দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে এবারও বড় জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকের ১২ জন প্রার্থী বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন। নৌকার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় ছিনিয়ে এনে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ঈগল প্রতীকের ২ জন এবং কেটলি প্রতীকের ১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এছাড়া চট্টগ্রাম–৫ হাটহাজারী আসনে এবারও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।
চট্টগ্রামে এবার নতুন মুখের জয় জয়কার। সাত আসনে জয়ী হয়েছেন নতুনরা। তারা হলেন মীরসরাইয়ে মাহবুব উর রহমান রুহেল, ফটিকছড়িতে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, সীতাকুণ্ডে এস এম আল মামুন, চান্দগাঁও–বোয়ালখালীতে আবদুচ ছালাম, পটিয়ায় মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় আবদুল মোতালেব এবং বাঁশখালীতে মুজিবুর রহমান। এছাড়া নতুনদের কাছে হেরে গেলেন বর্তমান তিন এমপি। গতকাল বোরবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ হয়। সন্ধ্যার পর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে থেকে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জেলার ১০ আসনে জয়ী প্রার্থীদের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন। নগরী ও নগরীর সাথে সংশ্লিষ্ট ৬ আসনের রিটার্নিং অফিসার ও বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম জিমনেসিয়াম নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।
তিন আসনে ৩ স্বতন্ত্র জয়ী : তিন আসনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন চট্টগ্রাম–৮ বোয়ালখালী–চান্দগাঁও আসনে কেটলি প্রতীকের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম–১৫ আসনে ঈগল প্রতীকের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব এবং চট্টগ্রাম–১৬ বাঁশখালী আসনে ঈগল প্রতীকের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান। হেরে গেছেন তিন সংসদ সদস্য। তারা হলেন চট্টগ্রাম–১২ পটিয়া আসনে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম–১৫ লোহাগাড়া–সাতকানিয়া আসনের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এবং বাঁশখালী আসনে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। গতকাল নির্বাচন কমিশন থেকে মোস্তাফিজের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। অপরদিকে চট্টগ্রাম–২ ফটিকছড়ি আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীও হেরে গেছেন। যদিও ভোটের দুদিন আগে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম–১ মীরসরাই : এই আসনে ৮৯ হাজার ৬৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৯৯৫ ভোট। জাতীয় পার্টির লাঙলের এমদাদ হোসেন চৌধুরী পেয়েছেন ৪০৮ ভোট, চেয়ার প্রতীকের আবদুল মান্নান পেয়েছেন ২০৫ ভোট, টেলিভিশনের মো. ইউছুফ পেয়েছেন ২০০ ভোট, একতারা প্রতীকের নুরুল করিম আফছার পেয়েছেন ১৯৯ ভোট, হাতপাঞ্জা প্রতীকের জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী পেয়েছেন ৪৬ ভোট।
চট্টগ্রাম–২ ফটিকছড়ি : এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি ১ লাখ ৩৭০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মো. আবু তৈয়ব তরমুজ প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৫৮৭ ভোট। গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলা জহুরুল হক হলরুমে ফল প্রকাশ করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। ফটিকছড়িতে নৌকার প্রার্থীসহ মোট ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের দুদিন আগে সরে দাঁড়ান বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন আহমেদ মাইজভান্ডারী একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১৩৮ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহাজাহান ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ ভোট, হামিদ উল্লাহ মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৫২৫ ভোট, মীর মুহাম্মদ ফেরদৌস চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ৫২৫ ভোট, রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী ফুলকপি প্রতীকে পেয়েছেন ৩১৩ ভোট, মুহাম্মদ শফিউল আলম চৌধুরী লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ২৫৫ ভোট এবং নির্বাচন থেকে সরে যাওয়া নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ফুলের মালা প্রতীকে পেয়েছেন ২৩০ ভোট। ফটিকছড়িতে গতকাল ৮৯ হাজার ৩৫৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। বাতিল হয়েছে ১ হাজার ১৬৭টি।
