ই-অকশনে ‘ই-ভোগান্তি’

চট্টগ্রাম কাস্টমস ।। ২৭ ফেব্রুয়ারি ফের নিলামে ৭৯ লট পণ্য, বিডারদের হতাশা

জাহেদুল কবির | সোমবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে ইঅকশন (অনলাইন নিলাম) নামের ‘ইভোগান্তি’ যেন কাটছেই না। অটোমেশনের অংশ হিসেবে প্রায় তিন বছর আগে ইঅকশন পদ্ধতি চালু করে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সেই সময় কাস্টমসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) ঘরে বসে নিলামে অংশ নিতে পারবেন। আর কাগজপত্র নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। তবে বিডারদের অভিযোগ, অকশন শেষ হওয়ার সাথে সর্বোচ্চ দরদাতা কে হয়েছেন সেটি প্রকাশ করার কথা। কিন্তু এখানে আবার ম্যানুয়াল নিলামের মতো সশরীরে পে অর্ডার জমা দিতে হচ্ছে। এরপর নিলাম কমিটি সভা করে নিলামের অনুমতি দিচ্ছে। গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ইঅকশনে ২৩ লট পণ্যের মধ্যে ৭ লটের বিক্রয় অনুমোদন দেয়া হয়েছে, তাও ৩ মাস পর! এছাড়া সর্বশেষ গত ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ১০৮ পণ্যের নিলামের সর্বোচ্চ দরদাতা কারা হয়েছেন, এটিও জানেন না বিডাররা। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্সসহ ৭৯ লট পণ্য ইঅকশনে তোলা হচ্ছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, বাংলাদেশ কাস্টমস ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)

ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রযোজ্য শর্তপূরণের মাধ্যমে অনলাইনে পণ্যের প্রস্তাবিত মূল্য দাখিল করতে পারছেন বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারীরা)। প্রস্তাবিত মূল্য দাখিল করা যাবে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ।

নিলাম শাখার কর্মকর্তারা জানান, ৭৯ লট এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছেবিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স, পেপার হ্যাং ট্যাগ, প্লাস্টিকের খেলনা, ক্যাট কেইজ, পিভিসি রিবন, পিভিসি রেজিন, মেটাল স্ট্যান্ড পার্টস অব সুইং মেশিন, পলিপ্রোপিলিন, ক্যাটালগ, ফিল্টার মাস্টার ব্যাচ, গার্মেন্টস এঙেসরিজ প্লাস্টিক বাটন, হাইড্রোগার্ড টেপ, ব্লিচিং আর্থ, ফ্লাগ লেবেল, সিরামিক টাইলস, ওডেন পেলেটস, টপ হ্যাংগার, ইঞ্জিন অয়েল, তেঁতুল বিচি, প্রিন্টেড বুক, রিপ্লেটিভ পাইপিং, মোবাইল ফোন কাভার, ওয়াটার পাম্প, এলইডি বাল্ব, টিউব লাইট, রাউন্ড লগ, ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম ও গ্রাউন্ডিং ব্লকস।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ১৬ লট বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিলামে তোলার মাধ্যমে ইঅকশনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ২০ লট পেঁয়াজ নিলামে তোলা হয়। এছাড়া একই বছরের ৩ ও ৪ নভেম্বর কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ লট গাড়ি তোলা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১২ ও ১৩ জুন কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা ১০৮টি গাড়ি পুনরায় নিলামে তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ৭৮ লট কার্নেট গাড়ি নিলামে তোলা হয়। এছাড়া সর্বশেষ গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন ধরনের ২৩ লট পণ্য এবং গত ৩১ ডিসেম্বর ১০৮ লট পণ্য ইঅকশনে তোলা হয়। এরমধ্যে দেড় মাস পেরিয়ে ১০৮ লট পণ্যের এখনো বিক্রয় অনুমোদন হয়নি।

চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির অর্থ সম্পাদক বশির ইকবাল কাদেরী বলেন, অকশনের সামগ্রিক কার্যক্রম নিয়ে আমরা খুবই হতাশ। ইঅকশন মানে হচ্ছে দ্রুত নিলাম। এখানে ম্যানুয়াল নিলামের মতো মাসের পর মাসের সময়ক্ষেপন হচ্ছে। তাহলে ইঅকশন করে লাভ কি। এছাড়া পদ্ধতিগত এখনো সবকিছু ম্যানুয়াল নিলামের মতো হচ্ছে। যার কারণে ইঅকশনের প্রতি বিডারদের অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে। তাই চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে ইঅকশনকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে নিলাম কার্যক্রমকে আরো সহজীকরণ করতে হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফাইজুর রহমান বলেন, নিলাম ছাড়াও আমাদের নিয়মিত ধ্বংসের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। ইঅকশনে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতে পারে। সেগুলো আমরা সমাধানে কাজ করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্যে মাফিয়া চক্র সক্রিয়, দরকার সচেতনতা : হাই কোর্ট
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় যা ঘটছে, তা গণহত্যা : শেখ হাসিনা