সিলেটকে হারিয়ে প্লে অফের পথে তামিমের বরিশাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ

মাত্র তিনদিন হলো নাজমুল হোসেন শান্তকে বাংলাদেশ দলের তিন ফরমেটের অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এবারের বিপিএলে একেবারেই নিষ্প্রভ শান্তর ব্যাট। আর তার দল সিলেট ছিটকে গেছে প্লে অফ রাউন্ড থেকে। তারপরও গতকালের ম্যাচটি শান্তর জণ্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। কারন অন্তত এই ম্যাচ দিয়ে ফর্মে ফেরার প্রত্যাশা করেছিলেন টাইগার অধিনায়ক। এই ম্যাচ ছাড়া বিপিএলে আর দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন শান্ত। তাই শেষ তিন ম্যাচে অন্তত ফর্মে ফিরতে চেয়েছিলেন শান্ত। কিন্তু সেটা হলোনা। গতকাল রানের খাতাও খুলতে পারেনি এই ব্যাটার। তাই শেষ দুই ম্যাচই এখন তার ভরসা শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজের আগে। এই ম্যাচে ব্যর্থ হলেন শান্ত। আর সে সাথে ব্যর্থ তার দলও। নিজেদের নামের পাশে যোগ হলো আরো একটি পরাজয়। ১০ ম্যাচের ৭টিতে হেরেছে সিলেট। ৩ জয়ে ৬ পয়েণ্ট নিয়ে তাদের অবস্থান পয়েন্ট তালিকার ষষ্ঠ স্থানে। গতকাল তামিমের বরিশালের কাছে শান্তর সিলেট হেরেছে ১৮ রানে। আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান তামিমের ব্যাট হাসেনি এই ম্যাচে। তবে মুশফিক তুলেছেন ব্যাটে ঝড়। ক্যারবীয়ান ক্রিকেটার কাইল মায়ার্স দেখিয়েছেন অল রাউন্ড নৈপুণ্য। আর তাতেই প্লে অফের পথে একধাপ এগিয়ে গেল ফরচুন বরিশাল। ১০ ম্যাচে তাদের পয়েণ্ট এখন ১২। অবস্থান পয়েণ্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে।

টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ফরচুন বরিশালের দুই ওপেনার তামিম এবং শেহজাদ ২৩ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি। ১৭ রান করা আহমেদ শেহজাদকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন তানজিম সাকিব। সঙ্গীকে হারিয়ে তামিমও বেশিক্ষণ আর থাকতে পারেননি উইকেটে। সাকিবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে তিনি ফিরেন ১৮ বলে ১৯ রান করে। সৌম্য সরকারও পারেননি ৮ রানের বেশি করতে। ৬৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন চাপে বরিশাল তখন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মুশফিক এবং মায়ার্স। সিলেটের বোলারদের উপর ঝড় বইয়ে দেন এই দুই ব্যাটার। চতুর্থ উইকেটে দুজনের সংযোজন ৩৯ বলে ৮৪ রান। আর তাতেই বড় স্কোরের পথ সুগম হয় বরিশালের। তবে ২ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে পারেননি মায়ার্স। ফিরেছেন ৩১ বলে ৩টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৪৮ রান করে। পরের ওভারে ফিরেন মুশফিকও। তবে তিনি তার হাফ সেঞ্চুরিটা তুলে নেন। ৩২ বলে ৩টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৫২ রান করে ফিরেন মুশফিক। এবারের বিপিএলে এটি তার তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ এসে ৭ বলে ১৫ রান করে দলের স্কোরটাকে আরকেটু বাড়িয়ে দেন। মাহমুদউল্লাহ ১২ বলে ১২ রান করলে বরিশালের স্কোর গিয়ে দাড়ায় ১৮৩ রানে। সিলেটের পক্ষে ৩টি উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই বিধ্বস্ত সিলেট স্ট্রাইকার্স। কাইল মায়ার্সের করা প্রথম ওভারেই ফিরেন ওপেনার হ্যারি টেক্টর এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনেই রানের খাতা খুলতে পারেননি। দেশের তিন ফরমেটের অধিনায়ক শান্তর ব্যাট যেন এবারের বিপিএলে ঘুমিয়েই রয়েছে। এই ম্যাচেও ফর্মে ফেরা হলোনা তার। জোড়া সে ধক্কা না সামলাতেই রান আউট হয়ে ফিরে আসেন জাকির হাসান। এরপর পেসার খালেদ আহমেদের দুটি অসাধারন ক্যাচ। যে দুই ক্যাচে ফিরেন অ্যাঞ্জেলো পেরেরা এবং অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন। পেরেরা ১৯ বলে ১৭ এবং মিথুন ৬ বলে করেন ১০ রান। ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে হারের ক্ষন গননা করছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৫ রান পর রায়ান বার্লকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। হঠাৎ করে মরা গাছে ফুল ফুটানোর মত ম্যাচটাকে জাগিয়ে তুললেন বেনি হাওয়েল এবং আরিফুল হক। হারতে বসা ম্যাচটিকে এক পর্যায়ে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল এ দুজন। দুজন যোগ করেন ১০৮ রান।

হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন দুজনই। কিন্তু এ দুজনের বিদায়ের পর হার নিশ্চিত হয়ে যায় সিলেটের। আরিফুলকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গে ম্যাক কয়। ৩১ বলে ৫৭ রান করেন আরিফুল। তারপরও ম্যাচের আশা জিইয়ে রেখেছিলেন হাওয়েল। কিন্তু সাইফ উদ্দিনের বলে রনে ভঙ্গ দিলেন হাওয়েল। তার ৩২ বলে ৫৩ রানের ইনিংসটি থামান সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত ১৬৫ রানে থামে সিলেট স্ট্রাইকার্স। কাইল মায়ার্স নিয়েছেন ৩ উইকেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় ক্রিকেটে চট্টগ্রামের টানা দ্বিতীয় জয়
পরবর্তী নিবন্ধরোববার মুক্তি পেতে যাচ্ছেন থাইল্যান্ডের সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী