কিডনি রোগী বন্ধুর পাশে স্কুলজীবনের সহপাঠীরা

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৩:৪৮ পূর্বাহ্ণ

কিডনি রোগে আক্রান্ত মোকাররম হোসেন (৩৫) বন্ধুদের কাছে অসুস্থতার ছবি ও ভিডিও পাঠিয়েছিল, যদি কিছুটা সহযোগিতা পাওয়া যায়। তার অবস্থা দেখে সম্মিলিতভাবে সহযোগিতার হাত বাড়ায় স্কুল জীবনের সহপাঠীরা। বন্ধুর বিপদে নিজেদের সামর্থ্য অনুসারে সহযোগিতা করার পর নিজ নিজ আত্মীয়স্বজন কিংবা পরিচিতজনদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন। আর এভাবে এক মাসে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা আদায় করে অসুস্থ বন্ধুর হাতে তুলে দেন সহপাঠীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার মোকাররমের বাসায় গিয়ে সহযোগিতার টাকা হস্তান্তর করেন তার স্কুল জীবনের সহপাঠীরা। সহপাঠী মামুনুর রশীদ বলেন, অসুস্থ মোকাররম হোসেন উপজেলার ভাটিয়ারী হাজী টিএসি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০০৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার বাবা প্রয়াত এসএম গোলাম মোস্তফা ওই বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক ছিলেন। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরে। বাবার চাকরির সুবাদে তারা পরিবার নিয়ে সীতাকুণ্ডে থাকতেন। অসুস্থ মোকাররম দুই ও পাঁচ বছর বয়সী দুই কন্যা শিশুর জনক। তার পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা আনন্দিত।

অসুস্থ মোকাররম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ২০১৮ সালে আমি ও আমার এক সহকর্মী ঢাকায় একটি কাজে যাই। তখন একটি হোটেলে ফিল্টার করা ওয়াসার পানি খেয়েছিলাম। পরে দুজনই জন্ডিসে আক্রান্ত হই। সহকর্মী সেরে উঠলেও আমার সারতে দেরি হয়। এরমধ্যে আমি কিডনি রোগেও আক্রান্ত হয়ে যাই। প্রথমে চট্টগ্রাম, পরে ঢাকায় চিকিৎসা নিই। কোনো সুফল পাচ্ছিলাম না। পরে ভারতের চেন্নাইতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিই। তখন চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন কিডনি পরিবর্তন করতে হবে। আর এজন্য ২০ লাখ টাকা দরকার। আমার কাছে এত টাকা নেই। পরে বন্ধুস্বজনদের কাছে সহযোগিতা চাই। অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছেন। টাকা সংগ্রহ করতে করতে তিন বছর চলে গেল। তিনি বলেন, ২০০৩ সালের এসএসসি ব্যাচের বন্ধুরা পাঁচ লাখ ৩০ হাজার টাকা সহযোগিতা করেছে। এজন্য তিনি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে এখনো তার ৭ লাখ টাকা দরকার। তিনি দয়াবান ও সামর্থ্যবানদের সহযোগিতা চান। দুই সন্তানের জন্য হলেও তিনি আরও কিছুদিন বেঁচে থাকতে চান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুক্তিযোদ্ধা শফিউর রহমান
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশিদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার পরিবর্তন হয়নি : জন কিরবি