মাদকাসক্তি নির্মূলে আমাদের করণীয়

তরুণ কান্তি বড়ুয়া | সোমবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২৩ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

মাদকাসক্তি মানবজীবনে অভিশাপ তুল্য এক ব্যাধি হয়ে দেখা দিয়েছে। ধনী দরিদ্র, উঁচু নীচু, কিশোর তরুণ, প্রৌঢ় নির্বিশেষে অনেকেই মাদকাসক্তির ভয়াল গহ্বরে ডুবে আছে। মাদকের সর্বগ্রাসী ছোবল সমাজে বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করে যা হতাশা, অসন্তোষ ও অশান্তির জন্ম দেয়। কথায় বলে, মানুষ মদ খায়, তবে মদ যখন মানুষকে খায় তখন মাদকের ভয়াবহ প্রভাব মানুষকে এক অশান্ত পরিবেশে পৌঁছে দেয়। মাদকাসক্তি একসময় মানুষের শারীরিক মানসিক নির্ভরতায় পরিনত হয় যখন মাদক সেবন কোনো ব্যক্তির নেশায় পরিণত হয়। কাজেই নেশা জাতীয় দ্রব্যের উপর মানুষের আকর্ষণ যতই বাড়ে মাদক দ্রব্য গ্রহণের দুর্দমনীয় অভ্যাস ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে। মাদকাসক্তি মানুষের সুষ্ঠু চিন্তা চেতনা থেকে সৃজনশীল মনোযোগ কেড়ে নেয় যা মানুষকে উচ্ছৃঙ্খল জীবনাচারে লিপ্ত হতে বাধ্য করে। যেসব লোক মাদকাসক্ত হয় তারা নেশার টাকা যোগাড় করার জন্য যেকোনো অনৈতিক এবং উচ্ছৃঙ্খল কাজে জড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের জীবনাচার মাদকাসক্ত ব্যক্তিদেরকে হীন মনস্তাত্ত্বিক অস্থির অবস্থায় নিয়ে যায়। এ অস্থির অবস্থায় জীবন যাপন হচ্ছে মাদকাসক্তি।

মাদক দ্রব্যের প্রতি অনিয়ন্ত্রিত আকর্ষণ হচ্ছে মাদকাসক্তি। যেসব দ্রব্যের প্রতি আসক্তি মানুষের জ্ঞানার্জনের স্পৃহা ও স্মৃতিশক্তির স্বাভাবিক অবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করে সেসব দ্রব্যই মাদকদ্রব্য। পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে, যেসব দ্রব্য সেবনে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ঘটায় এবং অধিকন্তু এসব দ্রব্যের প্রতি নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি করে এমন সব দ্রব্যই মাদকদ্রব্য। ক্রমশ এসব দ্রব্যের প্রতি আসক্তি বৃদ্ধির অবস্থাই মাদকাসক্তি। সিগারেট, বিড়ি, তামাক, চুরুট, মদ, তাড়ি, গাঁজা, চরস, ভাং, মারিজুয়ানা, হেরোইন, ফেন্সিডিল, মরফিন, ইয়াবা ইত্যাদি এমন জীবন বিধ্বংসী মাদকদ্রব্য যার প্রভাব সমাজ জীবন, নৈতিক জীবন, ধর্মীয় জীবন ও রাস্ট্রীয় জীবনে মারাত্মক হতাশার সঞ্চার করে। এমন এক সময় আসে যখন মাদকাসক্তি মারাত্মক মানসিক রোগে পরিণত হয়। মানুষ বিভিন্ন কারণে সর্বনাশী মাদকের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। আশেপাশের নেতিবাচক পরিবেশ, মাদকাসক্ত বন্ধুবান্ধবদের সান্নিধ্য, প্রতিবেশীর মাদকাসক্ত পরিবেশ, মাদক দ্রব্যের সহজলভ্যতা ইত্যাদি কারণে মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে উঠে। প্রিয়জনদের অবজ্ঞা, অবহেলা, নি:সঙ্গতা অনেকের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলে। আর এ ধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে কিছু মানুষ নতুন কোনো পথ খুঁজতে থাকে। সহজলভ্যতার কারণে মাদকই তখন অনেকের কাছে হয়ে উঠে সাময়িক স্বস্তির প্রলয়ঙ্করী অবলম্বন। মাদকাসক্তরা মনে করে মাদক সেবন তাদের মাঝে এক ধরনের স্বাভাবিক ভাল লাগা তৈরি করে কিংবা মাদকের প্রভাব তাদের মনে মানসিক চাপ, বিষন্নতা কাটিয়ে সাময়িক স্বস্তিবোধ ফিরে পেতে সাহায্য করে। এভাবেই হাজার হাজার কিশোর কিশোরীসহ নানান বয়সের মানুষ জড়িয়ে পড়ে মাদকের দুর্ভেদ্য জালে। এসব মাদকাসক্ত লোকেরা মাদক নিতে নিতে এমন এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়, যেখান থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পথ তারা খুঁজে পায়না।

