জীবন ও জীবিকার টানে কর্মব্যস্ত মানুষ। অনেকে সারা বছর লাইব্রেরিতে যেতে পারেন না। একুশের বই মেলায় ওনাদের সরব উপস্থিতি থাকে। বইমেলা মানেই লেখক পাঠকের অনন্য মেলবন্ধন। একা একা নয়, পরিবারের সদস্যদের এবং অনেকে দল বেঁধে বন্ধুবান্ধব মিলে উপস্থিত হয়ে সমৃদ্ধ করে তোলেন বই মেলার পরিবেশ। থাকে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠের আসর এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বই পরিচিতি মূলক আয়োজন। কিন্তু এ বছরের বই মেলায় কিছু অতি উৎসাহী মানুষের নেতিবাচক ভিন্ন চিত্র আমরা দেখলাম। বই কেনা বা পড়া নয়, কিছু মানুষের পেছনে বাজে মন্তব্য ও দল বেঁধে অবান্তর এই হৈ হট্টগোল চিৎকার কারা করেছে বা কেন করেছে সেটা মূল বিবেচ্য বিষয় নয়? মূল বিবেচ্য হলো এটি বই মেলার সমৃদ্ধ ও সৌন্দর্যের পরিবেশ নষ্ট করেছে। আগামীতে মেলার আয়োজকদের এই বিষয়ে আরো সচেতন ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একটি ভালো বই মানুষের মনকে পরিতৃপ্ত এবং পরিশুদ্ধ করে। আশির দশকে চুনতিতে আনজুমন এ নওজোয়ান ক্লাব ভিত্তিক লাইব্রেরি ছিলো। এখন রোটারি জেলার সহযোগিতায় চুনতি হাকিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত চুনতি পাবলিক লাইব্রেরি চলমান। চুনতি ডট কমের পরিকল্পনায় আছে আগামীতে চুনতিতে প্রতিবছর বই মেলার আয়োজন করা। রাজধানী ঢাকায় আমাদের অহংকার একুশকে ঘিরে বাংলা একাডেমির মাসব্যাপী বইমেলা এবং চট্টগ্রাম সহ সারাদেশে বিভিন্ন জেলা শহরে বই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আশার কথা হচ্ছে, বইমেলাকে ঘিরে পাঠক, লেখক আর প্রকাশকের মাঝে একধরনের টেকসই সেতুবন্ধন গড়ে উঠছে। এতে দিন দিন বাংলাভাষায় লেখা বইয়ের কলরব বাড়ছে আর সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের দেশের পাঠক–লেখক ও প্রকাশকগণ। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে জানতে এবং শিশু ও কিশোরদের কম্পিউটার গেইমস কিংবা টেলিভিশনের প্রতি আসক্তি কমাতে বইয়ের বিকল্প নেই। সুন্দর ও সমৃদ্ধ পরিশুদ্ধ পরিবেশ সারাদেশের বইপ্রেমী পাঠক, প্রবীণ খ্যাতনামা ও নবীন লেখকদের উজ্জ্বল উপস্থিতি, স্থানীয়ভাবে পাঠক বৃদ্ধি ও প্রকাশনা শিল্পের সমৃদ্ধিসহ ঐতিহ্যবাহী এই বইমেলা হোক পাঠক–লেখক–প্রকাশকের উৎসবমুখর মহামিলনমেলা।