বিশ্ব ইজতেমা শুরুর আগেই ঢল নেমেছে টঙ্গীর তুরাগ তীরে। মূল ময়দানে জায়গা না পেয়ে প্রবেশপথের দুইপাশ ও ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়েছেন অনেকে। আজ শুক্রবার বাদ ফজর বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের কার্যক্রম শুরু হবে। বুধবার থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাবলিগের অনুসারীরা বাস, ট্রাক, ট্রেন ও হেঁটে দলে দলে ইজতেমা ময়দানে আসছেন। তাদের কাঁধে বা পিঠে ঝুলছে ময়দানে অবস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ভারী ব্যাগ মাথায় নিয়েও অনেককে ময়দানে ঢুকতে দেখা গেছে। খবর বিডিনিউজের।
মাঠের ভেতরে নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন তারা। কিন্তু যারা খিত্তায় জায়গা পাচ্ছেন না, তারা আশপাশের সড়কে অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে বয়ান শ্রবণ ও ইবাদতে মশগুল থাকার আয়োজন করছেন। তাদেরই একজন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আব্দুল কুদ্দুস খান; ময়দানের উত্তর পাশে ১০ নম্বর ভবনের (যেখানে টয়লেট রয়েছে) ছাদে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। কুদ্দুস বলেন, বুধবার এসে জেলা খিত্তায় জায়গা না পেয়ে টয়লেট ভবনের ছাদে উঠেছি। এখানে পলিথিন ও ত্রিপল টানিয়ে থাকছি।
সেখানেই কথা হয় একই উপজেলার চলনবিল এলাকার আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে। তিনি ৩২ জনকে নিয়ে ইজতেমা ময়দানে এসে শামিয়ানার নিচে স্থান না পেয়ে একই ছাদে উঠেন বলে জানান। ২২ জনের দলের একজন মুকুল হোসেন বুধবার দুপুরে ইজতেমা ময়দানে এসেছিলেন। মূল মাঠে জায়গা না থাকায় তারও ঠাঁই হয়েছে একই ছাদে।
গতকাল সরজমিনে দেখা যায়, বাদ ফজর থেকে ইজতেমা ময়দানে দেশি–বিদেশি মুরুব্বিরা বয়ান করছেন। মূল ময়দানে কোথাও বসার স্থান নেই। মুসুল্লিরা যে যেখানে স্থান পেয়েছেন, সেখানে বসেই মনোযোগ দিয়ে শুনছেন ঈমান ও আমলের বয়ান।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি। চার দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ। রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। চারদিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে সাদ পন্থীদের দ্বিতীয় পর্ব। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা আসর।