এরই মধ্যে মাঠে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য ১০ প্রার্থী

লিটন কুমার চৌধুরী, সীতাকুণ্ড | বুধবার , ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

দিনক্ষণ ঠিক না হলেও সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এলাকায় বইছে নির্বাচনের হাওয়া। চায়ের আড্ডায় কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জানাচ্ছেন।

সীতাকুণ্ড আসন থেকে এবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আল মামুন। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কেন্দ্রীয়ভাবে নৌকা প্রতীক না থাকলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা তার সস্তুষ্টি লাভের জন্যও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তফসিল ঘোষণার আগেই ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এলাকায় তাদের প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়ে দিচ্ছেন। তীব্র শীত উপেক্ষা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা। শীত ও নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে শীতবস্ত্র বিতরণ। তবে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির কেউ অংশগ্রহণ করবেন নাএ সিদ্ধান্তে এখনো তারা অটল। আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্ভাব্য ১০ প্রার্থী এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন। তাদের মধ্যে আছেন উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন সাবেরী, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আ ম ম দিলসাদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ও যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক জয়নব বিবি জলি, সীতাকুণ্ড মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মনিরুল ইসলাম, বাড়বকুণ্ড ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাদাকাত উল্লা মিয়াজী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম তাজুল ইসলাম নিজামী, বারৈয়াঢালা ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন রেহান, সলিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ ও উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান। তবে তারা সবাই জানিয়েছেন, দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক তারা প্রার্থিতার সিদ্ধান্ত নেবেন। দল যাকে সমর্থন দেবে তার পক্ষেই কাজ করবেন।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন সাবেরী বলেন, আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে দলের জন্য কাজ করেছি। বর্তমানে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং সীতাকুণ্ড কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি হিসেবে কাজ করছি। গত দশ বছর এলাকায় উন্নয়ন কাজে সস্পৃক্ত ছিলাম। এলাকার জনগণের সাথে আমার যোগাযোগ ছিল। তাই দলের কাছে এবার চেয়ারম্যান পদে সমর্থন চাইব।

জেলা পরিষদের সদস্য আ ম ম দিলসাদ বলেন, উপজেলার ৯০টি ওয়ার্ড ও পৌর মেয়র এবং ইউপি চেয়ারম্যানদের ভোটে দুইবার চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। এরপর গত ছয় বছর সীতাকুণ্ডের মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়েনে ভূমিকা রেখেছি। এছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসনে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ছিলাম। এলাকায় সর্বস্তরের ভোটারদের কাছে আমার জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাই দলের কাছে মনোনয়ন চাইব।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। মূল দল থেকে কোনোদিন বিচ্যুত হইনি। দলের মনোনয়ন চাইব।

বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জয়নব বিবি জলি বলেন, আমি ১০ বছর একটানা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে এস এম আল মামুন পদত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়ে দায়িত্ব পালন করছি। বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধি হয়ে ১৫ বছর এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশ মাতৃকাকে স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন দাবি আদায়ের কাজ করেছি। আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে দলীয় সমর্থন চাইব।

বাড়বকুণ্ড ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লা মিয়াজী বলেন, ১০ বছর আমি এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। দলের সাংগঠনিক কাজে সবসময় ছিলাম। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাইব, তবে দলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং শিরোধার্য।

উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সাথে জড়িত। সীতাকুণ্ড ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, সর্বশেষ উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে দায়িত্ব পালন করছি। এখন এলাকার জনগণের জন্য কাজ করতে চাই।

বারৈয়াঢালা ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন রেহান বলেন, আমি এলাকার পরপর তিনবারের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনসংগ্রামে দলের পাশে ছিলাম। আমিও দলের সমর্থন চাইব।

ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম তাজুল ইসলাম নিজামী ও সালাউদ্দিন আজিজ বলেন, আমরা দুইবার ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আমরা দলের কাছে মনোনয়ন চাইব।

উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন বলেন, বড় রাজনৈতিক দল থেকে একাধিক নেতা দলের সমর্থন পেতে আগ্রহ দেখাবেনএটাই স্বাভাবিক। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার নৌকা প্রতীক এবং দলীয় মনোনয়ন থাকবে না। তাই দলের যে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতার ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে এখনও কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকেকটি বেডশিট, পর্দায় বিল করা হয় ১৯ হাজার টাকা
পরবর্তী নিবন্ধ‘শরীফার গল্পের’ উপস্থাপনায় বিভ্রান্তি থাকলে পরিবর্তনের ইঙ্গিত শিক্ষামন্ত্রীর