কোটি টাকার সেতুতে কেউ শুকাচ্ছেন কাপড় আবার কেউ বা গাছের পাতা। অনেককে আবার সেখানে ছাগল চরাতেও দেখা যায়। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে বোয়ালখালী পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় রেলওয়ের ১৩ নম্বর রেল ব্রিজের দক্ষিণ পাশে ছান্দারিয়া খালের উপর নির্মিত সেতুর উপর।
কালুরঘাট–গোমদন্ডী–বেঙ্গুরা–সাকিরাপুল রেল লাইনের পাশ ঘেঁষে পাঁচ কিলোমিটারের সড়কটি সচল করার জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এর একপাশ সড়কের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও অন্য পাশ সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন। ফলে যানবাহন চলাচল দূরে থাক, সেতুটি হেঁটে পার হতে গিয়েও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। অপরদিকে সড়ক না থাকায় সাধারণ জনগণের কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি। দীর্ঘ ১৩ বছরেও সড়ক ও সেতুটি সচল করতে ব্যর্থ হয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ২০০৬–১০ অর্থবছরে ২ কোটি ৫১ লাখ ২৬ হাজার টাকা দিয়ে ৭৩ মিটারের সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব দাশ বলেন, সড়ক সংস্কার না করে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সড়ক সংস্কারের অভাবে ব্যবহার হচ্ছে না এই সেতু। ভুল পরিকল্পনার কারণে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। আরেক বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, সেতুর একদিকে জরাজীর্ণ সড়কটি সংস্কার এবং অপরদিকে সড়ক তৈরি করা হলে সেতু সচলের পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে এবং মূল সড়কে যানজট অনেকটা কমে আসবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুতে গাড়ি চলাচল না করায় একপাশে লাগানো হয়েছে নানারকম সবজির চারা, অপর পাশে হয়েছে বড় বড় গর্ত। একদিকে জরাজীর্ণ সড়ক থাকলেও সেতুর অপরদিকে কোনো সড়কই নেই। ফলে অনেকে জমির আইলের উপর দিয়ে চলাচল করছে। তবে বর্ষা মৌসুমে তাদের দুর্ভোগে বেশি পড়তে হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলার প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ২০১০ সালে সেতুটি তৈরি করা হয়েছে। এটি বোয়ালখালী উপজেলার সাথে কালুরঘাট সেতুর একটি বিকল্প সড়কের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে দোহাজারী–কঙবাজার রেললাইন প্রশস্তকরণের পরিকল্পনা থাকায় এপ্রোচ সড়কটি তৈরি করার জটিলতা রয়ে গেছে। এখন এপ্রোচ সড়কটিতে যদি নতুন করে বরাদ্দ দেয়া যায় তাহলে জনগণ যোগাযোগ ব্যবস্থাটিতে সুফল ভোগ করতে পারবে।