চান্দগাঁও থানাধীন পাক্কা দোকান এলাকায় নিরিবিলি পরিবেশ পেরিয়ে বড় বিল। মাঝখানে কয়েক রুমের সেমিপাকা ঘর। যাতাযাতের জন্য নেই সড়কও। তবে সেখানেই রীতিমতো কারখানা বানিয়ে সিগারেটের নকল স্ট্যাম্প তৈরি করতো একটি চক্র। যা বিক্রি হতো দেশি–বিদেশি বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানির কাছে। গতকাল বৃহস্পতিবার স্ট্যাম্প তৈরির এমন কারখানার সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় ৫ জনকে। সিলগালা করা হয় কারখানা। উদ্ধার হয় ৮ লাখ জাল স্ট্যাম্প বা ব্যান্ড রোল, যার বাজার মূল্য ৫ কোটি টাকা। সিএমপির অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা–উত্তর) শেখ সাব্বির হোসেন বলেন, বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার মতো সক্ষমতা তাদের ছিল। আমরা যদি ৭৪ শতাংশ ট্যাক্স হিসাব করি তাহলে প্রায় ৫ কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার জাল স্ট্যাম্প আমরা উদ্ধার করেছি।
পুলিশ জানায়, ৫ শ্রমিক মিলে মাত্র তিন দিনে ৮ লাখ জাল স্ট্যাম্প ছাপিয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার নকল স্ট্যাম্প তৈরি হতো এ কারখানায়। তিনটি ধাপে প্রিন্টিং মেশিন পেরিয়ে তৈরি হতো সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প বা ব্যান্ড রোল। যা শুধুমাত্র গাজীপুর সরকারি টাকশালে তৈরি হবার কথা। এতে করে বড় অংকের রাজস্ব হারাচ্ছিল সরকার। দেশি–বিদেশি বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানি এসব স্ট্যাম্প কম মূল্যে কিনে প্যাকেটে লাগিয়ে দিতো।
অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার শেখ সাব্বির হোসেন বলেন, আটক এসব রোল গেলো তিনদিনের তৈরি করা। আটকরা জানিয়েছেন গত এক বছর ধরে এই কাজ করে আসছিলেন তারা। কেউ কেউ আগে থেকেই ছাপাখানার কাজ জানতেন। বেশি টাকা পাওয়ার লোভে এখানে কাজ করতেন বলে জানান তারা। এসব ছাপানো যে বেআইনি তারা তা জানতেন না। তাছাড়া কে এই প্রতিষ্ঠানের মালিক সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারনা ছিল না তাদের। তবে মাঝে মাঝেই দুয়েকজন লোক মাল নিতে আসলে তাদের কাছে এসব রোল তুলে দিতেন। এই ছাপাখানার পেছনে জড়িত অনেকের নাম এসেছে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তা বলতে চান না বলেও জানান অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার শেখ সাব্বির হোসেন।