বৈরী আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় আজ রোববার থেকে ফের সাগরে মাছ ধরা শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের ট্রলারগুলোর জেলেরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছেন। গভীর বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টির কারণে গত বৃহস্পতিবার আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা সংকেত জারির পর ট্রলারগুলো মাছ ধরা বন্ধ করে ঘাটে ফিরে আসে।
শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার উপকূল অতিক্রমের পর সাগরের আবহাওয়া ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসলে শনিবার সকালে আবহাওয়া দপ্তর সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর সকল সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার করে। তবে গতকাল কোন ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে যায়নি বলে জানান জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। একই তথ্য জানান দরিয়ানগর বোট মালিক সমিতির সভাপতি নজির আলম।
জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, আজ রোববার থেকে মাছ ধরা ট্রলারগুলো সাগরে যাওয়া–আসা শুরু করবে। এখনও পর্যন্ত (গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত) সকল ধরনের নৌ–যান ঘাটে রয়েছে। কক্সবাজারের ফিশিং ট্রলার মালিকরা জানান, কক্সবাজারে ছোট বড় ৭ সহস্রাধিক যান্ত্রিক বোট রয়েছে। এরমধ্যে বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। এই বোটগুলো বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরে। এরমধ্যে ইলিশ জাল বা ভাসা জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। এছাড়া ফইল্যা জালের বোটগুলো ৫/৬ দিনের রসদ নিয়ে মাছ ধরতে যায়। তবে চাউপ্পা জাল, ডোবা জাল, চামিলা জাল ও চোখফোলা জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে যায় এবং মাছ ধরে দিনে দিনেই ফিরে আসে। এই ধরনের জালের বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়। বোটগুলোতে একেক মৌসুমে একেক প্রজাতির মাছ বেশি ধরা পড়ে। শনিবার দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগেরদিনের মতো সাগরের কোন গর্জন নেই। উত্তাল ঢেউগুলো আগের মতোই স্বাভাবিকভাবে আঁচড়ে পড়ছে। সাগরের আবহাওয়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। গতকাল প্রায় সারাদিন কক্সবাজারে ছিল রোদেলা আকাশ। কোথাও কোনো বৃষ্টি হয়নি। জীবনযাত্রাও প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। মেরিন ড্রাইভে গাছ পড়ে ব্যাহত বৈদ্যুতিক লাইন শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মেরামতের পর চালু করা হয়েছে।












