দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কক্সবাজার ফিশারিঘাটের ব্যবসা–বাণিজ্যে নেমে এসেছিল স্থবিরতা। নির্বাচন শেষ হলেও তিন–চার এর রেশ কাটেনি। তবে সপ্তাহান্তে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ব্যবসায়ীদের পদচারণা বেড়েছে। প্রাণ ফিরেছে চিরচেনা ফিশারিঘাটে। ফিশারিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে ফিরছে মাছ বোঝাই ট্রলার। ট্রলার থেকে অনেক ব্যবসায়ী মাছ কিনে কূলে আনছেন। অনেকেই কূল থেকে মাছ নিয়ে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে তুলছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরাসরি ট্রাক নিয়ে মাছ পাঠাচ্ছেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে ৮ হাজার ইলিশ নিয়ে একটি ট্রলার ঘাটে ফিরেছে।
ট্রলারটির জেলেরা জানান, গত ১৮ দিন তারা সাগরে ছিলেন। টানা ১৬ দিন জাল ফেলে কোনো মাছ পাননি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার দুই বার জাল ফেলে ৮ হাজারেও বেশি ইলিশ ধরতে পেরেছেন। ঘাটে এসে এসব ইলিশ ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়। জেলেরা আরও জানান, এবার তাদের ট্রলারের খরচ ছিল ৬ লাখ টাকা। খরচ বাদ দিয়ে তাদের লাভ হয়েছে ৬ লাখ টাকা। তবে আগে চার বার সাগরে গিয়ে তেমন মাছ না পাওয়ায় প্রত্যেকবারই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে ট্রলারটির মালিককে।
ঘাটে ইলিশ ছাড়াও রূপচাঁদা, ভেটকি, চিংড়ি, পোমা, সুরমা, বাইম, কই কোরালহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ নিয়ে ফিরেছেন একাধিক ট্রলার। তবে এদিন মাইট্টা মাছের পরিমাণ ছিল বেশি। মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, ফিশারিঘাটে টুনা বা সুরমা মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৭০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, গুইজ্জা ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, শাপলা পাতা ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, কৈ কোরাল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, লাল কোরাল ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, সামুদ্রিক পাঙাস মাছ ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখান থেকে পাইকারি দরে মাছ কিনে বিভিন্ন হাট–বাজারে খুচরা বিক্রি করা হয়। তবে ভর মৌসুমেও মাছের দাম বাড়তি। তবুও নিরূপায় হয়ে মাছ কিনতে হচ্ছে।
কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি টুলু বলেন, সাগরে মাছ মিলছে কম। অনেক ট্রলার তিন–চার বার সাগরে গিয়েও মাছ পাচ্ছে না। যার ফলে হতাশ হয়ে ফিরছেন জেলেরা। যাদের ভাগ্য ভাল তারাই মাছ পাচ্ছেন। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে সাগরে আশানুরূপ মাছ মিলবে।