সিলেট টেস্টের প্রথম দিনের দুই সেশনটা দুই রকম দেখল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম ভাগটা বাংলাদেশের জন্য সাফল্যে মোড়ানো হলেও শেষ ভাগটা হতাশায় ভরা। কারণ দিনের প্রথম ভাগে বাংলাদেশের বোলারদের যে সাফল্য তা মিলিয়ে যায় দিনের শেষ ভাগে। তাই বলা যায় সিলেট টেস্টের প্রথম দিনটাই হতাশায় ভরা বাংলাদেশের জন্য। অথচ বোলারদের নৈপুণ্যে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ইনিংসে ২৮০ রানে অলআউট করেছে বাংলাদেশ। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ৭ উইকেট বাকি রেখে ২৪৮ রানে পিছিয়ে থেকে খেলা শুরু করবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। পরে সফরকারীদের ইনিংসকে ভাগ করা যায় তিন ভাগে। পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদের বোলিংয়ে মাত্র ৫৭ রানে ৫ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। শেষ দিকে অভিষিক্ত পেসার নাহিদ রানার তোপে মাত্র ২১ রানে বাকি ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দুই পেসারই নেন ৩টি করে উইকেট। মাঝে ষষ্ঠ উইকেটে ২০২ রানের জুটি গড়ে তোলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। বাংলাদেশের বিপক্ষে অষ্টম উইকেটে এটিই শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ জুটি। দুই ব্যাটসম্যানই করেন সেঞ্চুরি। দুজনই থামেন সমান ১০২ রান করে। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই নিশান মাদুশকাকে ফিরিয়ে উড়ন্ত সূচনা করেন খালেদ। পরে দিমুথ কারুনারাত্নে ও কুসাল মেন্ডিসকেও দ্রুত ফেরান তিনি। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস রান আউট হলে পঞ্চাশের আগেই ৪ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। শরিফুল ইসলামের বলে লেগ স্লিপে ক্যাচ দিনেশ চান্দিমাল। ৫৭ রানে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে তখন সফরকারীরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৫ টেস্টে এবারই প্রথম ১০০ রানের আগে ৫ উইকেট হারায় তারা। কারুণারাত্নে ১৭ এবং কুসাল ১৬ রান করেন। এরপর হাল ধরেন ধনঞ্জয়া এবং কামিন্দু। যোগ করেন ২০২ রান। যদিও পরপর দুই ওভারে মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে দুজনকেই ফেরান নাহিদ রানা। ১৩১ বলে ১০২ রান করা ধনঞ্জয়া ফিরেন মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে। আর ১২৭ বলে ১০২ রান করা কামিন্দু ফিরেন লিটন দাশের হাতে ক্যাচ দিয়ে। যদিও রানের খাতা খোলার আগেই ফিরতে পারতেন কামিন্দু। কিন্তু স্লিপে সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন মাহমুদুল হাসান জয়। শূন্য রানে জীবন পেয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন কামিন্দু। অন্য প্রান্তে ধানাঞ্জয়াও দ্রুত রান তুলতে থাকেন। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে ঝড় তোলেন দুজন। মধ্যাহ্ন বিরতির পরের ওই ১০ ওভারে লঙ্কানরা করে ৭৪ রান। কামিন্দু ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন। আর ৫৩ ম্যাচের ক্যারিয়ারে লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়ার একাদশতম সেঞ্চুরি এটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয়। এদুজন আউট হওয়ার পর নিচের ব্যাটসম্যানরা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনশর আগে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের পক্ষে খালেদ আহমেদ ৭২ রানে ৩ টি এবং নাহিদ রানা ৮৭ রানে নেন ৩ উইকেট।
দিনের শেষ ভাগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল একেবারে বিবর্ণ। ১১ রানের মাথায় ফার্নান্ডোর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন জাকির আলি। দুই ওভার পর ফিরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়ানডে সিরিজে সেঞ্চুরি করা টাইগার অধিনায়ক ফিরেছেন ৫ রান করে। অভিজ্ঞ মোমিনুল হক খেলেছেন মাত্র ৭ বল। ফিরেছেন ৫ রান করে। দিনের শেষ বেলার ১০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ফলে এখন বড় চাপের মুখে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করতে হবে স্বাগতিকদের। যেখানে তারা এখনো পিছিয়ে আছে ২৪৮ রানে।