ভাষার শক্তি দেখে বিস্মিত হই

দীপান্বিতা চৌধুরী | সোমবার , ২০ নভেম্বর, ২০২৩ at ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ

ভাষার শক্তি দেখে বিস্মিত হই। সাধ হয় পৃথিবীর সব ভাষায় বলা ভালোবাসার কথাগুলো শুনি। ‘মনামি শব্দটা প্রথম পড়েছিলাম বুদ্ধদেব বসুর লেখায়। শব্দ ব্যবচ্ছেদ তখন একটা একান্ত খেলা ছিল আমার। ভেঙেছিলাম, ‘মন আমি’, ‘মন আমার’, ‘আমাদের মন’। নৈকট্য রসে জারিত হলে আমার আর আমার বন্ধুর দুটি মন ‘আমাদের’ হয়ে যায়। ধরা যাক হ্যারি বেলাফন্টে যখন গেয়ে ওঠেন ‘স্কিন টু স্কিন’; তখন এই গান আর বাংলায় বুঝা চলে না। অনুবাদে ঝপ করে নিবেদনের সকল মাধুর্য হারিয়ে যায়। কিংবা হুমায়ুন আজাদের ওই প্রাপ্তবয়স্ক সাহসী কবিতাটা– ‘! ! , হ্‌, এইখানে, প্রিয়! এইখানে রাখো জিভদেব’ এর কি কোনও অনুবাদ হয়? অথবা রফিক আজাদ যখন লেখেন, ‘কিসের বিরোধ কিসের দ্রোহ শয্যাপরিপাটি পুরুষনারীর মিলনই সব মিলনটুকুই খাঁটি’

এই মিলনকে তো আর লিখে বুঝানো যায় না।

রবার্ট ফ্রস্টের … ‘And miles to go before I sleep’ একজন অনুবাদ করেছিলেন ‘শয়নের আগে বহু মাইল যাবো তারপর হবো থির’কিন্তু আমার মন ভরে নি। বাংলা যারা জানে না, বাঙালি নারীর প্রেমে যারা পড়েনি, বাংলার রূপ যারা দেখেনি, বাংলার গান যারা শোনেনি তাদের কাছে এই রস অধরাই থেকে যাবে। তেমনি বাঙালির কাছেও অধরা থেকে যাবে এই পৃথিবীর নানান প্রান্তের নানান মাধুর্য। এক জীবনে সব হয় না। তাই বলে হাত পা ছেড়ে দেওয়াও কাজের কথা নয়। যে টুকু হয় বা হতে পারে, সে টুকুই পুরোপুরি হওয়ানো দরকার। তবেই না যাপিত জীবন উদযাপিত হতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহৈমন্তিক বিকেলে
পরবর্তী নিবন্ধষাট দশকের ছাত্র-আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