প্রস্তাবিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি চকরিয়ায় স্থাপনের দাবি

মাতামুহুরী উপজেলা বাস্তবায়নের আহ্বান

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া | শনিবার , ১১ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ার উপকূলীয় সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে নতুন ‘মাতামুহুরী উপজেলা’ বাস্তবায়ন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ডুলাহাজারায় কক্সবাজারের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চকরিয়ার সর্বস্তরের মানুষ। আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার আগমনকে ঘিরে এই দাবি জানিয়ে ব্যানারফেস্টুনে আচ্ছাদিত এখন চকরিয়ার পুরো এলাকা। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই দুই দাবিতে সরব এখানকার মানুষ।

চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ জানায়, কক্সবাজার১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম ২০১৮ সালের তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলেন নির্বাচিত হলে চকরিয়ার উপকূলীয় ৭ ইউনিয়ন যথাক্রমে সাহারবিল, পশ্চিম বড় ভেওলা, পূর্ব বড় ভেওলা, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া, বিএমচর ও বদরখালীর সমন্বয়ে আলাদা একটি ‘মাতামুহুরী উপজেলা’ প্রতিষ্ঠা করবেন। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণসহ মাতামুহুরী স্বতন্ত্র উপজেলার বাসিন্দা হিসেবে এই অঞ্চলের মানুষ সকল ধরনের সুযোগসুবিধা ভোগ করবেন। এই সংক্রান্ত দাপ্তরিক সকল কার্যাদি সম্পন্ন করা হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে মাতামুহুরী উপজেলা বাস্তবায়ন ফাইলটি লাল ফিতায় বন্দি হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় মানুষ হতাশ। তবে সামনের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে সেই দাবির বাস্তবায়ন চান অপেক্ষায় থাকা উপকূলীয় সাত ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ। এই বিষয়ে সংসদ সদস্য জাফর আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী নতুন মাতামুহুরী উপজেলা বাস্তবায়নের চূড়ান্ত প্রস্তাব ফাইলটি জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে দুইবছর আগেই। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সেই ফাইলটি আর নড়েনি। এতে আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ হতাশ হয়েছেন। তাই আমি আশা করছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই দাবি বাস্তবায়ন করবেন আগামীবার সরকার গঠন করলে।

মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা দৈনিক আজাদীকে বলেন, উপকূলীয় সাত ইউনিয়নের মানুষের জন্য আলাদা একটি স্বতন্ত্র উপজেলা বাস্তবায়ন অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটি না হওয়ায় এই অঞ্চলের প্রায় তিন লাখ মানুষকে সরকারি নানা সেবাগ্রহণ করতে যেতে হচ্ছে অনেক দূরের চকরিয়া পৌরসদরে। এতে সার্বিকভাবে এখানকার মানুষ যথাসময়ে অনেক সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।

এদিকে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি ভৌগলিক কারণে বেশ কয়েকটি উপজেলার মোহনা চকরিয়ার ডুলাহাজারায় স্থাপন করার জোর দাবি জানিয়েছেন আপামর জনসাধারণ।

এই বিষয়ে চকরিয়ার শিক্ষাবিদ অধ্যাপক রাহগীর মাহমুদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, চকরিয়া উপজেলা এমন জায়গায় অবস্থিত যার চতুর্দিকে বিভিন্ন উপজেলা। দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য স্থাপন হতে যাওয়া এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি চকরিয়াতে স্থাপন করা জরুরি। কারণ সব উপজেলার যোগাযোগের মোহনা হচ্ছে এই চকরিয়া। তাই এখানেই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হলে সকল উপজেলার শিক্ষার্থীরা কম দূরত্বে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।

এই বিষয়ে কক্সবাজার১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, কক্সবাজারের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ক্ষেত্রে ভৌগলিকগত সুবিধাজনক জায়গা হচ্ছে চকরিয়া। প্রাকৃতিক পরিবেশপ্রতিবেশগত দিক দিয়েই চকরিয়ার ডুলাহাজারাতে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের জন্য সুন্দর জায়গা রয়েছে। তাছাড়া চকরিয়ার ডুলাহাজারা হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত জায়গা। এখানে সংরক্ষিত বনের ভেতর বঙ্গবন্ধু হরিণ শিকারও করেছেন। তাই সবকিছু মিলিয়ে এই উপযুক্ত জায়গাতেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানিয়ে অনুরোধপত্রও দিয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচনের আগে দুটি কাজ করার নির্দেশনা কাদেরের
পরবর্তী নিবন্ধনেতারা আত্মগোপনে থেকে কর্মীদের দিয়ে গাড়ি পোড়ানোই বিএনপির অবরোধ : তথ্যমন্ত্রী