বিশুদ্ধ এবং পুষ্টিকর খাদ্য মানুষের জীবন ধারণের জন্য অন্যতম মৌলিক অধিকার। বিশুদ্ধ খাদ্য যেন এখন সোনার হরিণ। হোটেল রেস্তোরাঁর চোখ ঝলসানো সাজ–সজ্জা, আলোর ঝলকানির কোথাও কোনো কমতি নেই। কিন্ত রান্নাঘরের পরিবেশ নোংরা, অস্বাস্থ্যকর। অনেকক্ষেত্রে এক ঘরেই রান্না বান্নার ব্যবস্থার পাশাপাশি শৌচাগার অবস্থিত থাকে। ফ্লোর ভেজা, ইঁদুর ও তেলাপোকার রাজত্ব। খাদ্য সংরক্ষণ বা ডিপ ফ্রিজে পচা বাসি খাবারের পাশাপাশি রান্না করা এবং কাঁচা মাছ–মাংশ তরিতরকারি, পিপারমেন্ট, সোডা ও বেকিং পাউডারসহ বিভিন্ন ধরনের উপকরণ একসঙ্গে বা পাশপাশি রাখা হয়। ট্যালো, ফ্যাটি এসিড ও ইমউসাইল্টিং, টেক্সটাইল রং বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক বা কেমিক্যাল, ক্ষতিকর কীটনাশক, ফরমালিন, মনোসোডিয়াম, ইথোফেন, চক পাউডার, ইউরিয়া, মার্জারিন, পশুর চর্বি, খনিজ তেল, ন্যাপথলিন, ডিডিটি, সাইক্লোমেট, কাঠের গুঁড়ো, ইটের গুঁড়ো, পোড়া মুবিলসহ বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে খাদ্যে ভেজাল করা হয়। ভেজাল খাদ্যদ্রব্য মানুষের কিডনি লিভার, হৃৎপিণ্ড, অস্থিমজ্জা নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, হাঁপানি এগুলো অনেক বেড়ে যাচ্ছে। দৃষ্টি ও শ্রবণ শক্তি হারাচ্ছে। নোংরা পরিবেশে তৈরি এবং ভেজাল খাদ্য একটি জাতিকে সত্যিকার অর্থে ক্রমশ পঙ্গুত্ব এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতি অদূর ভবিষ্যতের জন্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিরট হুমকি। জরিমানা করে এসব অসাধু দুষ্টু চক্রকে প্রতিরোধ করা যাবে না। ভেজালকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিরতরে বন্ধ করা, জেল জরিমানা করার পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন করা সময়ের দাবি।
মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী
২২ গুরা মিয়া চৌধুরী লেইন,
দেওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম।