পোশাক শ্রমিকরা অপেক্ষায় মালিকদের নতুন প্রস্তাব আসছে

| মঙ্গলবার , ৭ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে আজ মঙ্গলবার মজুরি বোর্ডের সভায় মালিকপক্ষ তথা বিজিএমইএ থেকে নতুন প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। মালিকপক্ষ ১০ হাজার ৪০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি দেওয়ার প্রস্তাব করার পর শ্রমিকর বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, দুই জনের মৃত্যুর পর গত ১ নভেম্বর বোর্ডের সব শেষ সভায় মালিকপক্ষে প্রতিনিধি বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, পরের বৈঠকে তারা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবেন। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল সোমবার মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ স্বাক্ষরিত নোটিশে জানানো হয়, নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ষষ্ঠ সভা বসতে যাচ্ছে মঙ্গলবার (আজ)। এতে এই খাতের শ্রমিকদের জন্য গঠিত সভায় মিলিত হবেন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো।

পোশাক খাতের মজুরি কাঠামো প্রতি পাঁচ বছর পর পর ঘোষণা হয়। চলতি নভেম্বরের মধ্যেই মজুরি কাঠামো চূড়ান্ত করে ঘোষণা করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এটা কার্যকর করা হবে, জানুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে বর্ধিত বেতন যোগ হওয়ার কথা।

গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের প্রস্তাব দেন। সেদিন মালিকপক্ষ ১০ হাজার ৪০০ টাকা প্রস্তাব করে। মালিকপক্ষের ওই প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুরের শিল্প এলাকায় শ্রমিকরা কারখানা বন্ধ করে ও সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ শুরু করে। ইতোমধ্যেই বিক্ষোভ সহিংসতায় দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও বিক্ষোভ চলছে। গত বুধবারের সভা শেষে বিজিএমইএর প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, উনারা (বোর্ড) অনুরোধ করেছেন যে, আমরা আগে যে মজুরি প্রস্তাব দিয়েছি, সেখান থেকে আরও বাড়াতে হবে। হ্যাঁ, আমরাও বাড়াতে অ্যাগ্রি হয়েছি। কতটুকু বাড়াব সেটা আগামী ফাইনাল মিটিংয়ে প্রস্তাব আকারে লিখিতভাবে জমা দেব। আজকে আমরা এইটুকু বলতে পারি, আমরা যেটা দিয়েছিলাম, তার থেকে অনেক দূর বাড়াব। এর পরেও কিন্তু সরকার একজন রয়ে গেছে। আমরা যা প্রস্তাব করি, বোর্ড যেটা প্রস্তাব করে এর পরেও সরকার চাইলে সেখানে বাড়াতে বা কমাতে পারবে।

এই ‘অনেক দূর’ যাওয়া বলতে কী বোঝায়, সে বিষয়ে গত কয়েক দিনে বিজিএমইএর কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, মঙ্গলবার মজুরি বোর্ডের সভাকে সামনে রেখে শ্রমিকরা আন্দোলন কিছুটা শিথিল করেছে। ওই সভায় কাঙ্ক্ষিত মজুরির প্রস্তাব না আসলে তা শ্রমিকদের আবারও বিক্ষুব্ধ করবে।

যে শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাদের কেউ কেউ মজুরি দাবি করছেন ২৩ হাজার টাকা, কেউ চাইছেন ২৫ হাজার টাকা। তবে মজুরি বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনিই মনে করেন, এই দাবি ‘বাস্তবসম্মত নয়’। বোর্ডের পঞ্চম সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ২৩ হাজার, ২৫ হাজার টাকা বললেই হবে না। বাস্তব অবস্থাটা বুঝতে হবে। তিনি জানান, মালিকরা নতুন প্রস্তাব কী দেয়, তা নিয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। মালিকরা নতুন প্রস্তাব দেওয়ার পর দর কষাকষির কথা জানিয়ে তিনি আশা করছেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই নতুন মজুরি নির্ধারণ করা যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবান থেকে দূরপাল্লার যানবাহন ছাড়েনি