চট্টগ্রাম–৩ সন্দ্বীপ : সন্দ্বীপ আসনে ৫৪ হাজার ৭৫৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী
বিজয়ী মাহফুজুর রহমান মিতা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন ২৮ হাজার ৭০ ভোট, নুরুল আকতার মশাল প্রতীকে পেয়েছেন ৫৬৬ ভোট, জাতীয় পার্টির এম এ ছালাম লাঙল প্রতীকে ১৩৫ ভোট, মুহাম্মদ উল্যাহ খান মোমবাতি প্রতীকে ২২২ ভোট, মুহাম্মদ নুরুল আনোয়ার হিরন একতারা প্রতীকে ৭০ ভোট, মো. আবদুর রহীম চেয়ার প্রতীকে ১১৭ ভোট, অধ্যক্ষ মোকতাদের আজাদ খান আম প্রতীকে ১৫০ ভোট পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম–৪ সীতাকুণ্ড ও নগর আংশিক : এই আসনের ১২৪টি কেন্দ্রের মধ্যে সব কয়টি কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এস এম আল মামুন ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকে দিদারুল কবির পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৯০ ভোট। ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন মোহাম্মদ ইমরান পেয়েছেন ৪ হাজার ৫শত ভোট। চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. মোজাম্মেল হোসেন পেয়েছেন ১ হাজার ৭২৩, ডাব প্রতীকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. শহীদুল ইসলাম চৌধুরী পেয়েছেন ৩৪২ ভোট, সোনালী আঁশ প্রতীকে তৃণমূল বিএনপির খোকন চৌধুরী পেয়েছেন ৬৭১ ও টেলিভিশন প্রতীকে বিএনএফের মোহাম্মদ আকতার হোসেন পেয়েছেন ২৩৭ ভোট।
চট্টগ্রাম–৫ হাটহাজারী : এই আসনে ৫০ হাজার ৯৭৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী কেটলি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫১ ভোট। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে সৈয়দ মোখতার আহমেদ সিদ্দিকী মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৮৩১ ভোট, মো. নাজিম উদ্দিন সোনালী আঁশ ১ হাজার ৪০১ ভোট, ছৈয়দ হাফেজ আহমেদ চেয়ার প্রতীকে ৬৯১ ভোট, কাজী মহসিন চৌধুরী একতারা প্রতীকে ৮৭২ ভোট, মোহাম্মদ নাছির হায়দার করিম ঈগল প্রতীকে ৪৮০ ভোট এবং আবু মোহাম্মদ শামশুদ্দিন টেলিভিশন প্রতীকে পেয়েছেন ৬৫ ভোট।
চট্টগ্রাম–৬ রাউজান : রাউজান আসনে ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম পেয়েছেন ৩ হাজার ১৫৯ ভোট। এছাড়া জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ সফিক–উল আলম চৌধুরী পেয়েছেন ২ হাজার ৬৫৪ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের স ম জাফর উল্লাহ চেয়ার প্রতীকে ১ হাজার ৯৩৭ ভোট ও সোনালী আঁশ প্রতীকের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. ইয়াহিয়া জিয়া চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ১৪৯ ভোট।
চট্টগ্রাম–৭ রাঙ্গুনিয়া : রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর–খরনদ্বীপ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম–৭ আসনে ১০৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে বেসরকারি ফলাফলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী অ্যাডভোকেট ইকবাল হাছান পেয়েছেন ৯ হাজার ৩০১ ভোট। এছাড়া জাতীয় পার্টির মুছা আহমেদ রানা (লাঙল) ২ হাজার ৩০৮ ভোট, তৃণমূল বিএনপির খোরশেদ আলম (সোনালী আঁশ) ১ হাজার ৩৩১ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্টের আহমদ রেজা (চেয়ার) পেয়েছেন ১ হাজার ৩৯০ ভোট, সুপ্রিম পার্টির মোরশেদ আলম (একতারা) পেয়েছেন ১ হাজার ১৩০ ভোট। এখানে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৩ হাজার ৯১ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৬। ভোট হয়েছে ৬৯.৪৩ শতাংশ।
চট্টগ্রাম–৮ চান্দগাঁও–বোয়ালখালী : এখানে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন কেটলি প্রতীকে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম। তিনি এই আসনে ৭৮ হাজার ২৬৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম ফুলকপি প্রতীকের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরী পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫০০ ভোট। এছাড়া জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের সোলায়মান আলম শেঠ পেয়েছেন ৮ হাজার ২৩৫ ভোট। