চকরিয়ার গভীর রাতে চিংড়িঘের দখলের চেষ্টা

ফাঁকা গুলি, অস্ত্রসহ আটক ২

চকরিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়ি জোনের বদরখালীতে প্রায় ৫০ একরের একটি চিংড়ি প্রকল্প দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। প্রায় ১৫ সদস্যের সন্ত্রাসী বাহিনীটি এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। চিংড়িঘেরের কর্মচারীরা দুই সন্ত্রাসীকে একটি লম্বা বন্দুকসহ হাতেনাতে ধরে ফেলে। এই পরিস্থিতিতে আশপাশে অবস্থানকারী সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

পুলিশ ও চিংড়িঘেরের বর্গা চাষির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ইঞ্জিন চালিত বোটে করে এসব সন্ত্রাসী চিংড়ি জোনের বদরখালীর কাঁকড়াখালী ঘোনা নামে চিংড়ি ও লবণ উৎপাদন প্রকল্পটি দখলের চেষ্টা চালায়।

খবর পেয়ে রাতে চিংড়িঘের এলাকায় যায় পুলিশের একটি দল। এ সময় একটি লম্বা বন্দুকসহ দুজনকে সোপর্দ করা হয় পুলিশের কাছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দেহজনক ঘোরাঘুরির সময় আরো দুজনকে আটক করে। আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক দুজন হলেন সাহারবিল ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উমখালীর মৌলভীপাড়ার নুরুচ্ছফার ছেলে ডাকাত আবদুল মাবুদ (৩২) ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব পাড়ার আবদুল আজিজের ছেলে মো. ইমতিয়াজ (২৮)। তবে সন্দেহজনক হওয়ায় অপর দুজনের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। ৫০ একর বিশিষ্ট চিংড়ি ও লবণ উৎপাদন প্রকল্পের মালিক বদরখালী ইউনিয়নের মো. নুরুন্নবী সওদাগর জানান, তিনি বিভিন্নজনের কাছ থেকে বর্গা নিয়ে এই প্রকল্পে চিংড়ি ও লবণ উৎপাদন করে আসছিলেন। ডিসেম্বরের শুরুতে তার প্রকল্পটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করেছিল সন্ত্রাসীরা। ওই সময় সফল না হলেও সর্বশেষ শনিবার রাতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রকল্পটি দখলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে হানা দেয়। এ সময় তার ঘেরের কর্মচারীরা সাহস করে দুজনকে অস্ত্রসহ ধরে ফেলে। এক আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে চিংড়িঘের দখলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে হানা দেওয়ার কথা স্বীকার করে তারা। পরে পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়। অভিযানে যাওয়া চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার প্রামাণিক বলেন, অস্ত্রসহ দুজনকে আটকের পর পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য দেয়। তারা স্বীকারোক্তি দেয়, আওয়ামী লীগ নেতা ছরওয়ারের নির্দেশে দখলের উদ্দেশ্যে ওই চিংড়িঘেরে গিয়েছিল। এ সময় সন্দেহজনক ঘোরাঘুরি করলে আরো দুজনকে আটক করা হয়। তারা সন্ত্রাসী নাকি নিরীহ তা যাচাই করা হচ্ছে। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী আজাদীকে বলেন, দুজনকে অস্ত্রসহ এবং অপর দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী যাদের নির্দেশে তারা চিংড়ি প্রকল্প দখল করতে গিয়েছিল সেই নির্দেশদাতাকেও ছাড় দেওয়া হবে না। এই ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হবে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ছরওয়ার আলমের বক্তব্য নেওয়ার জন্য নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম এফবিসিসিআইয়ের পুঁজিবাজার স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলী মার্কেটের সামনে থেকে সিগারেট চুরির ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার