বিএনপির ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার নগরের কদমতলীতে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সেখানে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। এছাড়া ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের শেখপাড়া–বটতল এলাকায় চট্টগ্রাম–৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের মালিকানাধীন ডিএবির (দিদারুল আলম অ্যান্ড ব্রাদার্স) একটি রডবাহী লরিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। একই সড়কের মীরসরাই বারইয়াহাট পৌর এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে অবরোধকারীরা। চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের কর্ণফুলী উপজেলায় একটি যাত্রীবাহী বাসে এবং রাঙ্গুনিয়ায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে দুটি পাথর বোঝাই ট্রাক ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। কর্ণফুলীতে বাস চালক আহত হয়েছেন। এছাড়া নগর ও উপজেলায় আর কোথাও ‘নাশকতা’র খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে অবরোধকে ঘিরে নাশকতা রোধে নগরে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। মহাসড়কে টহল দিয়েছে বিজিবি, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সকালে নগরের কদমতলী থেকে একটি ককটেল ও দুটি পেট্রোল বোমাসহ তৌহিদুল ইসলাম নামে ছাত্রদলের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অবশ্য নগর বিএনপি দাবি করেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের ২০ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের চান্দগাঁওস্থ ভাইয়ের বাসায়ও তল্লাশি চালানোর অভিযোগ করা হয়।
এদিকে গতকালও নগর থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস। তবে শহরে সকালে যানবাহন কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে স্বাভাবিক হয়ে আসে। কয়েক জায়গায় যানজটও ছিল। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কেও যাত্রী ও যান চলাচল আগের দিনের চেয়ে বেশি ছিল গতকাল। শিডিউল অনুযায়ী চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে গেছে ট্রেন। আগেরদিনের চেয়ে গতকাল ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেশিসংখ্যক কাভার্ড ভ্যান ও মালবাহী ট্রাক চলাচল করেছে বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। মহাসড়কে স্বল্প দূরত্বের বাসসহ অন্যান্য পরিবহনও চলাচল করেছে। অবরোধ চলাকালে স্বাভাবিক ছিল চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য উঠানামা। পণ্য খালাসের পর পরিবহনও ছিল স্বাভাবিক। খোলা ছিল দোকানপাট, সরকারি–বেসরকারি অফিস, কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। খোলা ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।
এদিকে দিনভর ‘শান্তি সমাবেশ’ করে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান ছিল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ। অবরোধ প্রত্যাখ্যান করে তারা মিছিলও করেছে। এদিকে অবরোধের সমর্থনে কয়েক জায়গায় মিছিল করেছে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে গতকাল সন্ধ্যায় বহাদ্দারহাট বাস টার্মিনালও চান্দগাঁও সিএন্ডবি এলাকায় এবং বোয়ালখালীতে মশাল মিছিল হয়েছে। দুপুরে নগরের কদমতলী মোড় ও সকালে আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের বড়পোল এলাকা, বিকেলে গেয়াছি বাগান চত্বর এবং চট্টেশ্বরী সড়কে অবরোধের সমর্থনে বিএনপি মিছিল করে। উত্তর জেলা বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেনের নেতৃত্বে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিটি গেইট সীতাকুণ্ড এলাকায় মিছিল করা হয়।
নগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইদ্রিস আলী আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রবেশপথ ও মহাসড়কে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল সমাবেশ করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে পুলিশ বিএনপির এসব শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপির আরও ২০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানকে গ্রেপ্তারের জন্য তার ছোটভাই ইকবাল বাহারের চান্দগাঁও আবাসিকের বি–ব্লকের বাসায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় পুলিশের একটি দল ব্যাপক তল্লাশি ও অভিযান চালিয়েছে। এ সময় তিনি সেখানে ছিলেন না।
সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মোহাম্মদ মুছা আজাদীকে বলেন, দূরপাল্লার গাড়ি ছেড়ে যায়নি। সকাল ও বিকেলে বাঁশখালী–আনোয়ারাসহ আশেপাশের রুটে যাত্রী ছিল। ওই সময় গাড়ি ছেড়ে গেছে। দুপুরে যাত্রী কম ছিল। তখন ছাড়েনি। এদিকে দামপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে বাস ছেড়ে গেছে বলে আজাদীকে জানিয়েছেন আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির জয়েন সেক্রেটারি খোরশেদ আলম।