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আবদুল নবী ৫ হাজার ৯১৩, ইসলামিক ফ্রন্টের সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন ৯৩০, তৃণমূল বিএনপির সন্তোষ শর্মা ২৩৭, বিএনএফের প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদ ১৫৯, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. কামাল পাশা ১২৭, কল্যাণ পার্টির মো. ইলিয়াছ ১০৬ এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহিবুর রহমান বুলবুল ৭০ ভোট পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম–৯ কোতোয়ালী : আসনটিতে বড় ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী সানজিদ রশিদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৯৮২ ভোট। এছাড়া মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ চেয়ার প্রতীক পেয়েছেন ১ হাজার ৯১৪ ভোট, আবু আজম মোমবাতি প্রতীক পেয়েছেন ১ হাজার ৫৩২ ভোট, মিটুল দাশগুপ্ত কুঁড়েঘর প্রতীক পেয়েছেন ৯২৮ ভোট, সুজিত সরকার সোনালী আঁশ প্রতীক পেয়েছেন ৬৭২ ভোট, মোহাম্মদ নূরুল হুসাইন হাতঘড়ি প্রতীক পেয়েছেন ৫৩৭ ভোট।
চট্টগ্রাম–১০ ডবলমুরিং–পাঁচলাইশ : এই আসনে ৫৯ হাজার ২৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু। তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলকপি প্রতীকের প্রার্থী মনজুর আলম পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৫৩৫ ভোট। ফরিদ মাহমুদ কেটলি প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৩৮ ভোট, জহরুল ইসলাম রেজা লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৪২৩ ভোট, আবুল বাশার মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ৫৬৫ ভোট, মিজানুর রহমান একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ২৯৬ ভোট, মুহাম্মদ আলমগীর ইসলাম বঈদী মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ২০৮ ভোট, মো. আনিছুর রহমান মশাল প্রতীকে পেয়েছেন ১৫৯ ভোট এবং মো. ফেরদাউস বশির সোনালী আঁশ প্রতীকে পেয়েছেন ৩৪৭ ভোট।
চট্টগ্রাম–১১ বন্দর–পতেঙ্গা : আসনটিতে ৫১ হাজার ৪৯৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের এম আবদুল লতিফ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেটলি প্রতীকের জিয়াউল হক সুমন পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৫২৫ ভোট। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে আবুল বাশার মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৫১ ভোট, মো. মহিউদ্দিন একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ৩০০ ভোট, দীপক কুমার পালিত সোনালী আঁশে পেয়েছেন ১৬০ ভোট, উজ্জ্বল ভৌমিক উদীয়মান সূর্য প্রতীকে পেয়েছেন ১৪৫ ভোট, নারায়ন রক্ষিত আম প্রতীকে পেয়েছেন ৭৬ ভোট।
চট্টগ্রাম–১২ পটিয়া আসন : আসনটিতে ১ লাখ ২০ হাজার ৩১৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ৩৫ হাজার ২৪০ ভোট।
এছাড়া এম এ মতিন মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ২৯৮ ভোট, এম এয়াকুব আলী নোঙর প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৪৬ ভোট, মোহাম্মদ নুরুচছফা সরকার লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭৮ ভোট, কাজি মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬৫ ভোট, ছৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন জেহাদী ডাব প্রতীকে পেয়েছেন ১৩৩ ভোট, রাজীব চৌধুরী সোনালী আঁশ প্রতীকে পেয়েছেন ১১৩ ভোট এবং মো. ইলিয়াছ ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৭৪ ভোট।
চট্টগ্রাম–১৩ আনোয়ারা–কর্ণফুলী : আসনটিতে টানা চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। গতকাল আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর ১১৮টি ভোটকেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসেন পেয়েছেন ৫ হাজার ১৪১ ভোট। জাতীয় পার্টির (লাঙল) আবদুর রব চৌধুরী টিপু পেয়েছেন ৩ হাজার ৩০৬ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের (চেয়ার) সৈয়দ মুহাম্মদ হামেদ হোসাইন পেয়েছেন ১ হাজার ৬৬৮ ভোট, তৃণমূল বিএনপির (সোনালি আঁশ) মকবুল আহম্মদ চৌধুরী সাদাদ পেয়েছেন ৮৩৭ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (একতারা) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন পেয়েছেন ৬১৩ ভোট আর বাংলাদেশ আন্দোলনের মৌলবি রশিদুল হক বটগাছ পেয়েছেন ৫৫১ ভোট। ভোটের হার ৫৫ দশমিক ২৮শতাংশ।
চট্টগ্রাম–১৪ চন্দনাইশ : এই আসনে ৭১ হাজার ১২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল জব্বার চৌধুরী পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৮৮৪ হাজার ভোট। চন্দনাইশ–সাতকানিয়া আংশিক আসনের ১০০টি ভোট কেন্দ্রের বেসরকারি এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