মাদকের অপ্রতিরোধ্য বিষাক্ত ছোবল তরুণ প্রজন্মকে গ্রাস করার অন্যতম প্রধান কারণ মাদকের ব্যাপক সরবরাহ। আমাদের দেশে দেশি বিদেশি মাদকদ্রব্য অতি সহজেই আমাদের চারপাশে খুঁজে পাওয়া যায়। তাই উপার্জনক্ষম মানুষের পাশাপাশি বেকার যুবক ও শিক্ষার্থীরা ক্রমান্বয়ে মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে উঠে। তরুণদের মধ্যে মাদকাসক্ত হওয়ার প্রবনতা খুব বেশি লক্ষ্যণীয়। নিছক আনন্দ ও কৌতূহল বশত কম বয়সী কিশোর কিশোরীরা প্রথমে অল্প অল্প করে মাদক সেবন শুরু করে। পরবর্তীতে নিজেদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অত্যধিক মাদকাসক্ত হয়ে উঠে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে মনে রাখতে হবে যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি খুঁজতে মাদক সেবন কখনোই সমাধান হতে পারে না। কোনো সমস্যার প্রতিকারের স্বার্থে এই প্রাণঘাতী মাদক ব্যবহারের অভ্যাস বর্জন করা উচিৎ।

পপি গাছের ফুল থেকে আফিম বানানো হয়। ব্যথা কমিয়ে আনন্দময় অনুভূতি তৈরি করার ক্ষেত্রে আফিমের ব্যবহার হয়ে আসছে খ্রীস্টপূর্ব ৩০০০ খ্রিস্টাব্দ হতে। ঊনিশ শতাব্দীতে এই আফিম থেকে আবিস্কৃত হয় মরফিন । ১৯৮০ ৯০ এর দশকে আমাদের দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো ব্যথানাশক হিসেবে এই মরফিন জাতীয় ওষুধের ব্যাপক ব্যবহার শুরু করে। নেশা জাতীয় এসব ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব না দেওয়ায় হাজার হাজার মানুষ এর মাদকতার কবলে পড়ে। বর্তমানে বাংলাদেশে শিশু কিশোরদের মাঝে মাদকাসক্তির প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একটা জরিপে দেখা যায় ৭১১ বছর বয়সী ১০০০ জনের মধ্যে ২ জন মাদকসেবি। এ বয়সে শিশু কিশোরদের মাদক সেবনে আসক্তি বৃদ্ধির কারণ হিসাবে প্রধানত দায়ী থাকে তাদের পরিবার এবং সামাজিক পরিবেশ। বেশির ভাগ বস্তি এলাকায় শিশুদেরকে মাদকাসক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে দেখা যায়। অনেকসময় এসব শিশু কিশোরদের ব্যবহার করা হয় মাদক চোরাচালানসহ নানান অপরাধমূলক কাজে। বাংলাদেশে মাদকাসক্তদের মাঝে ৩৭ ভাগ শিশু আর বৃদ্ধ, ৬৩ ভাগই তরুণ ও কিশোর কিশোরী।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বন্ধুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ৫৯.২৭ শতাংশ তরুণ তরুণী, যুবক যুবতী মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। আর ৩৬.৩৬ শতাংশ যুব সমাজ কৌতুহল বশত মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছে। সমাজের ১৫৩০ বছর বয়সীদের মাদকাসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের ২০২১ খ্রিস্টাব্দের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১৬৪০ বছর বয়সীদের প্রায় ৮৪.২৭ মাদকাসক্ত। এই বয়স সীমার মধ্যে ২১২৫ বছর বয়সী যুবকরা রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। ১৬২০ এবং ২৬৩০ বছর বয়সীরা মধ্য ঝুঁকিতে এবং ৩১৩৫ বছর বয়সীরা রয়েছে স্বল্প ঝুঁকিতে। একটি বেসরকারি ও রাস্ট্রীয় পরিসংখ্যান মতে বাংলাদেশে প্রায় ৭.৫ থেকে ৮ মিলিয়ন মাদকাসক্ত রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার মতে এ সংখ্যা প্রায় ২ কোটির কাছাকাছি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদের মধ্যে ৮০ শতাংশ যুবক যুবতী, ৪৩ শতাংশ বেকার, ৬০ শতাংশ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত, ৪৮ শতাংশ শিক্ষিত, ৪০ শতাংশ অশিক্ষিত এবং ৫৭ শতাংশ যৌন অপরাধী। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো মাদকসেবিদের ৮০শতাংশ যুবক।

