বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে জনগণের সম্পদ ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ মধ্যে লুটিয়ে দেবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এমন মন্তব্যে বেজায় ক্ষেপেছেন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট। তাদের অভিযোগ, মোদীর ওই বক্তব্য ইসলাম বিদ্বেষী। ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দফা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ১ জুন পর্যন্ত আরও ছয় দফায় ভোট গ্রহণ শেষে ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। খবর বিডিনিউজের। রাজস্থানে রোববার এক নির্বাচনী সমাবেশে মোদী ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের
নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে কথা বলার সময় বলেন, ‘যাদের অনেক বাচ্চা–কাচ্চা আছে তাদের’ মধ্যে দেশের সম্পদ বিলিয়ে দিতে চায় কংগ্রেস। মোদী ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের নিয়েই এ কথা বলেছেন বলে বিশ্বাস করা হয়। কংগ্রেস মোদীর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মোদী এবং তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নিয়মিতই দেশটির সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলমান বিরোধী নানা বক্তব্য দিয়ে থাকে।
মানবাধিকার গ্রুপগুলোর অভিযোগ, মোদীর আমলে ভারতের মুসলমানদের নানা বৈষম্য এবং আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। তাদের দেশটির ‘দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক’ হিসেবে বসবাস করতে বাধ্য করা হচ্ছে। রোববারের সমাবেশে মোদী আরও বলেন, তারা ভারতে ঐতিহ্যগতভাবে নারীদের সংরক্ষণ করা সোনার ‘তালিকা করবে’ এবং সেগুলো পুনরায় বিতরণ করবে। এবং তাদের আগের সরকার বলেছিল, দেশের সম্পদের উপর প্রথম অধিকার মুসলমানদের। তাহলে বিষয়টা এমন দাঁড়ায় যে, তারা (কংগ্রেস) জনগণের সম্পদ সংগ্রহ করবে এবং কাদের মাঝে বিতরণ করবে? তাদের মাঝে, যাদের বেশি সন্তান রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের মাঝে। আপনাদের কষ্টার্জিত অর্থ কী অনুপ্রবেশকারীদের হাতে যাওয়া উচিত?
মোদী মূলত ২০০৬ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর একটি বক্তব্যের উল্লেখ এখানে করেছেন। তখন কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। মনমোহন সিং সংখ্যালঘুদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন, যাতে তারাও দেশের উন্নতির ফল ভোগ করতে পারে। মুসলমান সমপ্রদায়ের লোকজন অধিক সন্তানের জন্ম দেয়। এমন একটি কথা বহুল প্রচলিত। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দাবি বানোয়াট এবং এই দাবি মুসলমানদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণ করার পথ উন্মুক্ত করে। দেশজুড়ে বিরোধী দলের নেতারা মোদীর ওই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারের পক্ষ নিয়ে বলেন, এটি ভারতের সব নাগরিকদের জন্য এবং এটি সবার জন্য সমতা এবং ন্যায় বিচারের কথা বলেছে। তিনি মোদীর মন্তব্যকে আতঙ্কগ্রস্তের ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ বলেছেন। বলেন, প্রথম দফা ভোটে বিরোধী জোট মোদীর বিজেপি থেকে ভালো পারফমেন্স করায় জনগণের মনযোগ বিরোধীদের উপর থেকে সরিয়ে নিয়ে এই চক্রান্ত করা হয়েছে। ভারতের ইতিহাসে আর কোনো প্রধানমন্ত্রী তার পদের সম্মানকে এতটা নিচে নামাননি, যতটা মোদীজি নামিয়েছেন। ভারতের নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।