উল্লেখ্য, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সরকারের পদত্যাগ এবং গ্রেপ্তার দলীয় নেতা–কর্মীদের মুক্তির দাবিতে তিনদিনের অবরোধ চলছে। আজ বৃহস্পতিবার অবরোধের শেষ দিন।
কদমতলীতে ভাঙচুর ও ককটেলসহ আটক : অবরোধের সমর্থনে গতকাল দুপুরে কদমতলী মোড়ে বিক্ষোভ করেছে নগর স্বেচ্ছাসেবক দল। এসময় গাড়ি ভাঙচুর করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় তারা। তবে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় ছাত্রদল কর্মী তৌহিদকে। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, দুপুরে অবরোধ সমর্থনে ২৫–৩০ জন ককটেল বিস্ফোরণ করে একটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করে। তাৎক্ষণিক আশেপাশে নিয়োজিত টহল ডিউটির পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করে। বাকিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলের আশেপাশে তল্লাশি করে একটি অবিস্ফোরিত ককটেল ও দুটি অবিস্ফোরিত পেট্রোল বোমা উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা–চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে গাড়িতে আগুন : আমাদের সীতাকুণ্ড ও মীরসরাই প্রতিনিধি জানান, গতকাল বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের শেখপাড়া–বটতলীতে রডবাহী লরিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে পুলিশ ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। তবে ট্রলিটির ইঞ্জিনের অর্ধেকাংশ পুড়ে যায়। এসময় এক ঘণ্টা চট্টগ্রামমুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। আগুন নেভানোর পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। লরির মালিক সীতাকুণ্ডের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বলেন, জামাত–বিএনপি সারাদেশে অগ্নিসন্ত্রাস চালাচ্ছে মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করার জন্য। তবে তাদের ভয়ে কোনো কাজ হবে না, মহাসড়কে গাড়ি চলবে। একটা না, আমার দশটা গাড়ি পুড়িয়ে দিলেও গাড়ি চলা বন্ধ হবে না।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি। শুনেছি মোটরসাইকেল যোগে দুই দুর্বৃত্ত লরিটিতে বোতল ভর্তি পেট্রোল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে। পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সীতাকুণ্ড স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, এক ঘণ্টার চেষ্টায় রড বোঝাই লরিটির আগুন নেভানো হয়।
এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলাউদ্দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। লরিতে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া দাবি করেন, জামাত–বিএনপির নেতা–কর্মীরাই লরিতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে।
এদিকে গতকাল ভোরে মহাসড়কটির মীরসরাই–বারইয়াহাট পৌর এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে মিছিল করে মীরসরাই উপজেলা বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা। প্রায় আধঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন তারা। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন জানান, বারইয়ারহাট এলাকায় তারা মিছিল ও পিকেটিং করেছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বলেন, আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনী সোচ্ছার রয়েছে। টহলের কোনো ফাঁকে হয়তো খুব সামান্য সময়ের জন্য ওরা সড়কে উঠেছে।
এদিকে গতকাল চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের ভেল্লাপাড়া ব্রিজ এলাকায় একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। বাসটি (চট্টমেট্রো জ–০৫–০২৭০) যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম শহর থেকে পটিয়ার দিকে যাওয়ার পথে ক্রসিং ভেল্লাপাড়া ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে পটিয়ার দিক থেকে মুখোশধারী ২০ থেকে ৩০ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে কর্ণফুলী ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে বাসটির চালক মো. মোজাম্মেল (৬০) আহত হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে খবর পেয়ে কর্ণফুলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
