খেলাপি ঋণ, অনিয়মে জর্জরিত ন্যাশনাল ব্যাংকের অবস্থা এক বছরের মধ্যে ভালো হবে দাবি করে নতুন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেছেন, অন্য কারও সঙ্গে একীভূতও হবে না প্রথম প্রজন্মের ব্যাংকটি। তার ভাষ্য, ‘আগামী এক বছরের মধ্যে আর্থিক স্বাস্থ্যে উন্নীত হওয়ার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সম্মতি দিয়েছে।’ খবর বিডিনিউজের।
সাড়ে চার মাসের মাথায় আবার নতুন পর্ষদ গঠনের পরদিন গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর বাংলা মোটরে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন খলিলুর রহমান; যিনি ৪০ বছরের বেশি সময় আগে সম্পূর্ণ দেশি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের একজন।
বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডকে (এনবিএল) দেশের সবার ব্যাংক দাবি করে নতুন চেয়ারম্যান বলেছেন, সবার সহযোগিতা পেলে ব্যাংকটি দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর শেষে এনবিএল এর আর্থিক প্রতিবেদন সন্তোষজনক অবস্থানে উন্নীত হলে একীভূত হওয়ার মতো পরিস্থিতি থেকে বেঁচে যাবে ব্যাংকটি।
গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকটি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারসহ চার পরিচালক পদত্যাগ করেন। এরপর গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক ১০ সদস্যের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয়। এতে উদ্যোক্তা পরিচালক খলিলুর রহমান ছাড়াও আরেক উদ্যোক্তা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেনকে রাখা হয়। আর গত দেড় দশকের মধ্যে প্রথমবার সিকদার পরিবারের কাউকে রাখা হয়নি। নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়ে গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আসেন শিল্প গ্রুপ কেডিএসের কর্ণধার খলিলুর রহমান। এ সময় আরও তিন পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। ঋণ অনিয়ম হওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে বর্ষীয়ান শিল্পোদ্যোক্তা খলিলুর রহমান বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংকে লুটপাট আর হবে না, এক পয়সাও লুটপাট হবে না। এতটুকু আপনাদের বলতে পারি।’ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড় করাতে উদ্যোক্তারা নতুন করে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন পর্ষদ তিন হাজার কোটি টাকার আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। ন্যাশনাল ব্যাংককে ব্যবসায়ীবান্ধব ব্যাংক হিসেবে গড়া হবে মন্তব্য করে খলিলুর রহমান বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন আমরা বুঝি। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার মাধ্যমে ব্যাংক হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে।’ এসময় ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়াতে সংবাদমাধ্যমের সহযোগিতা চান তিনি। তিনি বলেন, নতুন পর্ষদ পুরনো ঋণ আদায়, ব্যাংকের বিদ্যমান ব্যবসা বাণিজ্যকে সমপ্রসারণ করা ও মুনাফায় ফিরতে চেষ্টা করবে।