কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য খড়ের গাদা

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ

বাংলার কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য খড়ের গাদা (ক্যুইজ্জা)। যা গৃহপালিত পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এক সময় প্রত্যেক কৃষক পরিবারে গৃহপালিত পশু লালন পালন করা হতো। আর গরুর খাবারের জন্য খড়ের গাদা রাখা হতো। সেসময় কৃষকের প্রতিটি ঘরে ঘরে খড়ের গাদা লক্ষ্য করা গেলেও বর্তমানে তেমন চোখে পড়েনা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দেশে গরুর খামারির সংখ্যা বাড়তে থাকায় বর্তমানে অনেক কৃষক পরিবারে গরু পালন করেন না। তারপরও বেশ কিছু কৃষক পরিবারে চাষাবাদের পাশাপাশি লালন পালন করা হয় গরু। এসব পরিবারের উঠানের উচু স্থানে বা রাস্তার পাশে দেখা যায় ঐতিহ্যবাহী খড়ের গাদা। সম্প্রতি সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের শঙ্খনদের তীরে এক কৃষক পরিবার খড়ের গাদা তৈরি করার সময় দেখা যায়, একটি শক্ত গাছ মাটিতে গেড়ে দিয়ে দুই কৃষক খড়ের গাদা তৈরি করছেন। গাছের চারপাশে শুকনো খড়গুলো ঘুরে ঘুরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে। কৃষকদের মধ্যে একজন মাটিতে রাখা খড়গুলো নিয়ে আরেকজন কৃষককে দিচ্ছেন। তিনি খড় গুলো গাছের চারপাশে ঘুরে ঘুরে ছড়িয়েছিড়িয়ে দিচ্ছেন। এভাবে খড় দিতে দিতে উঁচু হয়ে একসময় তা পিরামিডের আকার ধারণ করে। এসময় কৃষক মো. আবুল মনসুর জানান, গৃহপালিত পশু গরুর খাবার হিসেবে মজুদ করে রাখা হয় ধানের শুকনো খড়। বিশেষ করে বর্ষাকালে গৃহপালিত পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন কৃষকরা। শুকনো মৌসুমে গৃহপালিত পশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘাস, ভুষি ও অন্যান্য খবার খাওয়াতে পারলেও বর্ষাকালে গৃহপালিত পশুকে ঘাস কেটে খাওয়ানো অনেক সময় সম্ভব হয়না। তাই কৃষকরা আউশ, আমন, বোরো এই তিন মৌসুমে ধান কেটে ঘরে তুলে এবং পাকা ধান মাড়াইয়ের পর অবশিষ্ট খড়গুলো শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে স্তুপ করে রাখা হয়। যাকে খড়ের গাদা বলে। আবার খামারিরা কৃষকদের কাছ থেকে কানি হিসেবে খড় কিনে নিয়ে যায়। উত্তর কালিয়াইশ এলাকার খামারি মোহাম্মদ আবু জানান, নিজ আঙ্গিনায় খামার গড়ে তুলে ৮টি গরু লালন পালন করছেন তিনি। কাঁচা ঘাস, ভুষির পাশাপাশি গরুর খাবারের জন্য শুকনো খড় অত্যন্ত ভালো। এজন্য প্রতি মৌসুমে পর্যাপ্ত খড় কিনতে হয় এবং খড়ের গাদা তৈরী করে তা স্তুপ করে রাখতে হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই বিজয় গণতন্ত্রের, এই বিজয় জনগণের
পরবর্তী নিবন্ধপ্রস্তুত বীজতলা, চারা রোপণের অপেক্ষা