খাগড়াছড়িতে সরকারি অর্থ খরচ করে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ড্রেন নির্মাণ করেছেন পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা। তিনি বর্তমানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) খাগড়াছড়ি জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি অর্থ ব্যয় করে ড্রেন নির্মাণের কথা তিনি স্বীকার করেছেন।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় নবনির্মিত রেস্টুরেন্টে যাতায়াতের জন্য ড্রেন নির্মাণের প্রকল্প নেন তৃপ্তি শংকর চাকমা। ২০২২–২৩ অর্থবছরে নেওয়া খাগড়াছড়ি সদরে হাতির কবর সংলগ্ন স্থানে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৬ লক্ষ ৯২ হাজার ২৫ টাকা। প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান শেষে কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ঈশিতা এন্টারপ্রাইজ।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাধন দেবনাথ জানান, দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী আমি কাজ করেছি। আমাকে পরিষদ থেকে যেখানে লেআউট দিয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ করেছি। ড্রেন নির্মাণ করেছি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সম্মুখে বাঁশঝাড় নামে একটি রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করছেন তৃপ্তি শংকর চাকমা। রেস্টুরেন্টটি তার স্ত্রীর নামে দেখানো হয়েছে। মূল সড়ক থেকে রেস্টুরেন্টে যাতায়াতের জন্য তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের মালিকানাধীন জায়াগায় ড্রেন নির্মাণের প্রকল্প নেন। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থে ড্রেনের নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
সরকারি অর্থে ব্যক্তিগত প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের প্রকৌশল শাখার সহকারী প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার হালদার বলেন, প্রতিটি প্রকল্প শেষে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে মন্তব্য লিখতে হয়। কিন্ত এই প্রকল্পটির মন্তব্য ঘরে আমি কিছু লিখিনি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
প্রকল্পটির বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা বলেন, আমার রেস্টুরেন্ট এবং মূল সড়কের মাঝখানে ড্রেনটির অবস্থান। ড্রেনের জন্য আমার রেস্টুরেন্টটা ক্ষতি হচ্ছে। ড্রেনটি মূলত সওজের সম্পত্তি। আমি ব্যক্তিগতভাবে ড্রেন নির্মাণ করলে নানা ধরনের সমস্যা হতো। যেহেতু আমি জেলা পরিষদে ছিলাম, তাই সুযোগটি নিয়েছি আরকি। আমি চাকরি করি। এত মানুষকে দিচ্ছি (প্রকল্প), নিজের জন্য একটা ড্রেন নির্মাণ করলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়!