দেশজুড়ে বয়ে যাচ্ছে তাপদাহ। তীব্র তাপে ঝুঁকি বাড়ে হিট স্ট্রোকের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র তাপমাত্রায় শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, সাধারণত ঘামের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা বেরিয়ে যায়। শরীর যখন এই প্রক্রিয়া তাপমাত্রা কমাতে পারে না তখনই হিট স্ট্রোক হয়ে থাকে। হিট স্ট্রোক সংগঠিত হলে শরীরের তাপমাত্রা ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি হতে পারে। হিট স্ট্রোকের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা করা সম্ভব না হলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হিট স্ট্রোকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, কিডনি এবং শরীরের মাংসপেশীর ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত গরমের মধ্যে কঠোর কায়িক পরিশ্রম কিংবা শারীরিক ব্যায়াম করলেও হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া ছোট বাচ্চা, প্রবীণ ব্যক্তি, যাদের দেহের ওজন অতিরিক্ত, যারা শারীরিক পরিশ্রমের কাজ বেশি করেন তারা প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। শিশু ও ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাবধানে থাকতে হবে। কারণ তাদের দেহে তাপ নিয়ন্ত্রণ সিস্টেমটি বড়দের মতো নয়, তাই তারা বুঝতে পারে না তাদের দেহে তাপমাত্রা উঠানামা করছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, হিট স্ট্রোকের আক্রান্ত ব্যক্তি মানসিক অবস্থা হঠাৎ পরিবর্তন হতে পারে। এমনকি অনেক রোগী অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করে। রোগীর কথা জড়িয়ে যায়, খিঁচুনি হয়, জ্ঞানও হারিয়ে ফেলে। এছাড়া শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে। হৃৎস্পন্দন হঠাৎ বেড়ে যাবে। কারণ তাপের চাপ থেকে শরীরকে ঠাণ্ডা করতে সাহায্য করার জন্য হৃৎপিণ্ড দ্রুত পাম্প করতে শুরু করে। মাথাব্যথা হতে পারে বা মাথা ঝিমঝিম করতে পারে। তবে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমেই দ্রুত ছায়া আছে এমন ঠাণ্ডা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। এরপর পরনের পোশাক খুলে দিতে হবে। গোসল সম্ভব না হলে ভেজা কাপড় দিয়ে ত্বক ঘন ঘন মুছে দিতে হবে। ত্বকের ওপর ঠাণ্ডা ভেজা কাপড় রাখুন। মাথা, ঘাড়, বগল এবং কুঁচকিতে ঠাণ্ডা ভেজা কাপড় বা বরফ রাখুন। ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখা কাপড়ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, আজ সকালে চমেক শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে ‘হিট স্ট্রোক এবং তাপজনিত অন্যান্য রোগ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সোাসইটি অব মেডিসিন চট্টগ্রাম শাখা এবং চমেক হাসপতাল কর্তৃপক্ষ।