রাঙ্গুনিয়ায় আমনক্ষেত সুরক্ষায় আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সাহায্যে ধানের ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দমন করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কৃষকেরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্লকে আলোক ফাঁদ স্থাপন করেছেন। অনেক কার্যকরী হওয়ায় কৃষকদের কাছে এই পদ্ধতি অনেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৩১৫ হেক্টর হলেও আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। কয়েকদিন পর গাছে থোড় আসবে। এই সময়ে ধানে ফড়িং ও বিভিন্ন পোকা আক্রমণ করে। তাই পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করতে আগাম ব্যবস্থা হিসেবে গেল তিন সপ্তাহ ধরে আমনক্ষেতে আলোক ফাঁদ ব্যবহার শুরু হয়ে এখনো চলমান রয়েছে। সপ্তাহের প্রতি বুধবার উপজেলার প্রতিটি ব্লকে একযোগে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। এরবাইরেও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সাহায্যে নিয়মিত এই আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে পূর্ব মরিয়মনগর ব্লকে গিয়ে দেখা যায়, আমন ক্ষেতে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয়েছে। ধানের জমির পাশে তিনটি খুঁটি দিয়ে একটি বৈদ্যুতিক বাতি ঝুলানো হয়েছে। বাতির নিচে একটি বড় পাত্রে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি রাখা হয়েছে। বাতি জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে ফসলের জমির বিভিন্ন প্রজাতির পোকা এসে নিচে রাখা পাত্রের পানিতে পড়ে মরছে। এভাবেই আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকা এবং উপকারী পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁদটি স্থাপন করে রাখলে ক্ষতিকর পোকা দমন করা সম্ভব। এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার শীল বলেন, ধানি জমিতে কি কি পোকা আছে তা জানার জন্য আমরা আলোর ফাঁদ স্থাপন করে থাকি। মূলত জমিতে ক্ষতিকর পোকার পাশাপাশি অনেক উপকারী পোকামাকড় থাকে। আমরা যদি কি কি উপকারী পোকামাকড় আছে তা না জেনে অপরিকল্পিতভাবে কীটনাশক প্রয়োগ করি তাহলে ক্ষতিকর পোকার পাশাপাশি অনেক উপকারী পোকামাকড়ও মারা যেতে পারে। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং দিন দিন ক্ষতিকর পোকার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই আমরা পোকামাকড়ের উপস্থিতি জানার জন্য আলোর ফাঁদ স্থাপন করে থাকি। এর মাধামে আমরা কৃষকদের জানিয়ে দিতে পারি কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে নাকি করতে হবে না।












