রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড দ্বীপপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর আহমদ মিয়া। ঝড়ো হাওয়ায় মাত্র কদিন আগেই তাঁর ক্ষেতের সব ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এরমধ্যে অসুস্থ হলে একটি বড় অপারেশন করিয়ে শনিবার ঘরে এসেছিলেন। রোববার ভোরেই হঠাৎ ঝড়ো বাতাসে ঘরের পাশের বড় দুটি শিশুগাছ ভেঙে পড়ে তার ঘরের উপর। মুহূর্তে ঘরটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ভাগ্যক্রমে অসুস্থ আহমদ মিয়া ও তার স্ত্রী–সন্তানরা প্রাণে রক্ষা পেলেও খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
শুধু আহমদ মিয়ার বসতঘরই নয়, গতকাল রোববার সকাল ৬টার দিকে ঝড়ো হাওয়ায় ভেঙে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা, বৈদ্যুতিক মিটার, খুঁটি ও ট্রান্সফরমার। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এসব এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ। শুধুমাত্র রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইছামতি এলাকায় অন্তত ১৫টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সকাল ৯ টার দিকে সরেজমিন ওই এলাকায় গেলে দেখা যায়, রাস্তায় পড়া গাছ কেটে সরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। অনেকেই বাতাসে উড়ে যাওয়া টিন কুড়িয়ে ঘরের চালা মেরামত করছেন। কেউ কেউ ঘরের উপর ও উঠানে ভেঙে পড়া গাছ কেটে পরিষ্কার করছেন। কথা হয় ক্ষতিগ্রস্ত সুজন বড়ুয়ার সাথে। তিনি বলেন, সকাল ৬ টার দিকে কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই তীব্র বেগে ঝড়–বাতাস শুরু হয়। মুহূর্তেই ঝড়ের তীব্র গতিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বসতঘর। বিধ্বস্ত হয় ঘরবাড়ি, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছপালা। নষ্ট হয়ে ঝরে যায় কাঁচা আম। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পিন্টু বড়ুয়া বলেন, তার একমাত্র অবলম্বন ঘরটিতে বড় গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
এলাকার ইছামতি ধাতুচৈত্য বিহারের অধ্যক্ষ সুমঙ্গল মহাথের লোকজন নিয়ে বিহারের রাস্তায় পড়া গাছ কেটে পরিষ্কার করছেন। তিনি বলেন, দুই মিনিটের ঝড়ো বাতাসে গ্রামের সব কিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। তবে এই গ্রাম ছাড়া আশেপাশের কেনো গ্রামে ঝড়ো বাতাস কিংবা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এলাকার বাসিন্দা রুপন বড়ুয়া ও শিপলু বড়ুয়া বলেন, তীব্র বাতাসে তাদের ঘর ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ অবস্থায় তারা সরকারি সহযোগিতা কামনা করেন। খবর পেয়ে এলাকায় আসেন রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ইছামতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ওমর তালুকদার। তিনি বলেন, হঠাৎ কাল বৈশাখী ঝড়ে শুধু এই এলাকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।