অপর ৬ প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির আবু জাফর মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ চৌধুরী লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ১৬২ ভোট, মোমবাতি প্রতীক নিয়ে ইসলামী ফ্রটের স.উ.ম আবদুস সামাদ পেয়েছেন ৫ হাজার ২৩১ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ প্রার্থী মো. আবুল হোসাইন চেয়ার প্রতীক পেয়েছেন ১২১ ভোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বিএনএফ প্রার্থী মো. গোলাম ইসহাক খান টেলিভিশন প্রতীকের পেয়েছেন ৬১৩ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মোহাম্মদ আয়ুব একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ১৯৬ ভোট, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারশনের মোহাম্মদ আলী ফারুকী ফুলের মালা প্রতীকে পেয়েছেন ৯৪ ভোট।
চট্টগ্রাম–১৫ লোহাগাড়া–সাতকানিয়া : আসনটিতে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রাথী আবদুল মোতালেব ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৫২ ভোট। এছাড়া মুহাম্মদ আলী হোসাইন মোমবাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬১ ভোট, মুহাম্মদ সোলাইমান কাসেমী হাতঘড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ১৫০ ভোট, মোহাম্মদ ছালেম লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৮০ ভোট, মোহাম্মদ হারুন মিনার প্রতীকে পেয়েছেন ২৯৮ ভোট ও মো. জসিম উদ্দীন ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৮৬ ভোট পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম–৬ বাঁশখালী : আসনটিতে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান ৫৭ হাজার ৪১১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ কবির লিটন পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২০ ভোট। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল করায় নৌকার প্রাপ্ত ভোট ছাড়া অন্যদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়। বাঁশখালীতে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ২২৩ ভোট কাস্ট হয়। এর মধ্যে ৩৬ হাজার ৯৬৮ ভোট বাতিল করা হয়।
অন্য প্রার্থীদের মধ্যে মোমবাতি প্রতীকের বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহিউল আলম চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ১২৫ ভোট, চেয়ার প্রতীকের ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ আবদুল মালেক আশরাফী পেয়েছেন ৫০৩ ভোট, কুঁড়েঘর প্রতীকের ন্যাপের প্রার্থী আশীষ কুমার শীল পেয়েছেন ৩১১ ভোট, বেঞ্চ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. খালেকুজ্জামান পেয়েছেন ২৯৩ ভোট, মিনার প্রতীকের ইসলামী ঐক্যজোট শফকত হোসেন চাটগামী পেয়েছেন ১১৪ ভোট, আম প্রতীকের এনপিপির প্রার্থীর মামুন আবছার চৌধুরী পেয়েছেন ১০৬ ভোট, ডাব প্রতীকের কংগ্রেস প্রার্থী জিল্লুল করিম শরীফি পেয়েছেন ৮৪ ভোট।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, নগরীর ছয়টি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভাগীয় কশিনার। আামি জেলার ১০টি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছি। এ ১০টি আসনে দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোটগ্রহণ কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়নি। এসব আসনে ৪২ দশমিক ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
বাঁশখালীর নৌকার প্রার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি নির্বাচনী আচরণবিধির বেশ কয়েকটি ধারা লঙ্ঘন করেছেন। তাই নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থিতা বাতিল করেছে। তার প্রাপ্ত ভোটগুলো বাতিল হয়েছে। কয়েকটি আসনের কেন্দ্র পরিদর্শনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটাররা উৎসবমুখরভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।
দুই রিটার্নিং অফিসারের কক্ষ থেকে প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফলে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে একটিতেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেননি তৃণমূল বিএনপি, কল্যাণ পার্টি, তরিকত ফেডারেশন, সুপ্রিম পার্টি, ন্যাপ, জাসদ, ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বিএনএফ, এনপিপি, ইসলামী ঐক্যজোট, মুক্তিজোট, গণফোরাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনসহ (বিএনএম) অন্য দলের প্রার্থীরা।