রায়হান নওশাদ। আমার বড় মেয়ের জেঠাতো দেবর। সহোদর না হলেও জামাই বাবাজির সাথে একই মায়ের সন্তানের মত তাদের বেড়ে ওঠা। আশৈশব থেকে গলায় গলায় ভাব। খেলাধুলা, ভ্রমণ কেউ কাকে ফেলে উপভোগ করছে এমন নজির নেই। প্রাণোচ্ছল, সদা হাসি–খুশি এক যুবক রায়হান নওশাদ। যে কাউকে সহজে আপন করে নেওয়ার এক মোহনীয় ক্ষমতা ছিল তার। ছিল পরোপকারী চিন্তা। চট্টগ্রাম পোর্ট সিটি ইন্টার ন্যাশনাল বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণ মাধ্যম বিভাগের ১ম ব্যাচের ছাত্র ছিল নওশাদ। পতেঙ্গাস্থ একটি বিদেশি বায়িং কোম্পানির ওয়াইয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত ছিল সে। গত ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুই হাতের তালুতে মেহেদীর রং মেখে বিয়ের পিঁড়িতে বসলো রায়হান নওশাদ। জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে যথারীতি আকদ সুসম্পন্ন হলো। ‘কবুল’ শব্দ উচ্চারণের মাধ্যমে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হলো দুটি জীবন। বর–কনে উভয় পক্ষে খুশির আমেজ। নবতর জীবনে পদার্পণকারী রায়হানের চোখে রঙিন স্বপ্ন। নব বধূকে নিয়ে ভ্রমণবিলাসী স্বামী প্রথম কোথায় ভ্রমণে বেরুবে? কী উপহার দিবে প্রিয়তমা স্ত্রীকে? কেমন হবে ছোট্ট সংসার জীবন? আকদের ২ দিন পরেই ৪ ফেব্রুয়ারি রোববার একটি মর্মান্তিক বাইক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল নওশাদ এর তরতাজা জীবন। মুহূর্তে খানখান হয়ে গেলো সব রঙিন স্বপ্ন। আমার বড় মেয়ে জানালো, তার শ্বশুর বাড়িতে এখনও চলছে শোকের মাতম। সবাই মানসিক বিপর্যস্ত। স্বজনরা কেউ মেনে নিতে পারছে না এই অকাল অস্বাভাবিক হৃদয় বিদারক মৃত্যু। হে আল্লাহ, প্রিয় রায়হান নওশাদকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান করুন। আমিন।