভাহিদি রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনকে বলেছেন, রাইসির হেলিকপ্টার বহরের তিনটির মধ্যে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ে। ওই বহরে থাকা অন্য দুটি হেলিকপ্টার অক্ষত রয়েছে। রেড ক্রিসেন্টের মুখপাত্র জানিয়েছেন, আবহাওয়া খারাপ থাকায় দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। এ দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হতে পারে– এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
রাইসি মারা গেলে কে হবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট : এ ক্ষেত্রে একটি একটি প্রশ্ন সামনে আসে। সেটি হলো রাইসির হঠাৎ মৃত্যু হলে ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন? ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় রাইসি মারা গেলে তাঁর পদে বসবেন বর্তমান প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার। তবে এ ক্ষেত্রে দেশটির সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে। ইরানে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এরপরই ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের। তাঁকে সরকারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রেসিডেন্ট মারা গেলে পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে।