তাদের কাঁধে ছিল অচল ক্যামেরা, বহনকারী প্রাইভেট কারে লাগানো ছিল সাংবাদিক লেখা স্টিকার। সাংবাদিক পরিচয়ে ওরা তিনজন এসেছিল রাউজানে ইটভাটায় চাঁদাবাজি করতে। শেষ পর্যন্ত ভাটার মালিক, কর্মচারীদের চ্যালেঞ্জের মুখে স্বীকার করেন তারা ইটভাটায় চাঁদা নিতে এসেছেন। এমন ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল ২৪ জানুয়ারি বুধবার।
রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন যাদের আটক করা হয়েছে তারা সাংবাদিক পরিচয়ে তার ওয়ার্ডে থাকা কয়েকটি ইটভাটায় গিয়ে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করার অভিযোগ তুলে ক্যামরা তাক করে ছবি উঠানোর পোজ দেন। পরে ভাটার মালিক, কর্মচারীরা তাদের নিবৃত করে অফিসে বসান। সমঝোতা করার প্রস্তাবে তাদের পরিচয় জানতে চান। তারা কেউ পরিচয় দেয় চ্যানেল সংগ্রামী ৭১, সিটি প্লাস ২৪, মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার নেতা। কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভাটার সাথে সংশ্লিষ্টরা কৌশলে তাদের সাথে আপস রফার প্রস্তাব দিলে তারা নিউজ না করার শর্তে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। এসময় ইটভাটার মালিকরা বিষয়টি জানান স্থানীয় কাউন্সিলর হিসাবে আমাকে। আমি সাংবাদিকদের আমার অফিসে নিয়ে আসতে বলি। জেরার মুখে আটক ব্যক্তিরা সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করলে আমি বিষয়টি জানাই থানা পুলিশকে। পুলিশ এসে তাদের ব্যবহৃত গাড়িসহ তিনজনকে থানায় নিয়ে যায়।
আটক তিনজন হচ্ছেন, দৈনিক গণতদন্তের ব্যুরো চিফ ও ঢাকা প্রেসক্লাবের সদস্য পরিচয়ধারী কর্ণফুলী উপজেলার মৃত নুর হোসেনের ছেলে আহম্মদ নুর (২৮), দৈনিক ঢাকার টাইম ও মানবাধিকার সাংবাদিক কল্যাণ সংস্থার চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি পরিচয়ধারী হাটহাজারী উপজেলার মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে আবুল কালাম (৫২) ও একই উপজেলার ঢাকার টাইম রিপোর্টার পরিচয়ধারী আবদুর রহমানের ছেলে দিদারুল আলম (৩৫)। ইটভাটার মালিক সমিতির নেতা এসএম শাহেদ উল্লাহ জনি বলেন, সম্প্রতি সাংবাদিক পরিচয়ে কতিপয় ব্যক্তি প্রায় প্রতিদিন গাড়িতে স্টিকার লাগিয়ে ইটভাটায় আসা যাওয়া করছে। তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় চাঁদাবাজি করছে। তিনি জানান, সাংবাদিকদের কলংঙ্কিত করতে এসব ভুয়া সাংবাদিকের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে আজ তাদের আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সমিতির পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। রাউজান থানার পরিদর্শক (ওসি) জাহেদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, স্থানীয়রা তিন ভুয়া সাংবাদিককে আটক করে থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে আসে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।