সাতকানিয়ায় মাদক বিক্রেতাদের ছুরিকাঘাতে নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. শাহাদাত হোসেনের ঘরে এসেছে নতুন অতিথি। গতকাল রোববার তার স্ত্রী আরজুমনি মদিনা জন্ম দিয়েছেন ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের। কিন্তু সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারলেন না শাহাদাত। দেখার সুযোগও পাবেন না কোন দিন। মেয়েকে কোলে নিয়ে কপালে চুমু খাওয়ার সুযোগ হলো না তার। এর আগেই মাদক বিক্রেতা তারেক ও তার সহযোগীদের ছুরিকাঘাত কেড়ে নিল তার জীবন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সাতকানিয়ার ছদাহা ইউনিয়নের মিঠাদীঘি এলাকায় মাদক বিক্রেতাদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন ছদাহা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. শাহাদাত হোসেন। শাহাদাত ছদাহা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের রোয়াজির পাড়ার মৃত মো. ইউনুছের পুত্র।
এদিকে, গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীরর একটি হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন নিহত শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী। এটি তাদের তৃতীয় কন্যা সন্তান। শাহাদাত নিহত হওয়ার পাঁচ দিন পর তার স্ত্রী আরজুমনি মদিনার সন্তান প্রসবের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নবজাতকের বাবা হারানোর কষ্ট নতুন ভাবে সবার হৃদয় স্পর্শ করেছে। সন্তানকে যাবতীয় প্রতিকূলতায় পরম মমতায় আগলে রাখেন বাবা। বাবা মানে বটবৃক্ষের ছায়া, বাবা মানে তপ্ত রোদে একখণ্ড মেঘ। আর এই নবজাতক দুনিয়াতে আসার আগেই হারিয়ে ফেলেছে নির্ভরতার প্রতীক বাবাকে। কোন দিন বাবা ডাকার সুযোগ পাবে না এই শিশু। পাবে না বাবার আদর–স্নেহ। মাদক বিক্রেতাদের ধারালো ছুরি জন্মের আগেই কেড়ে নিয়েছে বাবার সব ভালবাসা।
নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. শাহাদাতের শাশুড়ি মরিয়ম বেগম জানান, শাহাদাত বেঁচে থাকলে আরজুমনিকে নিয়ে (শাহাদাতের স্ত্রী) হাসপতালে আসতো। মেয়েকে কোলে নিয়ে আদর করতো। ভাগ্যের কি নির্মাম পরিহাস, আজ শাহাদাত নেই। তাকে বেঁচে থাকতে দিল না। মাদক বিক্রেতাদের ছুরিকাঘাত কেড়ে নিয়েছে শাহাদাতের জীবন।
তিনি আরো জানান, শাহাদাতের বড় স্বপ্ন ছিল মেয়েদেরকে কোরআনে হাফেজা বানাবেন। আপনারা সকলে দোয়া করবেন আমার নাতনিদেরকে কোরআনে হাফেজা বানিয়ে যেন শাহাদাতের স্বপ্ন পুরণ করতে পারি।