চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা ৬ কোটি ২৩ লাখ ৩ হাজার ৮৫৯ টাকার ২১০ টন গুঁড়ো দুধ আগামী সোমবার প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া একইদিন ২৩ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯ টাকার সাড়ে ২৩ টন আদাও নিলামে তোলা হচ্ছে। অন্যদিকে নিলামে অংশগ্রহণ বাড়াতে নিলামের একদিন আগে অর্থাৎ আগামী রোববার চতুর্দিকে দুই কিলোমিটার মাইকিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, পচনশীল পণ্যের দ্রুত নিলাম আয়োজনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্থায়ী আদেশ জারি করে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তাদের অনীহার কারণে সেই আদেশ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বিগত সময়ে অনেক খাদ্যপণ্য পঁচে যাওয়ায় তা মাটি খুঁড়ে পুঁতে ফেলতে হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব পাওয়া দূরে থাক, উল্টো পণ্য ধ্বংসের অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৯ অক্টোবর সাড়ে ২৫ টন আপেল প্রকাশ্য নিলামে তুলে কাস্টমস। প্রতি কেজি আপেলের দাম ১৬৬ ধরা হলেও সর্বোচ্চ দাম উঠেছে মাত্র ২০ টাকা। এছাড়া ১২ টন প্রিমিয়াম এনজাইম সলিউশন নামের টেক্সটাইল রাসায়নিক পদার্থের প্রতি কেজি দাম ধরা হয় ১২২ টাকা, কিন্তু সর্বোচ্চ দর উঠে ২৭ টাকা। আপেলের সর্বোচ্চ দরদাতা হয় মাসুম এন্টারপ্রাইজ এবং রাসায়নিক পদার্থের সর্বোচ্চ দরদাতা হন হাজী ফেরদৌস আলম নামের এক ব্যক্তি। তার আগে ৯ অক্টোবর আড়াই কোটি টাকার প্রায় ২৮ টন হিমায়িত মহিষের মাংস প্রকাশ্য নিলামে তোলা হয়। রাজশাহীর শাহ মখদুম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান মাত্র ৪ লাখ টাকা বিড করে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের পচনশীল পণ্যের নিলামের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ–কমিশনার মো. আবদুল হান্নান বলেন, বন্দর ইয়ার্ড খালি করার জন্য আমরা এখন থেকে পচনশীল পণ্য দ্রুত নিলামের উদ্যোগ নিয়েছি। এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।