চকরিয়ায় লবণ শ্রমিকদের মজুরি দিতে যাওয়ার সময় সশস্ত্র ছিনতাইকারীর দল ছিনিয়ে নিয়েছে এক লবণ ব্যবসায়ীর ব্যাগভর্তি নগদ ৮ লাখ টাকা। একই সময় মোহাম্মদ বাবুল নামের একজনকে অপহরণ এবং পাঁচটি মোটর সাইকেলও ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীর দল। তখন সশস্ত্র ছিনতাইকারীরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে অন্তত ১০ জনকে। তম্মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে পুলিশের জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯–এ ফোন করার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে থানা পুলিশের একটি দল। এ সময় ছিনতাইকারীদের জিম্মিদশা থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় অপহৃত ব্যক্তি বাবুলসহ ভাঙচুরের পর ছিনিয়ে নেওয়া পাঁচটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ঘটনায় জড়িতরা পুলিশের উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে আত্মগোপনে চলে যায়।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে উপজেলার উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর নতুন ঘোনার ওয়াপদা বেড়িবাঁধের চলাচল সড়কে এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন– হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ (৪০), মোহাম্মদ বাবুল (৫০), মো. সানজু (২৭), আবুল হোছাইন (৪৫), আমিনুল ইসলাম (৩৮), সামশুল আলম সওদাগর (৩৫), মো. শাহাজাহান (৩৫), জিয়াউর রহমান (৪৫), মুর্শেদুর রহমান (৩৫), মুবিনুল হক প্র. বাদল (৩৫)। তদ্মধ্যে মোহাম্মদ বাবুলকে আশঙ্কাজন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের বাড়ি কোনাখালী, ঢেমুশিয়া ও বদরখালী ইউনিয়নে।
ছিনতাইসহ হামলার শিকার লবণ ব্যবসায়ী কোনাখালী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কোনাখালী গ্রামের আহমদ আলী সিকদারের পুত্র হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ বাদী হয়ে ছিনতাইকারী দিদার, হেফাজ, কফিল, আবদুর রহিমসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত এজাহার জমা দিয়েছেন। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী ভরাটচর প্রকাশ দাঙ্গাঘোনা নামক এলাকায় চিংড়ি ও লবণ উৎপাদন প্রকল্প রয়েছে তার। সেখানে শত শত শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে লবণ উৎপাদনে। এসব শ্রমিকের মজুরি দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে কোনাখালীর বাড়ি থেকে নগদ ৮ লাখ টাকা ব্যাগভর্তি করে আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে মোটর সাইকেলযোগে রওনা দেন প্রকল্পের উদ্দেশে। এ সময় ছিনতাই, হামলা ও লুটপাটের শিকার হন তারা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া থানার নিয়ন্ত্রণাধীণ উপকূলীয় বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আল আমীন জানান, ৯৯৯–এ ফোন পাওয়ার পর পুলিশের একটি দল রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ অপরাধীচক্রের আস্তানায় অভিযান চালায়। এ সময় অপহৃত একজন, ভাঙচুরের পর ছিনিয়ে নেওয়া বিভিন্ন মডেলের পাঁচটি মোটর সাইকেল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে অপরাধীচক্র আস্তানা থেকে আত্মগোপনে চলে যায়।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, এই ঘটনার পর ভুক্তভোগী লবণ ব্যবসায়ীর দেওয়া অভিযোগটি আমলে নিয়ে থানার একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধারসহ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।