১২-১৪টি হ্যান্ডেল ক্লিপ ও নাট বল্টু খোলা যে কারণে

কক্সবাজার রেললাইনের সাতকানিয়া অংশ

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ

উদ্বোধনের পরের দিনই দোহাজারীকক্সবাজার রেললাইনের সাতকানিয়ার কিছু অংশে হ্যান্ডেল ক্লিপ ও নাটবল্টু খোলা অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে চুরি এবং নাশকতার আশঙ্কার কথা বলা হয়। তবে রেলওয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ভিন্ন কথা।

গত রোববার রাতে রেললাইনের সাতকানিয়ার কালিয়াইশ রক্ষিত বাড়ি ও কালী মন্দির এলাকায় নবনির্মিত রেললাইনের কিছু অংশে ক্লিপ ও নাটবল্টু খোলা অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও রেলওয়েকে জানান। খবর পেয়ে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস ও সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এখন সবার মনে প্রশ্ন, এটা কি নাশকতার চেষ্টা নাকি মাদকাসক্তদের চুরি?

এ ব্যাপারে দোহাজারীকঙবাজার রেললাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, সাতকানিয়ার যে এলাকায় বন্যার পানিতে রেললাইন ডুবে গিয়েছিল সেখানে তিনটি ব্রিজকালভার্ট করছি। এই এলাকায় সকালে আমাদের লোকজন কিছু হ্যান্ডেল ক্লিপ ও হ্যান্ডেল ক্লিপের নাটবল্টু খুলেছিল। আমাদেরকে অল্প সময়ের মধ্যে ব্রিজকালভার্টের কাজ শেষ করতে হবে। কারণ ডিসেম্বরের এক তারিখ থেকে ট্রেন চালানোর টার্গেট আছে। আমাদের লোকজন যে এলাকা থেকে নাটবল্টু খুলেছে সেটা দেখে হয়ত স্থানীয়রা ভেবেছেন অন্য কেউ খুলে নিয়ে গেছে। স্থানীয় ইউএনও সাহেবও একটা বক্তব্য দিয়েছেন বলে শুনেছি। আমি কাল (আজ) সকালে সাতকানিয়া থেকে চকরিয়া পর্যন্ত রেললাইন পরির্দশন করব। তখন বুঝতে পারব আসল ঘটনা কী।

দোহাজারীকঙবাজার রেললাইনের উক্ত এলাকায় দায়িত্বরত উপজেলার বিশেষ আনসার সদস্য মো. ইউসুফ বলেন, ঘটনার দিন রাত ১২টার দিকে হঠাৎ রেললাইনে শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করার শব্দ শুনতে পাই। তখন আমি কালীমন্দির এলাকায় যাই। এ সময় ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি হাতে নিয়ে ৫৬ জন লোককে রেললাইনের পূর্ব পাশের বিলের দিকে চলে যেতে দেখি। পরে দেখতে পাই রেললাইনের একাধিক স্থানে হ্যান্ডেল ক্লিপ ও ক্লিপের নাটবল্টু নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, রেলের হ্যান্ডেল ক্লিপ খুলে নেওয়ার বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ সময় কয়েকটি হ্যান্ডেল ক্লিপ না থাকার বিষয়টি দেখেছি। সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা জানিয়েছেন, কয়েকজন লোককে রেললাইন থেকে হাতুড়িসহ নানা সরাঞ্জম নিয়ে চলে যেতে দেখেছেন। এ ব্যাপারে আমি রেললাইনের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা মঙ্গলবার পুরো রেললাইন পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন।

দোহাজারী রেল কার্যালয়ের স্টেশন মাস্টার ইকবাল হোসেন চৌধুরী জানান, রেললাইনের সাতকানিয়া অংশের কালিয়াইশের রক্ষিত বাড়ি ও কালীমন্দির এলাকায় হ্যান্ডেল ক্লিপ ও ক্লিপের নাটবল্টু খুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে জানানো হয়েছে।

সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত বলেন, কালিয়াইশ এলাকায় রেললাইনের হ্যান্ডেল ক্লিপ ও নাটবল্টু খুলে নেওয়ার বিষয়টি শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এটা নাশকতার চেষ্টা নাকি মাদকাসক্তরা চুরি করেছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ কাজ শুরু করে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার দোহাজারীকঙবাজার রেললাইন উদ্বোধন করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুণ্ডুহীন দল বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধসংলাপ : তিন দলের সঙ্গে বসতে চান পিটার হাস