যে উদ্দেশ্যে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে জিম্বাবুয়েকে নিয়ে আসা হয়েছিল সেটা গত দুই ম্যাচে অন্তত পূরণ হয়নি। গত দুই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে বটে বাংলাদেশ। কিন্তু সত্যিকার অর্থে প্রস্তুতি বলতে যা বুঝায় তা হয়নি মোটেও। প্রথম ম্যাচে বোলাররা দারুণ দাপট দেখিয়েছে। জিম্বাবুয়েকে ১২৪ রানে অল আউট করে দিয়ে সে রান তুলতে দুটি উইকেট হারাতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তানজিদ হাসান তামিম একাধিকবার জীবন না পেলে উইকেট সংখ্যা আরো বেশি হতে পারতো। দ্বিতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশের বোলাররা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন যথারীতি।
কিন্তু ব্যাটাররা তাদের পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। এই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ১৩৮ রানে অল আউট করে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু ব্যাটাররা আরো একবার তাদের পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। এই ম্যাচ জিততে টাইগারদের হারাতে হয়েছে ৪ উইকেট। ৯ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতলেও দলের টপ অর্ডার ব্যাটাররা পারেনি তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে।
আজ তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ে। চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের শেষটি অনুষ্ঠিত হবে আজ জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন নিয়মিতই দুইশর বেশি রান হচ্ছে। সে জায়গায় বাংলাদেশকে দেড়শরও কম রান টপকাতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। দলের টপ অর্ডার ব্যাটাররা পাননি কাঙ্ক্ষিত রান। বিশেষ করে যে ওপেনিং জুটি নিয়ে দুশ্চিন্তা বেশি সে ওপেনিংয়ে সফল নন ব্যাটাররা। প্রথম ম্যাচে একাধিকবার জীবন পেয়ে তানজিদ হাসান তামিম করেন ৪৭ বলে ৬৭ রান। তবে লিটন ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। ফিরেন ৩ বলে ১ রান করে। নাজমুল হোসেন শান্ত করেছিলেন ২৪ বলে ২১ রান। যা টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের সাথে বেমানান।
তবে ব্যাট হাতে সফল ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। প্রথম ম্যাচে এই তরুণ করেন ১৮ বলে অপরাজিত ৩৩ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে লক্ষ্য ছিল ১৩৯। সে ম্যাচেও বলতে গেলে ব্যর্থ দুই ওপেনার। তানজিদ তামিম করেন ১৯ বলে ১৮। আর লিটন করেন ২৫ বলে ২৩। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্ট্রাইক রেটটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর সে স্ট্রাইক রেটের দিক থেকে চিন্তা করলে ব্যর্থই বলতে হবে দুই ওপেনারকে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও পারেননি ব্যাটিংটা ঝালাই করে নিতে। এই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ১৫ বলে ১৬ রান। যা মোটেও প্রত্যাশিত নয় টাইগার অধিনায়কের কাছে। তবে এই ম্যাচেও তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাট যথারীতি ক্ষুরধার। ২৫ বলে ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হয়েছেন হৃদয়। টি–টোয়েন্টির বিচারে যা মানানসই ইনিংস বলা চলে। অভিজ্ঞ মাহমুদ উল্লাহ প্রথম ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ না পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেন ১৬ বলে ২৬ রানের ইনিংস।
টানা দুই ম্যাচে মোটেও সুবিধা করতে পারেনি দলের টপ অর্ডার ব্যাটাররা। তরুণ জাকির আলি, যাকে ভাবা হচ্ছে লিটন দাশের বিকল্প হিসেবে। তিনিও একই কাতারে। কাজেই প্রস্তুতিটা যেমনটি হওয়ার কথা ছিল সেটা হয়নি গত দুই ম্যাচে। আজ তৃতীয় ম্যাচে নিশ্চয়ই নিজেদের ঠিক টি–টোয়েন্টির রূপে ফিরে পেতে চাইবে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। যদিও গত দুই ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা ঠিকই তাদের দায়িত্বটা পালন করেছেন যথাযথভাবে। যা হয়তো আশা জাগাতে পারে। কিন্তু বাটারদের পরীক্ষাটা হবে কবে। যদিও এখনো তিনটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। যার একটি চট্টগ্রামে আর বাকি দুটি ঢাকায়। অন্তত এই তিন ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ব্যাটাররা নিজেদের ফিরে পাবে তেমনটাই চান বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীরা। কারণ বিশ্বকাপের আগে আর খুব বেশি খেলার সুযোগ নেই টাইগারদের। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তাদের বিপক্ষে তিনটি টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে টাইগাররা। এরপর নেমে পড়তে হবে বিশ্বকাপে। কাজেই প্রস্তুতির সে সুযোগটা রয়েছে তা কাজে লাগাতে হবে বাংলাদেশ দলকে। আজ বিকেল তিনটায় মাঠে গড়াবে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি।