বান্দরবানে লাভজনক শিমের চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবার ভালো ফলনে খুশি চাষিরাও। চাহিদা থাকায় স্থানীয় হাট–বাজারগুলোর চাহিদা মিটিয়ে পাহাড়ে উৎপাদিত শিম যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম’সহ দেশের বিভিন্নঞ্চলে।
কৃষি বিভাগের মতে, চলতি মৌসুমে বান্দরবানের শষ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত সূয়ালক, সুলতানপুর, মাঝেরপাড়া, গোয়ালিখোলা, কদুখোলা, রেইছা, বালাঘাটা, বাঘমারা, রাজবিলা, কুহালং, ডলুপাড়াসহ বিভিন্নস্থানে শীতকালীন সবজি শিমের ভালো ফলন হয়েছে। জেলায় প্রায় ৬শ হেক্টর জমিতে দেশি জাতের শিমের চাষ হয়েছে। এখান থেকেই প্রতিবছর প্রায় সাত হাজার মেট্টিকটন শিম উৎপাদিত হচ্ছে। গড়ে প্রতি হেক্টরে গড়ে ১৫ থেকে ১৪ টন পর্যন্ত শিম উৎপাদন হচ্ছে। গতবছরের তুলনায় এবছর জেলায় শিমের চাষ বেড়েছে একশ হেক্টরের বেশি। স্থানীয় বাজারগুলোতে শিমের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। দামও বেড়েছে গতবছর গুলোর তুলনায় বেশি। স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০/৬০ টাকায়।
সুলতানপুরের শিমচাষি নূর আলম, উসাইনু’সহ কয়েকজন বলেন, শিমের খুবই ভালো ফলন হয়েছে এবছর। পোকার আক্রমণও অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় কম। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে এই অঞ্চলে উৎপাদিত শিম ব্যবসায়ীরা গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। শিম চাষ করে এবার আশানুরুপ ভালো ফলন এবং দাম পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
বাঘমারা পাড়ার শিমচাষি হ্লামেচিং, থোয়াইহ্লামং মারমা বলেন, পাহাড়ে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে চাষিদের বিভিন্ন ধরণের বীজ, সারসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষিবিভাগ। তামাকের পরিবর্তে এখানে অনেকেই শিম চাষ করেছে। ভালো ফলনে লাভবানও হতে পারছে চাষিরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, প্রতিবছরই জেলায় উৎপাদিত শিম চাষিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করি। অন্যবছরের তুলনায় এবার শিমের ফলন ভালো হয়েছে। চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছে। এখানের শিম কিনে চট্টগ্রাম নিয়ে বিক্রি আমারও সংসার চলছে।
বান্দরবান জেলা কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগের উপ–পরিচালক মো. শাহনেওয়াজ বলেন, জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি শিম উৎপাদিত হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় বান্দরবানে শিম চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শীতকালীন সবজির মধ্যে চাষিরা ইদানিং শিম চাষের দিকেই বেশি যুগছে। আগের তুলনায় তামাক চাষের পরিবর্তে জেলায় শীতকালীন সবজি চাষ বেড়েছে। নতুন সবজির কদর থাকায় বাজারে বিক্রি করেও দাম পাচ্ছে চাষিরা।