গভীর রাতে ঘোষিত কমিটি বাতিল না হলে কঠোর কর্মসূচি

নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাংশের ১২ নেতার হুঁশিয়ারি

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৭ মার্চ, ২০২৪ at ৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ

গভীর রাতে নগরীর ৭ থানা ও ১২ ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঘোষিত কমিটি অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাংশের ১২ নেতা। গঠনতন্ত্র না মেনে রাতের আঁধারে দেয়া একতরফা পকেট কমিটি অবিলম্বে বাতিল করা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেসসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সুজিত দাশ। তিনি বলেন গত ১৩ মার্চ দিবাগত রাতে ফেসবুকে ভাইরাল হয় নগরীর ৭ থানা ও ১২ ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের তালিকা।

ওইদিন আমরা লিখিত ভাবে রাতের আঁধারের এই ‘পকেট কমিটির’ প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২০ সদস্যের আংশিক কমিটির ১২ নেতা (৭ সহ সভাপতি, ৩জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২ জন সাংগঠনিক সম্পাদক)। কেন্দ্রীয় নির্দেশনানুযায়ী সবার পরামর্শে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি হওয়ার কথা ছিল। মহনগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাতের আঁধারে কমিটি গঠন করে। আবার এসব কমটিতে রাখা হয় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত হাইব্রিড নেতা, অস্ত্র, মাদক ও হত্যা মামলার আসামিদের। এমন কমিটি স্বেচ্ছাসেবক লীগের পুরনো ত্যাগী কর্মীদের স্বপ্ন, সংগঠনের নিয়ম নীতি ও প্রশংসনীয় ভাবমূর্তিকে গলাটিপে হত্যা করেছে। আমরা মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২০ জনের মধ্যে ১২ জনই এসব পকেট কমিটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।

তিনি বলেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের একপেশে নানামুখী সিদ্ধান্ত সংগঠনকে বিপদগ্রস্ত করেছে। বিষয়টি কেন্দ্র অবগত হয়ে ঢাকায় কমিটির ২০ জনকে ডেকে সংগঠনের স্বার্থে একসাথে কাজ করতে আহ্বান জানান। আমরাও কাজ শুরু করি। এর মধ্যে গতবছর সেপ্টেম্বরে কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রামে থানা ও ওয়ার্ডে সম্মেলন করার তাগিদ দেয়া হয়। আমরা অক্টেবরে সম্মেলন শেষ করি। সম্মেলনে ১৫টি থানা ও ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে ৮৫০ জন প্রার্থী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ফরম জমা দেন। কিন্তু সভাপতিসাধারণ সম্পাদক কারো সাথে পরামর্শ এবং জীবনবৃত্তান্ত যাচাই বাছাই না করে কমিটি গঠন করেন। ‘মাই ম্যান’ সৃষ্টি করতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের দীর্ঘদিনের সুনামকে বিতর্কিত করেছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

অবিলম্বে কমিটিগুলো বাতিলের দাবি জানিয়ে সুজিত দাশ বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রকে অবহিত করেছি আমরা। তারাও কমিটির বিষয়ে জানেন না। আমরা ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কেন্দ্র ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সংগঠনের স্বার্থে আমরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেন ফরহাদ, মনোয়ার জাহান মনি, মুহাম্মদ আজিজ মিসির, আবদুর রশিদ লোকমান, মিনহাজুল আবেদীন সায়েম, যুগ্ম সম্পাদক মো. সাইফুদ্দিন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও সরফরাজ নেওয়াজ চৌধুরী রবিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদ খান ও মো. সালাহউদ্দিন। নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২০ সদস্যের আংশিক কমিটির ১২ নেতা সকলেই নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ..ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।

উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ বুধবার গভীর রাতে (রাত ১টা ৪৫ মিনিটে) চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুকে নগরীর ৭ থানা ও ১২ ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করা হয়। গভীর রাতে ১৯ ইউনিটের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদ জানান নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাংশের ১২ নেতা। গতকাল তারা সংবাদ সম্মেলন করে এক তরফা ভাবে কমিটি গঠনের প্রতিবাদ জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাহিদার বেশি উৎপাদন, তবুও চট্টগ্রামে লোডশেডিং
পরবর্তী নিবন্ধসঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না হলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা হ্রাস পায় : ডা. ফারহানা