শঙ্খের ভাঙনের কবলে ৫ শতাধিক পরিবার

বাঁশখালীর সাধনপুরে পশ্চিম বৈলগাঁও গ্রাম

বাঁশখালী প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২ নভেম্বর, ২০২৩ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

শঙ্খ নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে বাঁশখালীর সাধনপুরের পশ্চিম বৈলগাঁও গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবার। স্থানীয় জনগণ দ্রুত গতিতে ভাঙন এলাকায় সংস্কার কাজ পরিচালনা করার জন্য বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেছে।

ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শঙ্খ নদীর তীর সংরক্ষনের জন্য দেওয়া পাথরের ব্লক বসানো হলেও সাধরপুরের পশ্চিম বৈলগাঁও এলাকায় বাঁধের প্রায় ২০০ ফুট এলাকায় নতুন করে ফাঁটল দেখা দিয়েছে! বিগত কয়দিনে মধ্যে শঙ্খনদী তীরে প্রায় ৩০০ ফুট মাটি ভেঙ্গে পাথরের ব্লক সহ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তা ধীরে ধীরে আরো বিশাল আকার ধারন করছে ।

ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে পশ্চিম বৈলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার। নদীর তীর সংরক্ষনের জন্য বর্তমান সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর উদ্যোগে কোটি টাকা খরচ করে শঙ্খনদীর পশ্চিম বৈলগাঁও থেকে রাতাখোর্দ পর্যন্ত বালুর জিও ব্যাগ ও পাথরের ব্লক দিয়ে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ও তীর সংরক্ষন করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে গেল দুই বছর নদী ভাঙ্গন পুরোপুরি বন্ধ থাকলেও পশ্চিম বৈলগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০০ ফুট দক্ষিনে নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের ফলে নিচের বালুর জিও ও পাথরের ব্লক ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় জনগন নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, এই অংশে অপেক্ষকৃত বালুর জিও ব্যাগ কম ফেলা এবং এ অংশে একটি চিহ্নিত চক্র নিয়মিত বালু উত্তোলন করে অবৈধ ভাবে বিক্রি ও এলাকার একটি মাছের প্রকল্প থেকে নদীতে পানি নিস্কাশন করার কারণেও নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হতে পারে। এদিকে শঙ্খনদীতে নতুন করে ভাঙ্গন ও বিশাল অংশে ফাঁটল ধরায় আতংকিত এলাকার ৫ শতাধিক পরিবার! তাদের মতে, জরুরী ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ বরাদ্ধ দেওয়া হলে অংশের ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। রক্ষা পাবে সরকারের কোট টাকা খরচ করে তীর সংরক্ষন করা প্রকল্পটি।

জানা যায়, বঙ্গোপসাগর ও শঙ্খনদীর পারে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মান প্রকল্প একনেকে পাস হয় ২০১৫ সালে। ব্যয় ধরা হয় ২৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। যা পরবর্তীতে ব্যয় বাড়িয়ে ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা করা হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৬.২ কিলোমিটার বাঁধের ঢাল সংরক্ষন, ভাঙ্গন রোধ ও পুনরাকৃতিকরন, .৮ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষন এবং ৫.৬ কিলোমিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরন করার কথা ছিল। বর্তমানে শঙ্খ নদীর পশ্চিম বৈলগাঁও অংশে ভাঙ্গনের স্থানে জরুরী ভিত্তিতে বালুর জিও ব্যাগ বরাদ্ধ দেওয়া হলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা।

অন্যথায় সরকারের সহস্রাধিক কোটি টাকা ব্যয় করা প্রকল্প বিলীন হয়ে যেতে পারে। অপরদিকে ভাঙ্গনের কারনে হুমকির মুখে থাকবে, হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও শঙ্খ গ্যাস সঞ্চালন লাইন ছাড়াও পশ্চিম বৈলগাঁও গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবার। এ ব্যাপারে ২নং সাধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম সালাউদ্দিন কামাল বলেন, নতুন করে ভাঙ্গনের বিষয়টি পানি উন্নয় বোর্ডকে জানানো হয়েছে। তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বো বোর্ডেল বাঁশখালীর দায়িত্বরতদের যোগাযোগ করেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোগী স্বল্পতা, মনজুর আলমের ডেঙ্গুর অস্থায়ী হাসপাতাল বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধআইআইইউসির ইটিই বিভাগের স্নাতক উত্তীর্ণ ছাত্রদের বিদায়