কর্ণফুলী মডেল ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইন্সপেক্টর সোয়াইব হোসেন চৌধুরী জানান, সকাল ৮টায় বাসটিতে আগুন দেওয়ার খবর আসে। দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পটিয়ার দিক থেকে কিছু যুবক এসে আগুন দিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে মুখোশপরা ছিল। তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
রাঙ্গুনিয়ায়ও গাড়িতে আগুন : রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি জানান, বুধবার ভোররাত ৪টার দিকে চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা–কদমতলী ইউনিয়নের হাবিবের গোট্টা সড়কের গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে ব্যারিকেড দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে আটকে যাওয়া দুটির পাথর বোঝাই ট্রাকে (খুলনা মেট্রো–শ–১১–০৩৪৭ এবং ঢাকা মেট্রো–ট–১২–০৮৯৫) আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভানোর পর সড়কের গাছ সরিয়ে নিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এছাড়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের সেলিমা কাদের কলেজ গেট এলাকায় একটা মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়।
চন্দ্রঘোনা–কদমতলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হারুন সওদাগর বলেন, বিএনপি জামায়াত শান্ত রাঙ্গুনিয়াকে অশান্ত করতেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু আহমেদ হাসনাত বলেন, আমাদেরকে মামলা দিয়ে ফাঁসাতেই সরকার দলের কর্মীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। রাঙ্গুনিয়ার বিএনপি নেতাকর্মীদের কেউই এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়।
ফায়ার সার্ভিসের রাঙ্গুনিয়া স্টেশন কর্মকর্তা জাহেদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্রাকের আগুন নেভানো হয়। সড়ক থেকে গাছ কেটে সরিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুড়ে যাওয়া ট্রাক দুটির চালক মো. মোস্তফা ও মো. রবিউল জানায়, তারা রাজস্থলী এলাকায় নির্মাণাধীন সীমান্ত সড়কে পাথর নিয়ে যাচ্ছিলেন। হাবিবের গোট্টা এলাকায় এলে ৪০–৫০ জন যুবক সড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের গাড়ি আটকায়। পরে গাড়ি দুটির চাকায় ককটেল বিস্ফোরণ করে এবং পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এসময় একটি গাড়ি পুড়ে যায় এবং অপরটি ভাংচুর করা হয়। তারা ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে এলে তারা পালিয়ে যায়।
মোটরসাইকেল পুড়ানোর সময় প্রত্যক্ষদর্শী মো. জয় বলেন, পাহাড়তলী থেকে মোটরসাইকেলযোগে রাঙ্গুনিয়া ফিরছিলাম। সেলিমা কাদের কলেজ গেট এলাকায় এলে দেখতে পায়, কিছু দুষ্কৃতকারী একটি সিএনজি অটোরিকশা আটকিয়ে ভাংচুরের চেষ্টা করছে এবং অপর একটি মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এসময় একটি গুলির শব্দ শুনি এবং কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। ঘটনাস্থলে দুটি হাইয়েস গাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিল এবং তাদের মাথায় হেলমেট পরিহিত ছিল।
বান্দরবান পরিস্থিতি : বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, বান্দরবান জেলা শহর ছেড়ে যায়নি দূর পাল্লার কোনো যানবাহন। তবে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এদিকে অবরোধ কর্মসূচি পালনে বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি। ছিল না কোনো পিকেটিং। বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল জানান, অবরোধে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
চন্দনাইশে গ্রেপ্তার : চন্দনাইশ প্রতিনিধি জানান, নাশকতার মামলায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হচ্ছেন উপজেলার উত্তর জোয়ারা গ্রামের আবদুল গণি (৫০), এলাহাবাদ গ্রামের আবদুল বায়েছ প্রকাশ বাদশা (৩২), একই এলাকার মোহাম্মদ ইসহাক (৫২), কেশুয়া গ্রামের মোহাম্মদ আশিক (২৬), উত্তর জাফরাবাদ গ্রামের মোহাম্মদ রুবেল (২৯), মোহাম্মদ মোস্তাফিজ (৩২), মো. ফয়সাল উদ্দীন (২২), বরকল এলাকার মাইনুল হাসান রকি (২০)। চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পূর্বের মামলার এজাহার নামীয় ও নাশকতা মামলার সন্ধিগ্ধ হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে গতকাল চট্টগ্রাম–কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কসহ চন্দনাইশ উপজেলার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়কে ত্রি–হুইলার, সিএনজি অটোরিকশা ব্যাটারি রিকশাসহ ছোট ছোট যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। দিনভর উপজেলার কোথাও বিএনপি নেতাকর্মীদের পিকেটিং বা মিটিং মিছিল করতে দেখা যায়নি। যথানিয়মে চলাচল করেছে বিআরটিসি বাস। ফলে যাত্রীদের তেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।












