২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির দাবিতে ও জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ রোববার সকালে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরামের উদ্যোগে আলোচনা সভা সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
নগরের দোস্তবিল্ডিংস্থ কার্যালয়ে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি, প্রবীণ রাজনীতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম মন্টু। প্রধান আলোচক ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার।
আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের মহানগর সাধারণ সম্পাদক সেলিম চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মালেক খান, নারী বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সাইফুন নাহার খুশী, সম্পাদক মন্ডলির সদস্য মঈনুল আলম খান, নবী হোসেন সালাউদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের আশেক মাহমুদ মামুন, রাজীব চন্দ, কোহিনুর আকতার প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, একাত্তরের ২৫ মার্চ ভয়াল কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র নিরাপরাধ ও ঘুমন্ত সাধারণ বাঙালির ওপর যেভাবে পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তা পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম ভয়াবহ জেনোসাইড। একটি জনগোষ্ঠীর স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের দাবিকে চিরতরে মুছে দিতে এবং বাঙালি প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার নারকীয় পরিকল্পনা ছিল ‘অপারেশন সার্চ লাইট’।
এই ভয়াবহতম নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে চতুর্দশ অধিবেশনে ২৫ মার্চকে জাতীয় ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন দিবসটিকে ইতিহাসের ভয়ানক গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
বক্তারা বলেন, জাতিসংঘ এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি সুপ্রাচীন ও হালকালীন গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বীকৃতি দিয়েছে অটোমান টার্কদের হাতে ১৯১৫ সালের ১৫ লক্ষ আর্মেনিয় গণহত্যা, ১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডায় ৮ লক্ষ তুটসি জাতিগোষ্ঠির গণহত্যা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাজিদের হাতে ৬০ লক্ষ ইহুদি গণহত্যা, এমন কি স্বীকৃতি দিয়েছে ১৯৯২ সালের বসনিয়া ও ১৯৭৫ সালের কম্বোডিয়ার গণহত্যা।
কিন্তু পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসরদের হাতে যে ৩০ লক্ষ বাঙালির পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ ঘটে, যা আক্ষরিকভাবে “জেনোসাইড”। এর কোনো স্বীকৃতি আজও পর্যন্ত দিতে পারেনি বিশ্ব সংস্থা! এই ব্যর্থতা কেবল দু:খজনক নয়, বরং বিশ্ব সংস্থার চরম ব্যর্থতা ও দৈন্যতারই বহি:প্রকাশ।
বাঙালি গণহত্যার এই দিবসটি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদান আজ সময়ের দাবি।