“অ-পুত তরে তো ফাঁসি দি পেলাইবু, তরেতো জেআতা ন দেখখুম”

আজাদী অনলাইন | বুধবার , ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৭:১৭ অপরাহ্ণ

“অ-পুত কিছু হাবি নে? তুরে কিছু টিআ দিই, এডে কিছু খায় লইছ। তুর লো আর দেহা ঐবুনে? অ-পুত তুঅর লাই দুয়ে ভাত আননিলাম, তুই তো না হালি। অপুত ৫ বছর জেলে জেলে দিন গিয়েগই তুর মরা মা বাপের চিআরা নঅ দেখস, অ-পুত তরে তো ফাঁসি দি পেলাইবঅ, তরেতো জিঁয়াতা নঅ দেগখম..”

গত ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের নতুন আদালত ভবনের সামনের উঠানে রাখা পুলিশ প্রিজন ভ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে ভ্যানে থাকা এক বন্দির সাথে চোখে পানি ছেড়ে এভাবে বিভিন্ন হৃদয় বিদারক কথা বলে বলে আকুতি করছিল ৬০ বছরে বয়সি ফাতেমা (ছন্দনাম)” প্রিজন্স ভ্যানের ভিতর থাকা করিমকে (ছন্দনাম) নিরবে কিছু বলছে সে।

জানতে চাইলে ফাতেমা বলেন, পুলিশের প্রিজন ভ্যানে থাকা আসামাটি আমার বড় বোনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের একটি হত্যা মামলায় আজ মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে চট্টগ্রামের এক আদালত। সে ৪ বছর ধরে কারাগারে।

দীর্ঘদিন জেলে থাকায় বউ অন্যত্র চলে গেছে তার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে। কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ২ বছর আগে মারা গেছে তার মা। এর আগে মারা গেছেন বাবাও, তার মা-বাবার জানাজায় অংশগ্রহণ পারেনি করিম (ছন্দনাম)।

তিনি বলেন, আমার ভাগিনাকে আজ আদালতে তুলবে শুনে অল্প ভাত নিয়ে বাসা থেকে হেঁটে হেঁটে সকাল ৮ টায় চলে এসেছি কোর্ট বিল্ডিং এ।

আদালতের সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে সকাল ১১ টার দিকে আদালতে তুলা হয় তাকে। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষনা করে।

এরপর তাকে আদালতের হাজতে নেওয়া হয়। সেখানে দুইটা ভাত দিতে চাইছিলাম, ভাত ভিতর পাঠিয়েছি।কিন্তু সে খায় নাই। তার কি খেতে ইচ্ছা করে তার মৃত্যুদন্ড হয়েছে, তাকে আজ ফাঁসি দিয়ে দেবে নাকি বাবা..

এভাবে প্রশ্ন করে করে কান্নাকাটি করতে করতে আদালতের এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে ছুটাছুটি করছিলেন ফাতেমা। করিম ছোট্টকাল থেকে প্রায় সময় থাকতেন ফাতেমার বাসায়। বড় বোনের ছেলে হিসাবে নয়, নিজের ছেলে মতো বড় করেছেন করিমকে। তার এমন পরনতি কোভাবে মনে নিতে পারছেন ফাতেমা। সবাই তাকে ছেড়ে গেলেও, ভাগিনাকে ছেড়ে চলে যেতে পারেননি ফাতেমা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদোকান কর্মচারীকে চায়ের জন্য পাঠিয়ে ৭ ভরি স্বর্ণ চুরি
পরবর্তী নিবন্ধকাভার্ডভ্যানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে সিএনজি গ্যাস বিক্রি, ২ লাখ টাকা জরিমানা