এবারের বিশ্বকাপে চরমভাবে ব্যর্থ বাংলাদেশ। অথচ এবারের বিশ্বকাপকে ঘিরে প্রত্যাশার বেলুনটা ছিল অনেক বড়। কিন্তু সে বেলুন ফুটো হয়ে গেছে। তাইতো দলের এমন ব্যর্থতার দায় নিচ্ছেন প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে। তবে দায়িত্ব ছাড়ার কোনো কারণ তিনি দেখছেন না। বরং বিশ্বকাপের পর নতুন করে শুরু করতে চান তার অভিযান। বাংলাদেশ কোচের মতে, তার আসল কাজ শুরু হবে তখনই। সেমিফাইনাল স্বপ্ন চুরমার হওয়া ছাড়াও এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়েছে বারবার। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর আর কোনো ম্যাচে লড়াইও করতে পারেনি টাইগাররা। এখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আশাও অনিশ্চিত। গত বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে না গেলে জয়ের আশা ছিল সেটিতেও। এছাড়া অন্য কয়েকটি ম্যাচে লড়াই জমেছিল বেশ। বিশ্বকাপ শেষে তবু বিদায় করে দেওয়া হয়েছিল কোচ স্টিভ রোডসকে। এবারের পারফরম্যান্স এখনও পর্যন্ত গতবারের ধারে কাছে নেই। কোচের দিকেও তাই আঙুল উঠছে বারবার। তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। বিশ্বকাপের পর তাকে দায়িত্বে রাখা উচিত কি না সেই প্রশ্নও উঠছে বারবার। গতকাল দিল্লিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে ব্যর্থতার দায়টুকু নিলেন হাথুরুসিংহে। দল যে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি সেটিও তিনি মেনে নিলেন অকপটে। তিনি বলেন দলের আরও যে কারও মতোই সমান দায় আমি নিচ্ছি। কারণ সমর্থকদের আমরা হতাশ করেছি। নিজেদেরও হতাশ করেছি। আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারিনি। তবে প্রথম ম্যাচের পর থেকে এখনও পর্যন্ত কিছুই বদলায়নি। বদল এসেছে কেবল আমাদের ভাবনায়। স্কিলে বদল আসেনি। আমার মনে হয়, আমরা নিজেদের হতাশ করেছি উঁচু প্রত্যাশা রেখে। এটিই কেবল আমরা ভাবতে পারি। কারণ আমাদের সামর্থ্য যেটুকু কিংবা বিশ্বকাপের আগে যেমন খেলেছি, তা এবারে দেখাতে পারিনি। আমাদের সবারই তাই আয়নায় চোখ রাখা উচিত। দেখা উচিত ভুল কোথায় ছিল। বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থতার পর সাধারণত সবকিছু ঢেলে সাজানো হয়। সেখানে কোচিং স্টাফেও বড় পরিবর্তন হয়ে থাকে। বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের দায়িত্বে থাকতে পারবেন কি না, এই প্রশ্নে হাথুরুসিংহে উত্তরটি ছেড়ে দিলেন বোর্ডের ওপর। আমার কোচ থাকার ব্যাপারটি আমার হাতে নয়। এটা বোর্ডের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাকে কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই বছরের চুক্তিতে। এখনও পর্যন্ত ১৫ মাসের মতো আছে তার চুক্তির মেয়াদ। তিনি চোখ রাখছেন মেয়াদ পূর্ণ করার দিকেই। বিশ্বকাপের পর দলের নতুন পথচলায় তিনিই হতে চান অগ্রপথিক। হাথুরু বলেন মাত্র সাত মাস হলো দায়িত্ব পেয়েছি। এর মধ্যে খুব বেশি কিছু করার নেই। আমি যেটা করেছি, তা হলো দল যেখানে ছিল, সেখান থেকে এগিয়ে নিতে এবং তারা যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তা নিশ্চিত করা। সত্যি বলতে আমার আসল কাজ শুরু বিশ্বকাপের পর। কারণ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি আলাদা। এরপর এখান থেকে দলকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। সেটা ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। কোচ হিসেবে প্রথম মেয়াদে বিশ্বকাপের আগে আট মাস সময় পেয়েছিলেন হাথুরুসিংহে। দল সেই সময়ের মানদন্ডে যথেষ্টই সফল হয়েছিল। এবার তিনি বিশ্বকাপের আগে সাত মাস সময় পেয়েছেন। বিশ্বকাপে বিশেষ কিছু করার জন্যই মূলত তাকে দায়িত্বে ফিরিয়েছিল বিসিবি। কিন্তু কি করতে পেরেছেন সেটা পরিষ্কার। তাই অপেক্ষা এখন তাদের সিদ্ধান্তের।