পটিয়ায় স্কেভেটর দিয়ে রাতের আঁধারে নির্বিচারে পাহাড় ও কৃষি জমির মাটি কাটা যেন থামানো যাচ্ছে না কিছুতেই। উপজেলার হাইদগাঁও, কচুয়াই, কেলিশহর, কাশিয়াইশসহ বিভিন্ন এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় ও কৃষি জমির মাটি প্রতিনিয়ত লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। পাহাড় কাটার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট করা হচ্ছে। অপরদিকে রাতের আঁধারে মাটি ভর্তি ড্রাম ট্রাকের দৌরাত্মের ফলে গ্রামীণ সড়ক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পটিয়া উপজেলা আইন–শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ও কৃষি জমির মাটি কাটা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূইয়া জনী। তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাতের আঁধারে কৃষি জমির মাটি কাটা নিয়ে অনেক অভিযোগ এসেছে। দুয়েক জায়গায় মাটি কাটায় জড়িতদের ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানাও করেছে। এরপরও বিভিন্ন এলাকায় রাতের আঁধারে মাটি কাটা চলছে। স্কেভেটরগুলো দিনে ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে রাখা হয়, রাতে বের করে চলে পাহাড় ও জমির মাটি নিধন। এসব থামাতে প্রয়োজনে আমরা রাতেই অভিযান পরিচালনা করব। এ বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
এসময় পটিয়ার সংসদ সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম শিরু, পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলামসহ বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান এবং উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় অনেকেই জানান, পাহাড় ও মাটি কাটায় জড়িত রয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। যাদের ভয়ে স্বয়ং অনেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও মুখ খুলতে সাহস করেন না। এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে প্রশাসনের যোগসাজশ রয়েছে দাবি করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, প্রশাসন না চাইলে কেউ পাহাড় ও কৃষি জমির এক কোদাল মাটিও কাটার সাহস পাবে না। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ‘টোকেন’ এর মাধ্যমে মাটি কাটা সিন্ডিকেট প্রতিবছর পাহাড় ও কৃষি জমির মাটি কেটে লুট করছে। মাটি কাটায় ব্যবহৃত ড্রাম ট্রাক আটক করে পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ারও অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, পাহাড় ও কৃষি জমি কাটার বিষয়ে খবর পেলেই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা মোটেই সত্য নয়।