খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে ৮৪ হাজার ৩৯৪টি কার্ডধারী গরীব–অসহায় পরিবার ৩০ কেজি করে সাশ্রয়ী মূল্যে চাল পাচ্ছেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে কার্ডের মাধ্যমে প্রতি কেজি ১৫ টাকা দামে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হবে।
ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে ডিলাররা চাল উত্তোলন শুরু করেছেন। গত ১ মার্চ থেকে আগামী ১০ মার্চের মধ্যে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের নির্দেশনা রয়েছে। আজ অথবা কালকের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সব উপজেলায় এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের কর্মকর্তারা। গতকাল সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান উপলক্ষে আগামী ১০ মার্চের মধ্যে সারাদেশে ৫০ লাখ পরিবারকে দেড় লাখ টন চাল বিতরণ করা হবে। দেড় লাখ টন চাল যদি বাজারে ১৫ টাকা দরে যায়, তাহলে ৫০ লাখ পরিবারকে আর বাজার থেকে চাল কিনতে হবে না। এতে চালের বাজারে স্বস্তি আসবে বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা।
এই কর্মসূচির আওতায় চট্টগ্রামের প্রায় সাড়ে ৮৪ হাজার পরিবারকে রমজান মাস বাজার থেকে চাল কিনতে হবেনা। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীন আজাদীকে বলেন, রমজানকে সামনে রেখে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চট্টগ্রামের ৮৪ হাজার ৩৯৪টি কার্ডধারী পরিবার ১৫ টাকা (প্রতি কেজি) দামে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। চাল বিতরণের জন্য ডিলাররা চাল উত্তোলন শুরু করেছে। ইতোমধ্যে অনেক উপজেলায় চাল উত্তোলন করে নিয়ে গেছে ডিলাররা। বুধবার আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার ডিলাররা চাল উত্তোলন করবে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বছরে ছয় মাস চলে। এই কর্মসূচির আওতায় গ্রামাঞ্চলে গরীব অসহায় একটি পরিবারকে ৩০ কেজি চাল দেয়া হয়। যার প্রতি কেজির দাম মাত্র ১৫ টাকা।
জানা গেছে, জাতীয় খাদ্য নীতিতে সকল সময়ে দেশের সকল মানুষের জন্য নির্ভরযোগ্য খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠে (এসডিজি) নো–পোভারটি ও জিরো হাঙ্গার অর্জনের প্রত্যয় ঘোষিত হয়েছে। তাই ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দারিদ্র্য দূরীকরণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে। এ লক্ষ্য, প্রত্যয় ও অভিপ্রায় অর্জনের জন্য পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র জনগণকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদান ও পুষ্টি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সরকার খাদ্য অধিদপ্তরের অধীনে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। এ কর্মসূচির আওতায় ইউনিয়ন পর্যায়ে হতদরিদ্র পরিবারকে শুভেচ্ছা মূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালে প্রণীত ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে হতদরিদ্রদের জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য নীতিমালা ২০১৬ সংশোধন করে কার্যক্রমকে আরও সুসংহত এবং সময়োপযোগী করার জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এ নীতিমালা অনুযায়ী মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এ ৫ মাস সরকার এ কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে ২০১৭ সাল থেকে খাদ্যশস্য সহায়তা প্রদান করে আসছে।