এভারেস্ট জয় করেছেন হাটহাজারীর সন্তান ডা. বাবর আলী। জয়ের সংবাদ আসার পর থেকে হাটহাজারীতে তার গ্রামের বাড়িতে গতকাল সকাল থেকে উৎসুক জনতা ও গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করেন।
হাটহাজারীর ১৫ নং বুড়িশ্চর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাদশা মিয়া সিপাহির বাড়ির লেয়াকত আলীর পুত্রের এই কৃতিত্বের সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসার পর থেকে তার গ্রামের বাড়িতে সকাল থেকে লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়। ডা. বাবর আলীর পিতা লেয়াকত আলী ও মাতা লুৎফুন্নাহার বেগমের সঙ্গে কথা হয় গতকাল বিকালে। লেয়াকত আলী জানান, তিনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। ৩৭ বছর কুয়েতে প্রবাস জীবন যাপন করে ২০১৭ সালে দেশে চলে আসেন। তাদের চার সন্তানের মধ্যে বাবর দ্বিতীয়।
লেয়াকত জানান, ছোটকাল থেকে বাবর মেধাবী ছিল। সব পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাস করেছে। বুড়িশ্চর জিয়াউল উলুম মাদ্রাসায় তার লেখাপড়ার হাতেখড়ি। সেখানে প্রাথমিকের পাঠ শেষ করে নগরীর সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তবে সেখান থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে না পেরে সৃজনী গ্রামার স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে। চট্টগ্রাম ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হয়। আমাদের ইচ্ছায় পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তি হয়।
বাবর আলীর বাবা জানান, ছেলের অদম্য ইচ্ছা ছিল অজানাকে জানা, নতুন কিছু আবিষ্কার করা। লেখাপড়া করার সময় সুযোগ পেলে ছুটে যেত রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্থানে।
স্বামী ছিলেন বিদেশে। মা লুৎফুন্নাহার বেগম ছেলের দুঃসাহসিক অভিযানের বিষয়ে বারণ করতেন। তখন বাবর বলতেন, তাকে দোয়া করতে, যাতে তার স্বপ্ন পূরণ হয়। ডাক্তারি পাস করার পর তার মা এলাকার অসহায় দুঃস্থদের সেবা করতে তাকে নিজ এলাকায় চেম্বার করে দিয়েছেন বলে জানান। বাবর সুযোগ পেলে সেখানে এসে রোগীদের সেবা দিতেন।
বাবা লেয়াকত আলী জানান, ছোটকাল থেকে বাবর দুরন্ত ছিল। তবে লেখাপড়ায় কোনো ফাঁকি ছিল না। ফুটবল ও ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ ছিল বেশি। ছেলে এভারেস্ট জয় করবে–এতটা আশা তারা করেননি। তবে এই সাফল্য তাদের গর্বিত করেছে। ১৫ মে বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার সময় ছেলে পিতা–মাতার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গতকাল সকালে তারা সন্তানের এই অভাবনীয় সাফল্যের সংবাদ পান ফোনে। তখন তাদের চোখে–মুখে ছিল আনন্দাশ্রু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবরটি ভাইরাল হলে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ছুটে আসেন। গণমাধ্যমকর্মীরাও ভিড় করেন। ভাইয়ের সাফল্যের খবরে কক্সবাজার থেকে ছুটে আসেন বোন।