মাদক সেবনকারী ব্যক্তিরা কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, স্ট্রোক বা মস্তিষ্ক রক্তপাত, ফুসফুস ক্যান্সার, মুখে ক্যান্সার এমনকি এইচআইভি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। মাদকের প্রতিক্রিয়ায় মহিলাদের গর্ভাবস্থায় সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। যার ফলে সন্তান অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে। মদ্যপান করা চালকের গাড়ি চালানোর ফলে প্রতিবছর গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে অধিক মাত্রায়। কাজেই মদ্যপ অবস্থায় চালকদের একেবারেই গাড়ি চালানো উচিত নয়। আসলে মাদকের ভয়াবহতা মারাত্মক বিধায় মাদক সেবীর আশেপাশে থাকা মানুষও মাদক সৃষ্ট অসুস্থতা থেকে রেহাই পায়না। ধূমপায়ী ব্যক্তির উদগীরণ করা ধোঁয়ায় অধূমপায়ীরাও পেসিভ স্মোকিং এর শিকারে পরিণত হয়। যার ফলে মানুষ বিশেষ করে শিশুরা ব্রঙ্কাটিস, এজমা এবং নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে।

মাদকাসক্তদের অনেকেই চুরি, ছিনতাইসহ অনেক অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি মাদকের টাকা না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ, এমনকি মারধরও করে থাকে। মাদক পেলে কিছুটা শান্ত থাকলেও ঘরের পরিবেশ সবসময়ই ঘোলাটে করে রাখে। আর মাদক না পেলে এটা ওটা ভাঙচুর করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এসব মাদকাসক্ত লোক সার্বক্ষণিক স্ত্রী সন্তান,পিতামাতার মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাদকাসক্তরা পিতামাতা, ভাইবোন, স্ত্রী পুত্র ও অন্যান্য সদস্যদের মানসিক শান্তি কেড়ে নেয়। মাদকাসক্তদের কারণে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সামাজিক ভাবে অপদস্ত হতে হয়। মাদকাসক্ত স্বামী স্ত্রীর বচসা, কলহের কারণে অনেকের দাম্পত্য জীবন অশান্ত হয়ে উঠে যার পরিনতিতে সুখের সংসার ভেঙে যায়।

মাদকাসক্তি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা, মানবতার মাতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন। মাদক নির্মূলে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ৪ মে সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হয়। ওই সময় দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ছিল ৩০ থেকে ৩৫ লাখ। এদিকে দেশে ক্রমাগত মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্ক্ষাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিনদিন দেশে মাদকের চাহিদা বেড়েই চলেছে। সাথে মাদকের অধিক, অবাধ সরবরাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বৈধভাবে দেশে মাদক উৎপাদনের কোনো সুযোগ না থাকলেও বিমান, স্থল, নৌপথে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ মাদক দেশে প্রবেশ করছে। এসবের সরবরাহ ও বাজার সৃষ্টিতে সহযোগিতা করে চলেছে মাদক সম্রাট নামে পরিচিত অভ্যন্তরীণ চোরাচালানকারী দলগুলো। মাদক পাচারে ব্যবহৃত হচ্ছে নিম্ন আয়ের পুরুষ, নারী ও শিশুরা। প্রাইভেট কার, ফলের ঝুরি, সবজিবাহী ট্রাক, লঞ্চের পাটাতনের নীচে রেখে অভিনব কায়দায় দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নির্দ্বিধায় মাদক পাচার হয়ে থাকে। এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে মানবদেহের পাকস্থলীতে করে অনেকেই মাদক পাচার করে থাকে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি মতে মাদক নিয়ন্ত্রণে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই ১০ লক্ষাধিক মাদকসেবি রয়েছে। অনেকের মতে এ সংখ্যা আরো বেশি হবে।

মাদকদ্রব্য সেবন রোধ করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার নজরদারি ও তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে। দেশের সচেতন জনগণকে সরকার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণ করে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি ভাবে অধিক সংখ্যক মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে। আসলে কিন্তু মাদকসেবন এক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এটিকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে মাদকদ্রব্য পাচার ও ব্যবহার কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এজন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে অধিক শক্তিশালী করার ব্যাপারে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় মাদকাসক্তির ভয়াল গ্রাস জাতিকে এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিবে। মাদকের দুর্বিনীত থাবায় সুন্দর প্রজন্ম আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মাদকসেবন সমাজের জন্য মারাত্মক এক বিষফোঁড়া। এই বিষফোঁড়া শিখরসহ উপড়ে ফেলতে সবার সহযোগিতা ও সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

লেখক : শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক; প্রাক্তন অধ্যক্ষ, রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচির অম্লান থাকুক তাঁর হাসিমাখা মুখ
পরবর্তী নিবন্ধবহমান সময়