ইয়াসমিন জেসমিন ও নাজমুল সম্পর্কে সহোদর ভাই-বোন। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার চিকিৎসার খরচ যোগাতে সড়কে ভাসমান চায়ের ব্যবসা করে তারা।
ইয়াসমিনের বয়স দশের গন্ডি পেরিয়ে ১১ হলেও জেসমিন এখনও দশে। নাজমুলের বয়সটাতো বড্ড কম, মাত্র ৬ বছর। এই বয়সেই এখন পরিবারের হর্তাকর্তা তারা।
যে বয়সে বাবা মায়ের আদর মমতায় বেড়ে উঠার কথা ছিল তাদের, সে বয়সেই এখন বাবা-মায়ের ভরনপোষণের খরচ যোগাতে হয়। শুধু তাই না! সারাদিনের ব্যবসার লাভের একটি অংশ খরচ করতে হয় অসুস্থ বাবার চিকিৎসার জন্য।
গল্পটা যেন রীতিমতো হৃদয়বিদারক। ছবিটি শুক্রবার নগরীর আগ্রাবাদ সাউথল্যান্ড মার্কেটের বিপরীত সড়কের।
জানা যায়, দুই বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মেরুদন্ডের হাড্ডি ভেঙ্গে যায় বাবার। সেই থেকে কোন কাজ করতে পারেন না তিনি।
এদিকে মা কিছুদিন বাসাবাড়িতে জিয়ের কাজ আবার কিছুদিন গার্মেন্টসে কাজ করলেও এখন শারীরিক অসুস্থ সেও। ফলে একুল ওকুল কিছুই না ভেবে সংসারের হাল ধরতে সড়কে নেমে পড়ে এই তিন ভাইবোন। জেসমিন ইয়াসমিন দুই বছর ধরে এভাবে পায়ে হেটে ঘুরে ঘুরে ব্যবসা করলেও ৬ বছরের নাজমুল ব্যবসা করছে মাত্র ৬ মাস।
অবাক করা বিষয় হলো, চায়ের ফ্লাক্স নিয়ে প্রতিদিন প্রায় দশ কিলোমিটার চষে বেড়াতে হয় তাদের। চায়ের ফ্লাক্সের ওজন আর নাজমুলের ওজন প্রায় একই হলেও চোখেমুখে যেন স্বপ্ন ছোঁয়ার ইচ্ছা। যেভাবেই হোক বাবাকে সুস্থ করে তুলতে চায় এই সংগ্রামী কিশোর কিশোরী ভাইবোনরা।
প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার টাকার চা বিক্রি করে তারা। রঙ চা বিক্রি করে গড়ে প্রতিদিন আয় হয় তাদের তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা। আর এই টাকা দিয়েই চলে তাদের সংসার।
ইয়াসমিন ও জেসমিন আকমল আলীর যুগান্তর স্কুলে ৪র্থ শ্রেনীতে পড়লেও স্কুলে যাওয়ার ভাগ্য হয়নি ভাই নাজমুলের। বাবা মাসহ ৫ সদস্যের পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকে তারা নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলীতে।
প্রতিবেদনটি দেখে মায়া লাগবে সবার, এগিয়ে আসবেন সবাই। পাশে দাঁড়াবেন এই ছোট্ট তিন ভাই-বোনের আর এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।