সৈয়দ মুজতবা আলী : বহুভাষাবিদ ও রম্যসাহিত্যিক

| রবিবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দ মুজতবা আলী (১৯০৪১৯৭৪)। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, অনুবাদক ও রম্যরচয়িতা। তিনি তাঁর ভ্রমণকাহিনির জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয়। বহুভাষাবিদ সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনা একই সঙ্গে পাণ্ডিত্য এবং রম্যবোধে পরিপুষ্ট। সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্ম ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর আসামের করিমগঞ্জে। সিলেটের গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। পিতার বদলির চাকরি হওয়ায় মুজতবা আলীর প্রাথমিক শিক্ষাজীবন কাটে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রথমদিকের ছাত্র। এখানে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি, আরবি, উর্দু, ফার্সি, হিন্দি, গুজরাটি, ফরাসি, জার্মান ও ইতালীয়সহ পনেরোটি ভাষাশিক্ষা লাভ ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে এখান থেকে বি.. ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। অতঃপর দর্শনশাস্ত্র পড়ার জন্য বৃত্তি নিয়ে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে গবেষণার জন্য তিনি ডি.ফিল লাভ করেন ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৩৪১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মিশরে কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীসময়ে তিনি জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষার উদ্দেশ্যে মুজতবা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন, শিখেছেন বহু ভাষা। সেই সাথে নানা জাতির, নানা ভাষাভাষী বিচিত্র সব মানুষের জীবনাচরণ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এইসব অভিজ্ঞতাই তাঁর রচনাবলিতে সর্বাতিশায়ী।

সৈয়দ মুজতবা আলীর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে : ‘দেশে বিদেশে’, ‘চাচাকাহিনি’, ‘পঞ্চতন্ত্র’, ‘ময়ূরকণ্ঠী’, ‘শবনম’, ‘জলেডাঙ্গায়’, ‘তুলনাহীনা’, ‘শহরইয়ার’ প্রভৃতি। মুজতবার কোনো কোনো রচনায় লোকসংস্কৃতির উপাদান খুঁজে পাওয়া যায়। উপন্যাস ‘তুলনাহীনা’ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি নিয়ে রচিত। ভাষাতত্ত্‌ব ও ধর্মতত্ত্বে ছিল তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য। ছিলেন বহুভাষাবিদ প্রায় পনেরোটির মতো ভাষা জানতেন। কর্মজীবনে অধ্যাপনা করেছেন, যুক্ত ছিলেন সরকারিবেসরকারি উচ্চপদস্থ পদে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি কলকাতা থেকে ঢাকা চলে আসেন এবং এখানেই স্থায়ী হন। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধনিরাপদ ক্যাম্পাস চাই