বান্দরবানে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। একইসাথে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড আনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করা হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বান্দরবানের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা আদালত এই আদেশ প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত চোবাহান জোমাদার (৩৯) লামা ৬নং রুপসীপাড়া ইউপির ৬ নাম্বার ওয়ার্ড নুর আলী পাড়া এলাকার বাসিন্দা।
আইনজীবী ও আদালত সূত্র জানায়, ২০০২ সালে হালিমা বেগমের সাথে চোবাহানের বিয়ে হয়। তাদের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় কন্যা শিশুটি।
দাম্পত্য জীবনে সম্পর্কের অবনতি হলে ২০১০ সালে ডিভোর্স হয় তাদের মধ্যে। সেই থেকে কন্যা শিশুটি ও মা শিশুটির মামার বাড়িতেই থাকতেন। মামার বাড়িতে আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে ২০১৮ সালে তার কিশোরী কন্যাকে বাবা চোবাহান জোমাদার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান ততদিনে কন্যার বয়স হয় ১৪ বছর।
ওই বছরের ১৯ মে রাত সাড়ে ৭ টায় কন্যাটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বাবা চোবাহান জোমাদার। সেই থেকে ওই বছরের ৩ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময় পালাক্রমে ধর্ষণ করে আসছিল।
লোক লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতে না পারলেও পরে মামার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার মাকে জানালে ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর কিশোরীটির মামা মো. রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে লামা থানায় চোবাহান জোমাদারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন।
এরই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্বাক্ষ-প্রমাণ গ্রহণ শেষে আদালত আজ এই রায় প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সালাউদ্দিন কাদের প্রিন্স সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলার অভিযোগের প্রক্ষিতে বিভিন্ন স্বাক্ষ-প্রমাণে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে পিতা চোবাহান জোমাদারকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও একইসাথে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড আনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বান্দরবানের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট বাসিংথুয়াই মারমা জানান, ঘটনাটির সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।