দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রীড়া সংস্থা চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এই সংস্থাটির বর্তমান কমিটির চার বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আর কিছুদিন পরেই। এরই মধ্যে সংস্থাটির নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনার। বর্তমান কমিটিতে যারা আছেন আর কমিটির বাইরে যারা আছেন তারাও মোটামুটি নির্বাচনী হাওয়ায় গা ভাসাতে শুরু করেছেন। এরই মধ্যে নির্বাচনী আলাপ আলোচনাও শুরু করে দিয়েছে অনেকেই। নির্বাচন করতে আগ্রহী অনেকেই। কিন্তু বাধা একটি জায়গায়। আর সেটি হচ্ছে সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন। বাধা বলতে তিনি যে নির্বাচন চাচ্ছেন না তেমন কিন্তু নয়। এখানে বাধা হচ্ছে তার কাঁধে ভর করেই সবাই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চান। তাই সবার একটিই জানার আগ্রহ তিনি কি বলেন। তিনি কি ভাবছেন। তিনি কি চান। যদিও একটি পক্ষ নানাভাবে চেষ্টা করে থাকেন যাতে নির্বাচন না হয়। আর সেরকমটি করতে গিয়ে গত দুই সেশনে আ.জ.ম. নাছিরকে যেমন বেগ পেতে হয়েছে তেমনি অনেকের কাছে বিরাগভাজনও হতে হয়েছে। তাই তার কাছেই মত জানতে চাওয়া হয়েছিল তিনি কি চান।
গতকাল কলকাতায় চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের খেলা দেখতে আসা ক্রীড়া সংগঠকদের সাথে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেছিলেন তিনি। আর সেখানেই তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচনের ময়দান সবার জন্য উন্মুক্ত। তিনি কাউকে পার করানোর দায়িত্ব নেবেন না। তাঁর কাঁধে ভর দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার আর কোন সুযোগ নেই বলেও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিন তিনি। তিনি আর কাউকে কাঁধে নিতে পারবেন না। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন হবে আর যারা আসতে চাইবেন তাদেরকে নির্বাচন করেই আসতে হবে। আমি কাউকে যেমন নির্বাচন করতেও বলব না তেমনি কাউকে না করতেও বলব না। এই দায়িত্ব আমার না। আর যারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নির্বাচন করে আসতে পারবে তারাই আসবে। আমার উপর ভরসা করে যারা নির্বাচন করতে চাইবেন বা আমি বললে নির্বাচন করবে না হয় করবে না তাদেরকে বলব আপনারা আগে থেকেই সরে যান। আমি আর কাউকে পার করাতে চাই না। আর আমি সেটা আর পারবও না। আমি কাকে বাদ দিয়ে কাকে নেব। অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা আমার হায়েছে। আমি আর এই অভিজ্ঞতা নিতে চাই না। আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন নির্বাচন নিয়ে আমার পরিষ্কার কথা, যাদের পায়ে শক্তি আছে তারা নির্বাচন করুন। গত চার বছর ধরে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় অনেক তরুণ ক্রীড়া সংগঠক এসেছেন। তারা বেশ ভাল কাজও করেছেন। এবারের কাউন্সিলর তালিকায়ও তরুণদের আধিক্য। আর এইসব তরুণরা চাইছে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হোক। আর সে নির্বাচনে যারা জয়ী হয়ে আসবেন তারাই সংস্থা চালাবেন। আর এই তরুণদের বক্তব্যের সাথে একমত আ.জ.ম. নাছিরও। নির্বাচনের দিন ক্ষণ এখনো ঠিক না হলেও অনেকেই তাঁর কাছে গিয়ে ধর্না দিচ্ছেন। কেউ কেউ বলে আসছেন আপনি বললে নির্বাচন করব আর না হয় করব না। আর আপনি যে পদে বলবেন সে পদে নির্বাচন করব। তিনি বলেন এ ধরনের আবদার আমি আর রাখতে পারব না আর রাখতেও চাই না। তাই তিনি সবাইকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
কাউন্সিলরদের নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ আর উৎসাহের বিষয়টি তিনি বেশ ভালই টের পাচ্ছেন। তাই সাধারণ কাউন্সিলরদের অধিকারকে তিনি হরণ করতে চান না। তাই নির্বাচনী ঢোলে বারি দিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন নির্বাচনের ময়দান সবার জন্য উম্মুক্ত। কাজেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হোন। যদি দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে তাহলে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে এবং একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনই হবে। কারন নির্বাচনটা একটা উৎসব। এই উৎসবে তিনি জল ঢেলে দিতে চান না। তিনি বলেন যাদের ইচ্ছা নির্বাচন করবে। আমি ভেতরে কিংবা বাইরে কারো সাথে থাকতে চাই না। কারণ সেটাকে পূঁজি করে অনেকেই বিভ্রান্তি ছড়ায়। তিনি বলেন আমার মেসেজ পরিস্কার। এখানে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কিংবা বিভ্রান্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। শক্তি থাকলে মাঠে এসে খেলতে হবে। বিনা খেলায় জয় পাওয়ার আর কোন সুযোগ নেই। কারণ সব কাউন্সিলরই আমার কাছে সমান। কেউ আমার কাছে আপন কিংবা পর নয়। দিন শেষে তাদের সবাইকে নিয়েই আমার চলতে হয়। তাই আমি আর কারো বিরাগভাজন হতে চাই না।
বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যকার বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে এখন কলকাতায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক এবং সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন। আর এখানে খেলা দেখতে এসেছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর। তাদেরকে গতকাল মধ্যাহ্ন ভোজে আমন্ত্রন জানিয়েছিলেন তিনি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য নাসির মিয়া, কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, এনামুল হক, সাইফুল আলম খান, রায়হান উদ্দিন রুবেল, কাজি জসিম উদ্দিন, কল্লোল দাশ।